শিলিগুড়িতে তৈরি হবে মহাকাল মন্দির, ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর 

IMG-20251006-WA0138

পুরীর মন্দিরের আদলে দিঘায় তৈরি হয়েছে জগন্নাথ ধাম। এ বার শিলিগুড়িতে সবথেকে বড় মহাকাল মন্দির তৈরি হতে চলেছে। বৃহস্পতিবার উত্তরবঙ্গ থেকে এমনটাই ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তরবঙ্গের বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শনে যান তিনি।কর্মসূচি সেরে  বৃহস্পতিবার কলকাতায় ফেরার আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, দার্জিলিঙের ম্যালের মহাকাল মন্দিরের মতো সমতলে নতুন একটি মহাকাল মন্দির গড়তে চান তিনি। পাশাপাশি শিলিগুড়ি কনভেনশন সেন্টার তৈরির জন্যও জেলাশাসককে জায়গা নির্বাচিত করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার দার্জিলিংয়ের মহাকাল মন্দিরে পুজো দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর পরে তিনি মন্দিরের পুরোহিতের সঙ্গে কথা বলেন। দর্শনার্থীদের সঙ্গেও কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। এর পরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘শিলিগুড়ির জেলাশাসককে বলেছি একটি জমি দেখার জন্য। সেখানে তৈরি হবে কনভেনশন সেন্টার। তার পাশেই তৈরি হবে মহাকাল মন্দির। সেখানে সবচেয়ে বড় শিবমূর্তি থাকবে।’ মুখ্যমন্ত্রী জানান,  ‘‘এই মহাকাল মন্দিরে অনেক বয়স্ক মানুষ এবং বিশেষ ভাবে সক্ষমেরা আসেন। তাঁদের পক্ষে এত উপরে ওঠা সম্ভব নয়। আমি জেলা প্রশাসনকে বলেছি, জিটিএ-র তরফে ইলেকট্রিক গা়ড়ির ব্যবস্থা করা হবে।’’  মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দিঘায় আমরা একটা জগন্নাথধাম করে দিয়েছি। রাজারহাটে একটা দুর্গাঙ্গন করছি। সেখানে ট্রাস্ট তৈরি করা আছে। জমিও চিহ্নিত করা হয়েছে। আর্কিটেকচারও আমি দেখে নিয়েছি। দার্জিলিঙের জেলাশাসককে বলেছি, শিলিগুড়ির আশপাশে একটা ভাল জমি দেখতে। সেখানে একটা কনভেনশন সেন্টার করা হবে। তার পাশেই একটা বড় মহাকাল মন্দির করব। সেখানে সবচেয়ে বড় শিবঠাকুর তৈরি করব।’’ মহাকাল মন্দির তৈরির জন্য আগে তহবিল গড়তে হবে বলেও জানান মমতা।  দিঘার জগন্নাথধামের আদলেই ট্রাস্ট গড়ে শিলিগুড়ির মহাকাল মন্দির তৈরি করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যাতে তা নিয়ে কোনও বিতর্ক তৈরি না হয়। জগন্নাথ মন্দিরের দায়িত্ব একটি ট্রাস্টের হাতে। সেটির পরিচালন ভার ইস্কনের। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ‘মন্দির তৈরির আগে আমাকে একটা ট্রাস্ট করতে হবে। তাদের দিয়ে করাতে হবে। সকলকে নিয়ে আমরা নিজেরা করব।’ আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে হাতে আছে মাত্র কয়েক মাস। তৃণমূল-সহ সব রাজনৈতিক দলই নির্বাচনকে মাথায় রেখে পদক্ষেপ বিভিন্ন করছে। তবে তার মধ্যে বৃহত্তম পদক্ষেপ হল দিঘায় পুরীর ধাঁচে জগন্নাথ মন্দির। গত ৩০ এপ্রিল  অক্ষয় মুখ্যমন্ত্রী  সেই মন্দিরের উদ্বোধন করেছেন।শাসকদলের বক্তব্য, দিঘায় জগন্নাথ মন্দির  তৈরি হওয়ায় আসন্ন বিধানসভা ভোটে লাভ হবে তৃণমূলের।  পুরীর মন্দিরকে তিনি কাছে এনে দিয়েছেন। যাতে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলার বাসিন্দারা সহজেই সেখানে যেতে পারেন। মমতা সেই মন্দিরে অধিষ্ঠিত জগন্নাথের প্রসাদ সরকারি ব্যবস্থাপনায় বিনা খরচে রাজ্যের প্রতিটি বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছেন। প্রশাসনের একাংশ এবং শাসকদলের দাবি, সেই পরিকল্পনায় ‘বিপুল সাড়া’ মিলেছে। যদিও অনেকের মতে, বিধানসভা ভোটে হিন্দু ভোট নিশ্চিত করতে মমতা ওই পদক্ষেপ করেছেন। সেই জল্পনা আরও বাড়িয়েছিল মমতার নিউ টাউনে ‘দুর্গাঙ্গন’ তৈরির ঘোষণা। তাতে নতুন মাত্র যোগ করল শিলিগুড়িতে মহাকাল মন্দির তৈরির পরিকল্পনা। এমনিতেই উত্তরবঙ্গের মাটিতে বিজেপি এখনও তৃণমূলের তুলনায় শক্তিশালী।শিলিগুড়ি শহরে অবাঙালিদের বসবাস ক্রমান্বয়ে বেড়েছে। প্রত্যাশিত ভাবেই বিভিন্ন সময়ে ক্ষমতাসীন দল তাঁদের সন্তুষ্ট রাখতে চেষ্টা করেছে। সিপিএম আমলে যে কারণে শিলিগুড়ির বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্যকে কটাক্ষও করা হত। মমতা শিলিগুড়ির সেই অংশকে কাছে টানার চেষ্টা করবেন। অনেকের মতে, মহাকাল মন্দির তৈরির ঘোষণা তারই প্রথম পদক্ষেপ। 

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement