ফের প্রশ্ন উঠে গেল রাজ্য তথা শহরের সরকারির হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়ে। আরজি করের পর এবার যৌন নির্যাতনের ঘটনার তালিকায় যোগ হল রাজ্যের এক নম্বর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল এসএসকেএম-এর নামও। অভিযোগ, চিকিৎসা করাতে আসা এক নাবালিকাকে যৌন হেনস্থা করা হয়েছে। ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে অভিযুক্ত যুবককে। তিনি শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালের প্রাক্তন অস্থায়ী কর্মী বলে জানা গেছে। সূত্রে এও জানা গেছে, শৌচাগারের ভিতর নাবালিকার রোগীকে যৌন হেনস্থা করে শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালের প্রাক্তন এই অস্থায়ী কর্মী।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, অভিযুক্ত ব্যক্তি এর আগে শম্ভুনাথ পণ্ডিতে কাজ করত। বর্তমানে এনআরএস হাসপাতালের অস্থায়ী কর্মী। বুধবার ওই নাবালিকা পরিবারের সঙ্গে এসএসকেএম হাসপাতালে আসে। এদিকে ওপিডি টিকিটের জন্য ছিল দীর্ঘ লাইন। সেই সময় অভিযুক্ত ওয়ার্ড বয়ের পোশাক পরে আসে। পরিবারের দাবি, ওই ব্যক্তি জানান তিনি টিকিটের ব্যবস্থা করে দেবেন, কোনও রকম লাইন দিতে হবে না। এরপরই তিনি নাবালিকাকে অন্য একটি জায়গায় নিয়ে যান। সেখানেই একটি শৌচাগার ছিল। অভিযোগ সেখানেই শ্লীলতাহানি করা হয় ওই নাবালিকাকে। ঘটনার পরই নাবালিকা অভিযুক্তের নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগ জানানোর পর, ভবানীপুর থানার পুলিশ ধাপা থেকে গ্রেফতার করে শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালের প্রাক্তন অস্থায়ী কর্মীকে। এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠে গেল, নীলরতন সরকার হাসপাতালের কর্মী এসএসকেএম-এ কী করছিলেন তা নিয়ে। সঙ্গে এ প্রশ্নও উঠে গেল কেনই বা অভিযুক্ত ওয়ার্ড বয়ের পোশাক পরে ঘোরাঘুরি করছিলেন এসএসকেএম-এ।
এদিকে পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমে হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে অভিযুক্তকে শনাক্ত করে। এরপর বৃহস্পতিবার ধাপা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয় তাকে। পুলিশ সূত্রে এ খবরও মিলেছে, ওই এলাকাতেই যুবকের বাড়ি। তার বিরুদ্ধে পকসো ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। পাশাপাশি ভবানীপুর থানার সূত্র এও জানা গিয়েছে, এসএসকেএম-এ চুক্তিভিত্তিক ওয়ার্ড বয় বিভাগে কাজ করতেন ওই যুবক। সেই কাজের সুবাদে তার কাছে হাসপাতালের পুরনো পোশাক ছিল। সেটা পরেই তিনি বুধবার এসএসকেএম-এ ঢুকে সোজা চলে যান নাবালিকার কাছে। তারপর শ্লীলতাহানির চেষ্টা করতেই নাবালিকার চিৎকার করে ওঠেন। তাতে সকলে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হন। অবস্থা বেগতিক দেখে এরপরই ওই যুবক সেখান থেকে পালিয়ে যায়।
উল্লেখ্য, গতবছর আরজি কর হাসপাতালে ডাক্তারি পড়ুয়া চিকিৎসককে খুন ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। তিলোত্তমার সেই ঘটনায় তোলপাড় হয়ে যায় গোটা রাজ্য। গ্রেফতারও হয় সঞ্জয় রাই নামে এক সিভিক ভলান্টিয়র। তাকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে কোর্ট। এরপর চলতি বছরের কালীপুজোর দিনও এক মহিলা চিকিৎসকে ধর্ষণের হুমকির অভিযোগ ওঠে হোমগার্ডের বিরুদ্ধে। আর এবার আরও এক সরকারি হাসপাতালের ভিতর উঠল শ্লীলতাহানির অভিযোগ।











