গোয়ালতোড়ে সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উদ্বোধন

IMG-20250422-WA0317

বাংলার শিল্পবান্ধব পরিবেশ এখন পরিচিত সর্বত্র। দেশ হোক বা বিদেশ, লগ্নি টানতে কতটা আগ্রহী রাজ্য সরকার, তা বারবার স্পষ্ট করেছে খোদ মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর উপর ভরসা করে গত কয়েকবছরে এরাজ্যে শিল্পের বিকাশ ঘটেছে। সেই তালিকায় যুক্ত হয়েছে শালবনিতে জিন্দলদের তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র এবং গোয়ালতোড়ের সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র। সোম এবং মঙ্গলবার পশ্চিম মেদিনীপুরে জোড়া শিল্পের উদ্বোধন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই শিল্পস্থাপন নিয়ে যে বিরোধীরা ‘গল্প’ বলে উড়িয়ে দেন, সেই কুৎসার জবাবও দিলেন তিনি। বোঝালেন, ‘গল্প’ই আসলে যে কোনও কাজের অনুপ্রেরণা। মঙ্গলবার মেদিনীপুর কলেজ মাঠের প্রশাসনিক সভা থেকে রিমোটের মাধ্যমে গোয়ালতোড়ের সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন। গোয়ালতোড়ের জিরাপাড়ায় দুর্গাবাঁধ সরকারি বীজ খামারের জমিতে ৭৫৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ১১২.৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে উঠেছে। যেখানে জার্মানির একটি সংস্থা ৮০ শতাংশ অর্থ বিনিয়োগ করেছে। রাজ্য সরকার বিনিয়োগ করেছে ২০ শতাংশ অর্থ। মূল তত্ত্বাবধানে রাজ্য বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানি লিমিটেড। পূর্ব ভারতে এই প্রকল্প এর আগে গড়ে ওঠেনি বলে দাবি মুখ্যমন্ত্রীর। তাঁর আশ্বাস, এতে বিদ্যুতের দাম কমব। এরপরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ”অনেকেই তো বলেন, এসব নাকি গল্প। আমি বলি, গল্প শোনা তো জরুরি। অনেকের জীবনে অনেক রকম গল্প থাকে। কারও বেড়ে ওঠার গল্প, কারও সংগ্রামের গল্প। সেসব গল্প থেকে অনেক কিছু তৈরি হয়। হয়ত শিল্প তৈরির পিছনেও এরকম গল্প থাকে। তাই আমি বলি, গল্প থেকেও শিল্প হয়।” আসলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিজের জীবনও খুব সংগ্রামী। মাঝেমধ্যেই নিজের জীবনের ছোটখাটো গল্প জনসভায় বলে থাকেন। এও বলেন, সেসব ঘটনা তাঁর জীবনে অনেক দিশা দেখিয়েছে, উদ্বুদ্ধ করেছে। তাঁর কর্মকাণ্ডকে ‘গল্প’ বলে কটাক্ষ করা বিরোধীদের উদ্দেশে আজও এভাবেই জবাব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিনের সভায় প্রথম ভাষণ দেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। এরপরেই জেলার মানুষদের হাতে সরকারি প্রকল্পের সুবিধা তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপরেই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন এবং শিলন্যাস করেন মমতা। গোয়ালতোড়ে পূর্ব ভারতের সবচেয়ে বড় সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী। ১০৫ মেগাওয়াটের এই বিদ্যুৎ প্রকল্পের ব্যয় ৭৫০ কোটি টাকা। এছাড়াও, ৩৩.৮৫ কোটি খরচে মেদিনীপুরে জল সংশোধনাগার, ঘাটাল ও খড়্গপুরে জলের প্রকল্পের জন্য ১৯৪ কোটি, ৭৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ক্ষীরপাই-রামজীবনপুর রাস্তা, পুরুলিয়া সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং বক্রেশ্বরে ২০০ মেগাওয়াট ভাসমান সোলার প্ল্যান্ট তৈরির কথা ঘোষণা করেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী জানান, যত বেশি সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন হবে, তত বিদ্যুতের দাম কমবে। তিনি আরও জানান, শালবনির ২০০০ একর জমিতে ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল পার্ক তৈরি করা হবে। সেখানে জেলার ছেলেমেয়েরা চাকরির সুযোগ পাবেন। মেদিনীপুরে প্রশাসনিক সভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “কাল পেলেন শালবনি, আজ পেলেন গোয়ালতোড়, রাজ্যে শিল্পের সম্ভাবনা বেড়েই চলেছে।মুখ্যমন্ত্রী জানান, মঙ্গলবারের প্রশাসনিক সভা থেকে জানান ৮ লক্ষ মানুষকে সরকারি প্রকল্পের সুবিধাপ্রদান করা হয়েছে। এরপরেই শিল্প নিয়ে বিরোধীদের তোপ দাগেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “অনেকে বলে কোথায় শিল্প, সবটাই গল্প। কিন্তু এটা বোঝেনা গল্পেই জীবনের শুরু। শিল্পকে গল্পের পর্যায়ে ফেললে হবে না। শিল্প কর্মসংস্থান তৈরি করে, কর্মসংস্থান আর্থিক উন্নতি করে।দেউচা পাঁচামি খনির কথাও নিজের বক্তব্যে উল্লেখ করলেন মমতা। তিনি বলেন, দেউচা পাঁচামি প্রকল্প হয়ে গেলে আগামী ১০০ বছর ভাবতে হবে না এই প্রকল্পে এক লক্ষ লোকের কর্মসংস্থান হবে।

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement