আইপিএলের বিদেশি খেলোয়াড়দের বেতনের সীমা নির্ধারণের নিয়মে ক্রিকেট বিশ্বে তোলপাড়

IMG-20251217-WA0062

আবু ধাবি: আইপিএল ২০২৬-এর মিনি নিলামের পর একটি নিয়ম ক্রিকেট বিশ্বে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এই নিয়মটি বিদেশি খেলোয়াড়দের বেতন সংক্রান্ত। নিয়ম অনুযায়ী, নিলামে যত বড় অঙ্কের দরই উঠুক না কেন, কোনও বিদেশি খেলোয়াড় ১৮ কোটি টাকার বেশি আয় করতে পারবেন না।
এই নিয়মটি প্রথম চালু হয় আইপিএল ২০২৫-এর মেগা নিলামে এবং এ বছরও তা বহাল রাখা হয়েছে। বাইরে থেকে দেখলে নিয়মটি বিভ্রান্তিকর মনে হতে পারে, তবে এর পেছনে বিসিসিআই-এর স্পষ্ট চিন্তাভাবনা এবং ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর উদ্বেগ জড়িত রয়েছে।
আইপিএল-এর নতুন নিয়ম অনুযায়ী, কোনও বিদেশি খেলোয়াড়ের সর্বোচ্চ বেতন সবচেয়ে দামি ভারতীয় খেলোয়াড়ের রিটেনশন স্ল্যাবের বেশি হতে পারবে না। মিনি নিলামের জন্য এই স্ল্যাব নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৮ কোটি টাকা। যদি কোনও বিদেশি খেলোয়াড়ের জন্য ১৮ কোটির বেশি দর ওঠে, তাহলে অতিরিক্ত অর্থ বিসিসিআই-এর অ্যাকাউন্টে জমা হবে। এই অর্থ খেলোয়াড়দের কল্যাণমূলক প্রকল্পে ব্যবহার করা হবে। তবে সংশ্লিষ্ট ফ্র্যাঞ্চাইজির পার্স থেকে পুরো অর্থই কেটে নেওয়া হবে।
উদাহরণস্বরূপ, কোনও বিদেশি খেলোয়াড়ের জন্য যদি ৩০ কোটি টাকার দর ওঠে, তাহলে খেলোয়াড় পাবেন ১৮ কোটি টাকা এবং বাকি ১২ কোটি টাকা যাবে বিসিসিআই-এর প্লেয়ার ওয়েলফেয়ার ফান্ডে, যদিও ফ্র্যাঞ্চাইজির পার্স থেকে পুরো ৩০ কোটি টাকাই কেটে নেওয়া হবে।
এই নিয়ম অনুযায়ী, মঙ্গলবারের মিনি নিলামে ২৫.২০ কোটি টাকায় বিক্রি হওয়া অস্ট্রেলিয়ান অলরাউন্ডার ক্যামেরন গ্রিনও পাবেন মাত্র ১৮ কোটি টাকা, অর্থাৎ তাঁর বেতন থেকে ৭.২০ কোটি টাকা কাটা যাবে।
এই নিয়মটি শুধুমাত্র বিদেশি খেলোয়াড়দের জন্য প্রযোজ্য। ভারতীয় খেলোয়াড়রা সম্পূর্ণ দরমূল্য পাওয়ার অধিকারী। এর উদাহরণ দেখা গিয়েছিল আইপিএল ২০২৫-এর মেগা নিলামে, যখন ঋষভ পান্তকে ২৭ কোটি টাকায় কেনা হয়েছিল এবং তিনি পুরো অর্থই পেয়েছিলেন। পান্ত আইপিএল ইতিহাসের সবচেয়ে দামি খেলোয়াড়।
রিপোর্ট অনুযায়ী, এই পরিবর্তনের পেছনে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর অভিযোগই প্রধান কারণ। দলগুলোর অভিযোগ ছিল, কিছু বিদেশি খেলোয়াড় ইচ্ছাকৃতভাবে মেগা নিলাম এড়িয়ে যান এবং পরে মিনি নিলামে নাম নথিভুক্ত করে সীমিত বিকল্পের সুযোগ নিয়ে বেশি দামে বিক্রি হন। এই সমস্যার সমাধানে বিসিসিআই দুটি বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
প্রথম নিয়ম অনুযায়ী, নিলামে নাম নথিভুক্ত করার পর যদি কোনও খেলোয়াড় সরে দাঁড়ান, তাহলে তাঁকে আইপিএলে অংশগ্রহণ থেকে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হবে। দ্বিতীয় নিয়মটি বিদেশি খেলোয়াড়দের বেতন সংক্রান্ত—যেখানে ভারতীয় খেলোয়াড়দের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে এবং বিদেশি খেলোয়াড়দের সর্বোচ্চ আয়ে সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এই নিয়মের ফলে আইপিএলের ক্ষতি হবে কি না, সেই প্রশ্নও উঠছে। তবে বর্তমানে আইপিএল বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় টি২০ লিগ। যতক্ষণ না বিদেশি টি২০ লিগগুলো খেলোয়াড়দের বেশি নিরাপত্তা, অগ্রাধিকার ও অর্থ দিতে পারছে, ততক্ষণ আইপিএলের কোনও ঝুঁকি নেই। বিদেশি টি২০ লিগগুলোর তুলনায় আইপিএল অনেক এগিয়ে এবং আপাতত সম্পূর্ণ নিরাপদ।

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement