ছাব্বিশের আগে সিএএ নিয়ে বৈঠকে বঙ্গ বিজেপ

IMG-20251022-WA0123

বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যের ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনে উদ্যোগী হয়েছে নির্বাচন কমিশন। অনেক দিন আগে থেকেই প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। যে কোনও দিন রাজ্যে শুরু হয়ে যেতে পারে সেই প্রক্রিয়া। এই আবহে সিএএ নিয়ে কর্মশালা বৈঠকের আয়োজন করল বিজেপির বঙ্গ ব্রিগেড। বুধবার সল্টলেকে এই বৈঠকের আয়োজ করা হয়। রাজ্যজুড়ে ৭০০ শিবির করার ভাবনা রয়েছে  বিজেপি এবং তার সহযোগীদের। বাংলাদেশ সীমান্তে বিশেষ নজর দিচ্ছে বিজেপি। নদিয়া, কোচবিহারের মতো জেলায় বিশেষ নজর দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিজেপির সর্বভারতীয় নেতৃত্বের মধ্যে বৈঠকে হাজির ছিলেন বি এল সন্তোষ, সুনীল বনশলরাও। বিধানসভা ভোটের আগে  কেন্দ্রের সিএএ বা নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনকে সামনে রেখে রাজ্যে শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েই এই শিবিরের আয়োজন করা হয়। এই শিবিরের মূল লক্ষ্য হল, সিএএ নিয়ে জনসংযোগ ও সহায়তার পরিকাঠামো গড়ে তোলা, যাতে সাধারণ মানুষ বিশেষ করে শরণার্থীরা সরাসরি নাগরিকত্ব পাওয়ার প্রক্রিয়ায় যুক্ত হতে পারেন। বিজেপি সূত্রে খবর, বাংলায় আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই প্রায় ৭০০টি সিএএ ক্যাম্প করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দল। প্রতিটি ক্যাম্পে সাধারণ মানুষকে সিএএ সংক্রান্ত তথ্য দেওয়া হবে, পাশাপাশি কারা এই আইনের আওতায় নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন, সেই বিষয়েও বিস্তারিত নির্দেশনা দেওয়া হবে। এই ক্যাম্পগুলিতে আবেদনপত্র পূরণে সহায়তা, প্রয়োজনীয় নথিপত্র সংগ্রহ এবং কারিগরি সহযোগিতা দেওয়া হবে। ক্যাম্পগুলির সুষ্ঠু পরিচালনার জন্য জেলা ও ব্লক স্তরের নেতৃত্বকে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। নাগরিকত্ব আইন কীভাবে কার্যকর হবে এ রাজ্যে, সেই বিষয়ে মানুষকে অবগত করতে চায় গেরুয়া শিবির। সেই লক্ষ্যেই বিজেপির এই উদ্যোগ। নাগরিকত্ব আইন কার্যকরে  রাজ্য বিজেপির ভূমিকা থাকবে, সেই বিষয় নিয়েও বুধবারের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। রাজ্যে যে সমস্ত সিএএ ক্যাম্পের আয়োজন করা হবে, সেগুলি  কীভাবে পরিচালিত হবে, লোকেশন নির্বাচন, স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ, প্রযুক্তিগত সহায়তা, এবং স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় কীভাবে করা হবে, তা নিয়েই প্রথম ভাগের আলোচনা হয়। নাগরিকত্ব সার্টিফিকেট পেতে যেসব সমস্যা দেখা দিচ্ছে, যেমন—নথিপত্র ঘাটতি, ফর্ম ফিলাপে অসুবিধা, আবেদন প্রক্রিয়ায় জট—সেগুলির সমাধানে কী পদক্ষেপ করা হবে, তা নিয়েও আলোচনা হয়। রাজ্যে কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলির অগ্রগতি এবং সেগুলিকে জনমানসে তুলে ধরার রণকৌশল নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য, জেলার সভাপতি ও নেতৃত্বরা। দুপুর ২টো থেকে শুরু হয় মূল বৈঠক। নদিয়া, বনগাঁ, রানাঘাটের সমস্ত অঞ্চল যেগুলি মূলত মতুয়া অধ্যুষিত অঞ্চল হিসেবেই পরিচিত, সেখানকার সব বিধায়কই উপস্থিত ছিলেনএদিনের বৈঠকে।বিজেপির মুখপাত্র জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়  জানিয়েছেন, ‘অত্যন্ত উদ্বেগজনক তথ্য এখনও পর্যন্ত উঠে এসেছে। আমার কাছে ১৮ তারিখ পর্যন্ত ২০০২ ও ২০২৫ সালের যে ম্যাপিং এসেছে বিভিন্ন স্থানীয় সূত্র থেকে, বিএলও’দের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে, তাতে আমরা দেখছি অর্ধেকের বেশি ভোটার পশ্চিমবঙ্গের। মানে ৭ কোটি ৮০ লক্ষ ভোটারের মধ্যে প্রায় ৩ কোটি ৭০-৮০ লক্ষ ভোটারের ২০০২ ও ২০২৫ সালের ভোটার তালিকায় ম্যাপিং এবং ম্যাচিং হচ্ছে না। সাড়ে তিন কোটি থেকে ৪ কোটি ভোটার যাঁদের কাগজ দেখাতে হবে সত্যি করে, কারণ তাঁদের নাম বা পরিবারের কারও নামও নেই। ২০০২ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে যাঁদের নাম উঠেছে। তাঁদের মধ্যে একটা সিংহভাগ মানুষ থাকবেন, যাঁরা সন্দেহজনক ভোটার। এসআইআর হলে তাঁদের নাম বাদ যাবে।’

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement