সল্টলেক থেকে গ্রেফতার রাজস্থানের তিন দুষ্কৃতি। পলাতক একজনের খোঁজে চলছে তল্লাশি। পুলিশ সূত্রে খবর, রাজস্থানের কুচমান এলাকার এক ব্যবসায়ীকে খুন করে ৪ দুষ্কৃতী কলকাতায় এসে গা ঢাকা দেওয়ার পরিকল্পনা করে। খবর পেয়ে পুলিশ ফুলবাগান এলাকায় পৌঁছলে পালানোর চেষ্টা করে অভিযুক্তরা। পরে ধরা পড়ে তাঁরা। তবে বৃহস্পতিবারের এই অ্যাকশন ছিল একেবারে বলিউডি সিনেমার মতো।
সূত্রে খবর, অভিযুক্ত দুষ্কৃতীরা দৌড়ে সল্টলেকের পূর্বাঞ্চলের একটি আবাসনে ঢুকে পড়ার চেষ্টা করে। এরপর সোজা পৌঁছে যায় আবাসনের চার তলায়। এই তিন দুষ্কৃতির পিছু নেয় পুলিশও। সেখানে নিরাপত্তরক্ষীদের তাড়া খেয়ে সেখান থেকে পালিয়ে যায় সল্টলেকের ‘বেঙ্গল টেনিস অ্যাকাডেমির’ কাছে। এরপর সেখান থেকেই গ্রেফতার হয় এই দুষ্কৃতিরা।
পুলিশ সূত্রে খবর, শুরুতেই ধরা পড়ে ২ জন৷ সেই সময় ১ দুষ্কৃতী ফুলবাগান থেকে সল্টলেকের পথে পালায়৷ তার মধ্যে ১ জন তাড়া খেয়ে পূর্বাচল আবাসনের পাঁচিল টপকে চত্বরে ঢুকে পড়ে৷ তারপর সোজা ঢুকে পড়ে আবাসনেরই ‘এম’ বিল্ডিং-এর আবাসিক বিদ্যাসাগর কলেজদের অধ্যাপক অঙ্কুর ভাওয়ালের ফ্ল্যাটের মধ্যে৷
অঙ্কুর ভাওয়াল জানান, ‘তখন সাড়ে ৮টা নাগাদ হবে৷ হঠাৎ দেখি ফ্ল্যাটের মধ্যে একটা লোক ঢুকে পড়েছে৷ বলে চোর আয়া হে৷ আমার দেখেই মনে হল লোকটা ভাল নয়৷ তাড়া খেয়ে এসেছিল বোঝা যাচ্ছিল৷ তারপর ওকে বলি আপনি বেরিয়ে যান৷ তারপর বের করে দিই ফ্ল্যাট থেকে৷’
এখানেই শেষ নয়, এরপর আবাসনের ‘এম’ বিল্ডিং এর ছাদের গেট ভেঙে ‘এল’ বিল্ডিং-এর ছাদে চলে যায় ওই খুনি। ইতিমধ্যেই খবর দেওয়া হয় ফুলবাগান থানায়। তারপর সেই বিল্ডিং এর ছাদে হয়ে কার্নিশে পৌঁছায় খুনি। সেইখানেই তাঁকে দেখতে পান এক বাসিন্দা। তারপর কার্নিশে নামতে শুরু করে৷ ইতিমধ্যেই আবাসনের অনেকে বেরিয়ে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করেন৷ ততক্ষণে পৌঁছয় পুলিশ৷ দুষ্কৃতি কার্নিশ বেয়ে নমতে গেলে গ্রেফতার করে পুলিশ৷
তবে এই ঘটনার পর বড় প্রশ্নচিহ্ন তৈরি হয়েছে কলকাতার মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে। কারণ, অন্য রাজ্য থেকে দুষ্কৃতীরা এসে এই রাজ্যে গা ঢাকা দিচ্ছে। খুব স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, এটা কি দুষ্কৃতীদের স্বর্গরাজ্য তৈরি হয়েছে কি না তা নিয়েও। এই প্রসঙ্গে প্রাক্তন পুলিশ কর্তাদের অভিমত, নানা ভাবে তারা ট্রেনে-বাসে করে এসে আবাসনে লুকিয়ে থাকছে। এবার জনগণ ও পুলিশের এসটিএফ-এর সাহায্যে পুরো দলটাকে ধরা হয়েছে। তবে একজন এখনও ধরা পড়েনি। আর এখানেই পুলিশ কর্তাদের ধারনা, ইন্টেলিজন্সের অভাব রয়েছে।পুলিশের সঙ্গে সাধারণের যোগাযোগ হয়ত কম ছিল।

এদিকে সল্টলেক হায়াত হোটেলের কাছে ট্যাক্সি স্ট্যান্ড থেকে উদ্ধার হয় দুটি ব্যাগ। বৃহস্পতিবার যেখান থেকে রাজস্থানের ব্যবসায়ীকে খুনের ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়েছে সেই জায়গা থেকেই এই ব্যাগ উদ্ধার হয়। ওই ব্যাগ এই অভিযুক্তদের বলেই পুলিশের অনুমান। ব্যাগের মধ্যে কী আছে সব খতিয়ে দেখা হচ্ছে পুলিশের পক্ষ থেকে।