আদালতের রায়ে অস্বস্তিতে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার দেওয়া ‘রক্ষাকবচ’ প্রত্যাহার করে নিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর বেঞ্চ। অর্থাত, আদালতের দৌলতে আর কোনও রকম ‘রক্ষাকবচ’ পাবেন না রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। এর পাশাপাশি মানিকতলা-সহ মোট চারটি মামলা সিবিআই এবং রাজ্যের যুগ্ম সিট গঠন করেছে আদালত।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশে এই ‘রক্ষাকবচ’ পেয়েছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আদালতের নির্দেশ ছিল, শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে কোনও এফআইআর আদালতের অনুমতি ছাড়া নয়।এর ফলে রাজ্যে শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে আদালত গ্রাহ্য অভিযোগ থাকলেও এতদিন তার বিরুদ্ধে এফআইআর হত না। ২০২১ সালে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা প্রথম অন্তর্বতী নির্দেশ আকারে এই রক্ষাকবচ দেন বিরোধী দলনেতাকে। সেই সময় শুভেন্দুর এই ‘রক্ষাকবচ’ নিয়ে সরব হয়েছিল খোদ রাজ্য। পাল্টা মামলা করা হয়েছিল। পরবর্তীতে সেই জল গড়ায় শীর্ষ আদালত পর্যন্ত। কিন্তু দিনশেষে বহাল থেকেছে রাজাশেখর মান্থার নির্দেশ। ‘রক্ষাকবচ’ পেয়েছেন শুভেন্দু। তবে তার মেয়াদ আপাতত শেষ হল বলে মনে করছেন আইনজ্ঞরা।
হাইকোর্টের এই নির্দেশের পরই রাজ্যের তরফে আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘শুভেন্দু অধিকারীর এতদিন যে রক্ষাকবচ ছিল, সেই রক্ষাকবচ আর নেই। প্রায় ১৮-২০টা মামলা চ্যালেঞ্জ হয়েছিল, তার মধ্যে ১২-১৩টা বাদে বাকি গুলোয় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বীরবাহা হাঁসদার মামলায় কোর্ট কোনও ইন্টারফেয়ার করেনি। আগে যে কোনও মামলায় এফআইআর করা যাবে না বলে বলা ছিল, সেটা আর থাকছে না। রাজ্যের কোনও বাধা রইল না।’ পাশাপাশি কল্যাণের সংযোজন, ‘ওরা বলছে, অনেক কেস হয় শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে, কিন্তু শুভেন্দু অধিকারী তো আলাদা নন, উনি যদি ক্রাইম করেন, মামলা হবে।’
আর আদালতের নির্দেশের পরই শুভেন্দু অধিকারীর পক্ষের আইনজীবী বিল্বদল ভট্টাচার্য বলেন, ‘২০২১-২২ সালে দুটি রিট পিটিশন ফাইল করা হয়েছিল। আদালত বলেছিল, যদি নতুন কোনও কমিশন করতে হয়, তাহলে আদালতের অনুমতি নিতে হবে। রাজ্য সরকারের হার হয়েছে, কারণ বেশিরভাগ এফআইআর স্কোয়াশ করে দেওয়া হয়েছে। যাতে মানুষের আস্থা থাকে, তাতে সিবিআই আর পুলিশের আধিকারিকেরা থাকবেন। ‘ পাশাপাশি বিল্বদলের সংযোজন, ‘রক্ষাকবচ প্রত্যাহার বলা হচ্ছে, আদৌ তা নয়। কারণ আদালতের অনুমতি নিয়ে এফআইআর করার অনুমতি ছিল। রাজ্য এর আগেও আদালতের অনুমতি নিয়ে ভুয়ো এফআইআর দায়েরের চেষ্টা হয়েছিল। বিরোধী দলনেতা যেমনটা বলছিলেন ভুয়ো এফআইআর হচ্ছে, সেটাই প্রতিষ্ঠিত হল।’
প্রসঙ্গত, নন্দীগ্রামের ২ টি মামলা, তমলুকের ১ টি মামলা, কাঁথির ১ টি মামলায় রক্ষাকবচ চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেননি শুভেন্দু অধিকারী। সেই মামলা গুলিতে রক্ষাকবচ চেয়ে আবেদন করলে আদালত তা বিবেচনায় আনবে, এমনই জানালেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। সঙ্গে এও জানা যাচ্ছে, দেড় ডজনের ওপর এফআইআর স্থগিত বা তদন্তমুখ বন্ধ আছে হাইকোর্টের নির্দেশে।











