তৃণমূলের ছাত্র সংগঠনের নতুন কমিটি ঘিরে বিতর্ক তুঙ্গে

TMCp

তৃণমূলের ছাত্র সংগঠনের নতুন কমিটি ঘিরে বিতর্ক তুঙ্গে। কারণ, যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সংগঠনের দায়িত্ব পেয়েছেন তাঁরাই। আবার ছাত্র নয় এমন পঞ্চাশ শতাংশের বেশি নেতাকে জেলা সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আর বিতর্কিত ছাত্র নেতাদের এই নয়া দায়িত্ব দেওয়ায় নয়া উচ্চতা পেয়েছে এই বিতর্ক। 

এদিকে সামনেই বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে তৃণমূল কংগ্রেস তাঁদের ছাত্র সংগঠনকে নতুন করে সাজাতে চাইছে। তারই জন্য জেলা সভাপতি স্তরে এই পরিবর্তন। পাশাপাশি রাজ্য কমিটিতেও আনা হয়েছে পরিবর্তন।যে যে নামগুলির সংযোজন হয়েছে তা নিয়ে বিরোধী দলগুলিও প্রশ্ন তুলেছে। কারণ, এমন অনেক ছাত্র নেতার নাম রয়েছে যাঁদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ রয়েছে। অনেকে আবার পড়াশোনার সঙ্গেও যুক্ত নন। যেমন জেলা টিএমসিপি-র সাংগঠনিক নতুন সভাপতিদের নামের তালিকায় বিশেষ জায়গা পেয়েছন যোগেশচন্দ্র চৌধুরী কলেজের বিতর্কিত যুবনেতা সাব্বির আলি। হাজার বিতর্ক পেরিয়ে দলের কাছে নতুন দায়িত্ব পেয়েছেন তিনি। তৃণমূলের প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী, সাব্বির আলি দায়িত্ব পেয়েছেন দক্ষিণ কলকাতার। তাঁকে সেখানকার ছাত্র পরিষদের নতুন সভাপতি হিসাবে ঘোষণা করেছে দল।

এই প্রসঙ্গে উল্লেখ করতেই হয়, চলতি বছরে সরস্বতী পুজো করা নিয়ে বিতর্কের কথা। এই বিতর্ক তৈরি হয়েছিল খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যোগেশচন্দ্র ল’ কলেজে। সরস্বতী পুজোয় বাধা দিয়ে ধর্ষণ ও খুন করে দেওয়ার হুমকি দেন তিনি। এই ঘটনায় চারু মার্কেট থানায় তাঁর বিরুদ্ধে একটি অভিযোগও দায়ের হয়েছিল।

শুধুই সরস্বতী পুজো নয়। এই একটা অভিযোগের পরে প্রকাশ্যে আসে সাব্বিরের নানা কীর্তি। খোদ ওই কলেজের অধ্যক্ষ পঙ্কজ রায় জানিয়েছিলেন, কীভাবে কলেজে ঢুকতে গিয়ে লাগাতর হেনস্থার শিকার হতে হয়েছে তাঁকে। সাব্বিরে ভয়েই কলেজে পা রাখতেন না তিনি। এমন হাজারো বিতর্ক থাকার পরও দক্ষিণ কলকাতার তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নতুন সভাপতি মুখ সাব্বির। এদিকে সাব্বিরের মতোই বিতর্ক ঘিরে ধরেছিল দেবাশিষ দাসকে নিয়েও। এবার সেই জন্যই আর পদ থাকেনি  তাঁর। বিতর্ক নিয়ে দায়িত্ব পেলেন সাব্বির, অন্যদিকে দেবাশিস গেলেন ছিটকে। আর এই দেবাশিস দাস প্রসঙ্গে সামনে আসে মাস কয়েক আগে কাকদ্বীপের ভোটার তালিকায় বাংলাদেশি নাগরিক নিউটন দাসের নাম পাওয়ার ঘটনা।  সেই সময় এই নিউটন দাস ঘনিষ্ঠ বলেই নাম জড়িয়েছিল সুন্দরবন সাংগঠনিক জেলার তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি দেবাশিস দাসের। বিতর্কে নাম জড়ানোর কয়েক মাসের মধ্যেই গেল পদ। ওই সাংগঠনিক জেলার ছাত্র পরিষদের নতুন সভাপতি হন প্রীতম হালদার। এর পাশাপাশি  দক্ষিণ দিনাজপুরে পদোন্নতি পেয়ে নতুন সভাপতি সৃঞ্জয় স্যান্যাল। তাঁর বিরুদ্ধেই বালুরঘাট থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিল বিজেপি।

তবে এ ব্যাপারে তৃণমূল কংগ্রেস মনে করেছে, এই সকল ছাত্র নেতারা লড়াই করতে পারবে বিজেপির বিরুদ্ধে। সেই কারণে পদন্নোতি। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য জানান, ‘সাব্বির ভীষণভাবে পলিটিক্যাল ডায়নামিক একটা ছেলে। ওর সকলের একটা যোগাযোগ রয়েছে। সাব্বির বা সৃঞ্জনকে আসলে বিজেপি ভয় পেয়েছে। সেই কারণেই এদের সম্বন্ধে অভিযোগ করছে। আর মানুষদের মধ্যে এদের কোনও গ্রহণযোগ্যতা নেই। আর যাঁদের কথা বলছেন তাঁরা সারা বছর ছাত্রদের পাশে থাকে। বিপুল জনপ্রিয়তা আছে। আর দল দেখেছে যে এদের বিরুদ্ধে অভিযোগের কোনও সত্যতা নেই।’ তবে এ ব্যাপারে শাসকদলকে বিদ্ধ করতে ছাড়েননি বিজেপি মুখপাত্র দেবজিৎ সরকার। বলেন, ‘এটা তো তৃণমূলের কালচার। ওরা যেটা করছে সেটা তো সবাই জানে। যে যত বদমাসি ভাল করতে পারবে সে তত উপরে যাবে।’

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement