শ্রীহরিকোটা: ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো) জানিয়েছে, আমেরিকার নতুন প্রজন্মের যোগাযোগ উপগ্রহ বহনকারী এলভিএম–এম৬ রকেট উৎক্ষেপণের জন্য ২৪ ঘণ্টার কাউন্টডাউন মঙ্গলবার এখানে শুরু হয়েছে।
একটি বিশেষ বাণিজ্যিক মিশনের অধীনে ইসরো বুধবার সকাল ৮টা ৫৪ মিনিটে এই মহাকাশ কেন্দ্রের দ্বিতীয় উৎক্ষেপণপ্যাড থেকে ভারী পে–লোড বহনকারী নিজস্ব উৎক্ষেপণযান এলভিএম৩–এম৬–এর মাধ্যমে ‘ব্লুবার্ড ব্লক–২’ উপগ্রহটি উৎক্ষেপণ করবে।
৬,১০০ কেজি ওজনের ‘ব্লুবার্ড’:
বেঙ্গালুরু–স্থিত মহাকাশ সংস্থার মতে, ৬,১০০ কিলোগ্রাম ওজনের এই যোগাযোগ উপগ্রহটি এলভিএম৩–এর ইতিহাসে পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে (লিও) স্থাপন করা এখন পর্যন্ত সবচেয়ে ভারী পে–লোড হবে।
এর আগে সবচেয়ে ভারী পে–লোড ছিল এলভিএম৩–এম৫–এর মাধ্যমে উৎক্ষেপিত যোগাযোগ উপগ্রহ–০৩, যার ওজন ছিল প্রায় ৪,৪০০ কিলোগ্রাম এবং যেটি ইসরো ২ নভেম্বর সফলভাবে উৎক্ষেপণ করেছিল।
বুধবারের এই মিশন ‘নিউস্পেস ইন্ডিয়া লিমিটেড’ (এনএসআইএল) এবং যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এএসটি স্পেসমোবাইলের মধ্যে হওয়া বাণিজ্যিক চুক্তির অধীনে পরিচালিত হচ্ছে। এনএসআইএল হল ইসরোর বাণিজ্যিক সংস্থা।
এলভিএম৩ — তিন ধাপের রকেট:
এই ঐতিহাসিক মিশন বিশ্বজুড়ে স্মার্টফোনে সরাসরি উচ্চগতির সেলুলার ব্রডব্যান্ড পরিষেবা দেওয়ার জন্য নকশা করা নতুন প্রজন্মের যোগাযোগ উপগ্রহটিকে কক্ষপথে স্থাপন করবে।
উৎক্ষেপণের আগে ইসরো–র চেয়ারম্যান ভি. নারায়ণন ২৩ ডিসেম্বর তিরুমালার শ্রী ভেঙ্কটেশ্বর স্বামী মন্দিরে পূজা–অর্চনা করেন।
সংস্থার মতে, ৪৩.৫ মিটার উঁচু এলভিএম৩ একটি তিন ধাপের রকেট, যাতে ক্রায়োজেনিক ইঞ্জিন বসানো হয়েছে—যা ইসরোর ‘লিকুইড প্রোপালশন সিস্টেমস সেন্টার’ উন্নয়ন করেছে। উৎক্ষেপণের জন্য প্রয়োজনীয় উচ্চ থ্রাস্ট দিতে এতে দুটি এস২০০ কঠিন রকেট বুস্টার যুক্ত করা হয়েছে, যা বিক্রম সারাভাই মহাকাশ কেন্দ্র তৈরি করেছে।
উৎক্ষেপণের প্রায় ১৫ মিনিট পর ‘ব্লুবার্ড ব্লক–২’ উপগ্রহটির রকেট থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশা করা হচ্ছে।
ব্লুবার্ড ব্লক–২: মোবাইলেই সরাসরি কানেক্টিভিটি
ব্লুবার্ড ব্লক–২ মিশনের লক্ষ্য হলো উপগ্রহের মাধ্যমে সরাসরি মোবাইল কানেক্টিভিটি প্রদান করা।
এই নেটওয়ার্ক বিশ্বের যেকোনো স্থানে, যেকোনো সময় সকলের জন্য ৪জি ও ৫জি ভয়েস–ভিডিও কল, বার্তা, স্ট্রিমিং এবং ডেটা পরিষেবা দেবে।
এএসটি স্পেসমোবাইল ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে ব্লুবার্ড–১ থেকে ৫ পর্যন্ত পাঁচটি উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করেছিল, যা যুক্তরাষ্ট্র এবং কয়েকটি অন্যান্য দেশে ধারাবাহিক ইন্টারনেট পরিষেবা দিচ্ছে।
কোম্পানি তাদের নেটওয়ার্ক আরও শক্তিশালী করতে একই ধরনের আরও উপগ্রহ উৎক্ষেপণের পরিকল্পনা করেছে এবং বিশ্বজুড়ে ৫০–এর বেশি মোবাইল অপারেটরের সঙ্গে অংশীদারিত্ব করেছে।










