কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ বহাল রেখে এসএসসির ২০১৬ সালের গোটা প্যানেল বাতিল করেছে সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ে চাকরিহারা হয়েছেন প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী। এই ইস্যুতে চাকরিহারাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন রাহুল গান্ধি। রাষ্ট্রপতিকে চিঠি লিখে তাঁর হস্তক্ষেপ চাইলেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা। কংগ্রেস সাংসদের বক্তব্য, ন্যায্য পদ্ধতিতে নির্বাচিত প্রার্থীদের চাকরি বহাল রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে সরকারকে। সম্প্রতি রাহুলের সঙ্গে দেখা করেন শিক্ষক শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চের প্রতিনিধিরা। তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাসও দিয়েছিলেন রাহুল। সেই মতো এ বার রাষ্ট্রপতিকে চিঠি লিখলেন রাহুল। চিঠিতে কংগ্রেস সাংসদ লিখেছেন, ‘আপনিও একসময়ে শিক্ষকতা করেছেন। চাকরিহারাদের সঙ্গে কী অন্যায় হয়েছে আপনি নিশ্চয়ই বুঝবেন।’২০১৬ এসএসসিতে যোগ্য-অযোগ্যদের বাছাই করা সম্ভব না হওয়ায় পুরো প্যানেল বাতিল করে দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। সেই রায় বহাল রেখেছে সুপ্রিম কোর্ট। সে কথা জানিয়ে রাহুল লিখেছেন, রায় বেরনোর পর থেকেই হতাশ চাকরিহারারা। তাঁরা এবং তাঁদের পরিবার কোনও আশার আলো দেখছে না। এই পরিস্থিতিতে আপনার হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যে কোনও রকম দুর্নীতি ‘নিন্দনীয়’ বলেও চিঠিতে লিখেছেন রাহুল। কিন্তু যোগ্যদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করাও মেনে নেওয়া যায় না বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। লিখেছেন, ‘যোগ্য শিক্ষকরা প্রায় একদশক ধরে চাকরি করছেন। তাঁদের অনুপস্থিতে ছাত্রছাত্রীরাও বিপাকে পড়েছেন।’
চাকরিহারা শিক্ষকদের পরিবারের কথাও মন করিয়ে দিয়েছেন রাহুল। কংগ্রেস সাংসদের কথায়, ‘সকলে মানসিকভাবে বিপন্ন। আপনিও একসময়ে শিক্ষকতা করেছেন। এই সব শিক্ষক, তাঁদের পরিবার এবং পড়ুয়াদের অবস্থা আপনি ভালো বুঝবেন। আপনার কাছে অনুরোধ, সরকারকে বলুন যেন সঠিক পদ্ধতিতে এদের নিয়োগের ব্যবস্থা করা হয়।’ রাষ্ট্রপতিকে লেখা চিঠিতে রাহুল জানিয়েছেন, আজ চাকরিহারা শিক্ষকরা এক দশকের বেশি সময় শিক্ষকতা করেছেন। তাঁদের ছাঁটাইয়ের ফলে লক্ষ লক্ষ পড়ুয়া অসহায় পরিস্থিতিতে পড়েছে। অন্যদিকে এভাবে কাজ হারানোয় মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছেন শিক্ষকরা। হঠাৎ কর্মহীন হওয়ায় আর্থিক সংকটে পড়েছে তাঁদের পরিবারও। রাহুল লিখেছেন, “ম্যাডাম, আপনি এক সময় শিক্ষকতা করেছেন। আমার বিশ্বাস যোগ্য শিক্ষক, তাঁদের পরিবার এবং পড়ুয়াদের উপর এই মানবিক অবিচারকে আপনি অনুভব করবেন। আপনার কাছে আমার অনুরোধ, দয়া করে এদের পাশে দাঁড়ান এবং সরকারকে নির্দেশ দিন যাতে করে যোগ্যদের চাকরি বহাল থাকে।”