অমৃতসর: পহেলগাঁও আবহে পাক গুপ্তচর সন্দেহে দু’জন গ্রেপ্তার করল অমৃতসর পুলিশ। ধৃতদের নাম শের মসীহ ও সুরোজ মসীহ। গোপন সূত্রের খবরের ভিত্তিতে শনিবার অমৃতসর থেকে এই দু’জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ধৃতদের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-কে অমৃতসরে থাকা ভারতীয় সেনা ছাউনি এবং এয়ার ফোর্স স্টেশনের একাধিক জায়গার ছবি তুলে পাচার করার অভিযোগ রয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তরা সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে থাকত। এবং সুযোগ বুঝে বিভিন্ন স্পর্শকাতর জায়গার ছবি তুলে পাকিস্তানে পাচার করত। দীর্ঘদিন ধরেই তারা ওই ‘চরবৃত্তি’ চালিয়ে যাচ্ছিল বলেই জানতে পেরেছেন গোয়ান্দারা। আর এতেই চিন্তা বেড়েছে তদন্তকারী আধিকারিকদের। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, পলক ও সুরজের সরাসরি যোগাযোগ ছিল অমৃতসর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে বন্দি হরপ্রীত সিং ওরফে হ্যাপির সঙ্গে। পুলিশ সূত্রে খবর, ভারতীয় সেনার বহু গোপন আস্তানা এবং ঘাঁটির বিভিন্ন স্পর্শকাতর জায়গার ছবি তুলত পলক ও সুরজ। এরপর তা পাঠিয়ে দিত পাকিস্তানে। উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেই পাকিস্তানি গুপ্তচর সন্দেহে রাজস্থান থেকে পাঠান খান নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসবাদী হামলায় ২৫ জন পর্যটক-সহ মোট ২৬ জনের মৃত্যু হয়। তারপর থেকে সন্ত্রাসবাদীদের খোঁজে উপত্যকাজুড়ে চিরুনি তল্লাশি শুরু করেছে সেনা। এই আবহে গোয়েন্দাদের সন্দেহ জঙ্গিরা দেশের আরও বিভিন্ন জায়গায় হামলা চালাতে পারে। দেশের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় হাই অ্যালার্ট জারি হয়েছে। এরই মধ্যে অমৃতসর থেকে দুই পাক গুপ্তচরের গ্রেপ্তারি চিন্তা বাড়িয়েছে গোয়ান্দাদের। অন্যদিকে কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জেহাদি হামলার পর থেকেই সীমান্তে কড়া নজরদারি চালাচ্ছে আধা সামরিক বাহিনী। আর সেই নজরদারি চালিয়ে নেপাল সীমান্ত থেকে ছ’জন মায়ানমারের নাগরিককে আটক করল সীমান্ত সুরক্ষা বল (এসএসবি)। শনিবার রাতে তাদের পানিট্যাঙ্কি মোড় থেকে আটক করা হয়। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, ধৃত মায়ানমারের নাগরিকরা ২০২২-২০২৩ সাল নাগাদ পাসপোর্ট এবং ভিসা ছাড়াই ভারতের মিজোরামে প্রবেশ করে। পরে দিল্লি থেকে জাল আধার ও ভোটার আইডি কার্ড তৈরি করে। ধৃতদের মধ্যে একজনের প্যান কার্ডও রয়েছে। মায়ানমারের ওই নাগরিকরা নাগাল্যান্ডের ওখার ভানখাউসিং-এর ‘উইটার থিওলজিক্যাল কলেজ’-এ ধর্মতত্ত্বের ডিগ্রি কোর্সের জন্য ভর্তি হয়েছিল। তারা একই কলেজের ভারতীয় ও নেপালি সহপাঠীদের সঙ্গে ছুটিতে শিলিগুড়িতে এসেছে। তারা নেপাল পার হয়ে বিরতা মোড়ের হ্যাপি ল্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার পার্কে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। তার আগেই তাদের গ্রেপ্তার করল এসএসবি। কী কারণে তারা ভারতে ঢুকেছিল, জেরা করে তা জানার চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি জাল আধার-ভোটার ও প্যান কার্ড তৈরিতে কারা তাদের সাহায্য করেছিল, তাও জানার চেষ্টা চালাচ্ছেন তদন্তকারীরা। মনে করা হচ্ছে, তাদের জেরা করে চক্রের বাকিদের এবং আরও অনুপ্রবেশকারীদের হদিশ মিলবে।