ইদে গাজ়ায় ইজ়রায়েলি হামলা

IMG-20250331-WA0296

ইদেও ছাড় নেই।খুশির উৎসবের মধ্যেও মৃত্যুমিছিল গাজায়। ইদের দিনেও গাজ়ায় ধারাবাহিক হামলা চালাল ইজ়রায়েলি ফৌজ। আর সেই হামলায় প্রাণ হারালেন অন্তত ৬৪ জন। তাদের মধ্যে রয়েছে শিশুরাও। ইজরায়েলি ডিফেন্স ফোর্সেসের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে এমনটাই জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্যমন্ত্রক। এছাড়া দক্ষিণ গাজার রাফাতে উদ্ধার হয়েছে ১৫ জন স্বাস্থ্যকর্মীর দেহ। সোমবার ভোর থেকে বিমান এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইজরায়েলি ফৌজ।তাতেই নারী ও শিশু সহ প্রাণ গিয়েছে ৬৪ জনের। আহতের সংখ্যা শতাধিক।দু’মাসের যুদ্ধবিরতি শেষে ফের নতুন করে গাজায় হামলা চালাতে শুরু করেছে ইজরায়েল। হামাসের ডেরা খুঁজে খুঁজে আক্রমণ শানাচ্ছে আইডিএফ। কয়েকদিন আগেই তেল আভিভের হামলায় গাজায় খতম হয় হামাসের ৩ শীর্ষ কমান্ডার। পাশাপাশি নিকেশ হয় ইসলামিক জেহাদের এক জঙ্গিও। সন্ত্রাসীদের খতম করতে ইদেও রক্তাক্ত অভিযান জারি রেখেছে ইজরায়েল। সোমবার উত্তর থেকে গাজা সর্বত্র হামলা চালিয়েছে ইজরায়েলি সেনা। শরণার্থী শিবিরে আছড়ে পড়ে বোমা। ইজরায়েলি সেনার হামলায় বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। নিহতদের মধ্যে রাষ্ট্রপুঞ্জের এক কর্মী রয়েছেন বলে স্বাধীন প্যালেস্টাইনপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজ়া স্বশাসিত কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। এ ছাড়া শরণার্থী শিবিরে কর্মরত অন্তত আট জন শরণার্থীর মৃত্যু হয়েছে বলে আন্তর্জাতিক সংগঠন ‘রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি’ জানিয়েছে। এরই মধ্যে ইজরায়েলি সেনার তরফে প্যালেস্টাইনি শরণার্থীদের দ্রুত রাফার শরণার্থী শিবিরগুলি খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবরের ৭ তারিখে হামাসের হামলার জবাব দিতে গিয়ে প্রথমে বন্দুকের নলের সামনে রেখে উত্তর গাজ়া ফাঁকা করিয়েছিল ইজ়রায়েলি বাহিনী। একে একে মধ্য ভূখণ্ডও গ্রাস করেছে তারা। ঘরবাড়ি, হাসপাতাল, ধূলিসাৎ করেছে সব। তার পর টানা হামলা চলেছে দক্ষিণে, খান ইউনিসে। এর পর ইজ়রায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর নিশানা গাজ়া ভূখণ্ডের একেবারে দক্ষিণ প্রান্ত রাফা। গাজ়া ভূখণ্ডের দক্ষিণতম শহর রাফার বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে কয়েক লক্ষ গৃহহীন প্যালেস্টাইনি শরণার্থী রয়েছেন। সেখানে ইজ়রায়েলি সেনা স্থল অভিযান শুরু করলে বহু প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে।নেতানিয়াহু সরকারের দাবি, এখনও ৫৯ জন ইজ়রায়েলিকে পণবন্দি করে রেখেছে হামাস। তাঁদের মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত কোনও অবস্থাতেই যুদ্ধবিরতি হবে না বলেও স্পষ্ট জানিয়েছে তেল আভিভ। প্রসঙ্গত, কাতারের মধ্যস্থতায় এবং আমেরিকা ও মিশরের প্রচেষ্টায় গত ১৫ জানুয়ারি রাতে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয় ইজ়রায়েল সরকার এবং হামাস। ১৯ জানুয়ারি থেকে তা কার্যকর হয়েছিল। কিন্তু মার্চের গোড়ায় একতরফা ভাবে যুদ্ধবিরতি ভেঙে গাজ়ায় আবার হামলা শুরু করেছে ইজরায়েলি সেনা। ঘটনাচক্রে, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও সম্প্রতি বিভিন্ন বক্তব্যে গাজ়ায় সেনা অভিযান সমর্থন করেছেন। এদিকে, ফের একবার শরণার্থী-সহ অন্যান্য প্যালেস্তিনীয়দের রাফা খালি করার নির্দেশ দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সেনা। এই পরিস্থিতিতে ফের একবার জোরাল হচ্ছে যুদ্ধবিরতির দাবি। কিন্তু ইজরায়েলের দাবি, এখনও ৫৯ জনকে পণবন্দি করে রেখেছে হামাস। তাঁদের মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত কোনও অবস্থাতেই আর যুদ্ধবিরতি হবে না। প্রসঙ্গত, রবিবারও ইজরায়েল হামলা চালিয়েছে গাজায়। হামলায় অন্তত ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে কয়েক জন শিশুও রয়েছে। এর মধ্যেই ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধ থামাতে আসরে নেমেছে কাতার ও মিশর। উভয় দেশ যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছে। কিন্তু যা পরিস্থিতি তাতে ইজরায়েল আর সহজে যুদ্ধবিরতির পথে হাঁটবে না বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement