কলকাতা: বিহারে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার সাথে সাথে, বিজেপি বাংলার জন্য সম্পূর্ণরূপে নির্বাচনী মোডে প্রবেশ করেছে। বাংলা এখন নইলে কখনই নয়।
আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের জন্য মাঠ প্রস্তুত করার জন্য দলটি ইতিমধ্যেই তার কৌশল তৈরি করেছে। সূত্রের খবর, কোনও ভুল বোঝাবুঝি এড়াতে, বিজেপি বাংলার পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলে ছয়টি রাজ্যের সাংগঠনিক মন্ত্রীদের মোতায়েন করেছে। এই দলগুলিতে ছয়জন সিনিয়র নেতাকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, এই সমস্ত নেতারা আগামী পাঁচ মাস বাংলায় থাকবেন। ২০২৬ সালে বাংলার দুর্গ জয়ের জন্য বিজেপি একটি শক্তিশালী কৌশল তৈরি করেছে।
এই কৌশলের অংশ হিসেবে, বিজেপি বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন নেতাদের নিয়োগ করেছে এবং পরবর্তী পাঁচ মাস তাদের মাঠে মোতায়েন করেছে। পশ্চিমবঙ্গের দুর্গকে গেরুয়া রঙে রাঙানোর জন্য বিজেপি একটি বড় কৌশল তৈরি করেছে। সূত্রের খবর, বাংলার পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলে ছয়টি রাজ্যের সাংগঠনিক মন্ত্রীদের মোতায়েন করেছে বিজেপি। ছয়জন সিনিয়র নেতাকেও এই পদে নিয়োগ করা হয়েছে। এই সকল নেতা আগামী পাঁচ মাস বাংলায় অবস্থান করবেন এবং স্থল কৌশল, বুথ নেটওয়ার্কিং এবং সামাজিক সমন্বয়ের উপর কাজ করবেন।
পুরুলিয়া, বাঁকুড়া এবং বর্ধমানে সাংগঠনিক সম্প্রসারণের লক্ষ্য
ছত্তিশগড়ের সাংগঠনিক মন্ত্রী পবন সাই এবং উত্তরাখণ্ডের ধন সিং রাওয়াত রাধবঙ্গ অঞ্চলে কাজ করবেন। পুরুলিয়া, বাঁকুড়া এবং বর্ধমানের মতো এলাকা বিজেপির সাংগঠনিক সম্প্রসারণের প্রধান লক্ষ্য। দিল্লির সাংগঠনিক মন্ত্রী পবন রানাকে হাওড়া-হুগলি-মেদিনীপুরে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, হরিয়ানার সিনিয়র নেতা সঞ্জয় ভাটিয়া তার সাথে হাওড়া-হুগলিতে রয়েছেন।
ইউপি সরকারের মন্ত্রী জেপিএস রাঠোরকে মেদিনীপুরে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এটি শুভেন্দু অধিকারীর একটি শক্ত ঘাঁটি, যেখানে বিজেপি এবং টিএমসির মধ্যে তীব্র লড়াই চলছে। হিমাচলের সাংগঠনিক মন্ত্রী এম. সিদ্ধার্থন কলকাতা মহানগর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার দায়িত্বে রয়েছেন। তাঁর সাথে রয়েছেন কর্ণাটকের বিশিষ্ট নেতা এবং প্রাক্তন জাতীয় সাধারণ সম্পাদক সি.টি. রবি। এই অঞ্চলটি তৃণমূল কংগ্রেসের সবচেয়ে শক্তিশালী ঘাঁটি, এবং এখানে প্রভাব বিস্তার করা বিজেপির জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হবে।
উত্তর ২৪ পরগনায় প্রভাব বিস্তারের প্রস্তুতি: অন্ধ্রপ্রদেশের সংগঠন মন্ত্রী এন. মধুকরকে নবদ্বীপ এবং উত্তর ২৪ পরগনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাঁর সাথে থাকবেন উত্তর প্রদেশের সিনিয়র নেতা সুরেশ রানা। এই অঞ্চলটি সাম্প্রদায়িক সংবেদনশীলতা, বাংলাদেশি অনুপ্রবেশের সমস্যা এবং শক্তিশালী তৃণমূল ভোটের জন্য পরিচিত। অরুণাচল প্রদেশের সংগঠন মন্ত্রী অনন্ত নারায়ণ মিশ্রকে উত্তরবঙ্গের মালদা-মুর্শিদাবাদ-শিলিগুড়ি বেল্ট এবং মালদার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কর্ণাটকের সংগঠন মন্ত্রী অরুণ বিন্নাদিকে শিলিগুড়িতে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কৈলাস চৌধুরীও এখানে সক্রিয় ভূমিকা পালন করবেন।
বুথ এবং পান্না প্রধানদের পুনরুদ্ধার:
বিজেপি এই কৌশল বাস্তবায়ন শুরু করেছে। এই সমস্ত নেতারা নিয়মিত বাংলায় আসছেন। এই নেতারা মূলত বুথ কৌশল নিয়ে কাজ করছেন। অক্টোবরের মধ্যে, রাজ্যের ৭৫% এরও বেশি বুথ এবং পান্না প্রধানদের পুনর্বহাল করা হয়েছে। ২৫০টিরও বেশি আসনের জন্য একজন পুরুষ এবং একজন মহিলা সম্প্রসারণবাদীকে নিয়োগ করা হয়েছে।
পঞ্চায়েত স্তরে মাইক্রোম্যানেজমেন্টের কাজ শুরু হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে চ্যালেঞ্জ উল্লেখযোগ্য, তাই বিজেপি তাদের সিনিয়র নেতাদের এখানে মোতায়েন করেছে। এই নেতারা এখন আগামী পাঁচ মাস ধরে নির্বাচনের জন্য অঞ্চলভিত্তিক কৌশল তৈরিতে লাগাতারভাবে ব্যয় করবেন। তারা কীভাবে দল বিধানসভা নির্বাচনে জিততে পারে সে বিষয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সাথে একটি শক্তিশালী কৌশল তৈরি করবেন।









