গণধর্ষণের ঘটনা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ শুভেন্দুর 

IMG-20251013-WA0129

সপ্তর্ষি সিংহ

 দুর্গাপুরে ডাক্তারি ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে সোমবার সকাল থেকেই দুর্গাপুর সিটি সেন্টারের কাছে বিক্ষোভ দেখান বিজেপির নেতা-কর্মীরা। বিক্ষোভের মাঝেই দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপি বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের সঙ্গে এক পুলিশ অফিসারের বচসা বাধে। এদিন বিজেপির বিক্ষোভে অংশ নেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর সঙ্গেই ছিলেন ‘নির্যাতিতা’র বাবা। দুর্গাপুর গণধর্ষণকাণ্ডে কড়া ভাষায় মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করেন শুভেন্দু অধিকারী।দুর্গাপুরের ঘটনায় তৃণমূল-যোগ রয়েছে বলে অভিযোগ করেন শুভেন্দু। তাঁর দাবি, এক অভিযুক্তের বাবা তৃণমূলের ক্যাডার। শুভেন্দু বলেন, মুখ্যমন্ত্রী দুর্গাপুরে না আসায় তিনি লজ্জিত। নির্যাতিতার চিকিৎসা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন বিরোধী দলনেতা। অভিযোগ করেন,তিনি চিকিৎসকদের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তাঁদের মুখ খুলতে নিষেধ করা হয়েছে। নির্যাতিতাকে এ রাজ্যে রাখতে পরিবার রাজি নয় বলেও জানান বিরোধী দলনেতা। তিনি বলেন, ‘‘এ সব কর্মসূচির জন্য পুলিশের অনুমতির প্রয়োজন হয় না। ক্ষমতা থাকলে একটা চেয়ারও সরিয়ে দেখান।’’ তাঁর বক্তব্য, “এই ঘটনার সঙ্গে এতদিন তো অনেক তত্ত্ব উঠে এসেছিল, আজকে নতুন একটি তত্ত্ব এল, এই গণধর্ষণের সঙ্গে সরাসরি তৃণমূল কংগ্রেসের পদাধিকারী জড়িত। শাসক যেখানে শোষক, সেখানে আইনের শাসন ও বিচার পাওয়ার কোনও জায়গা নেই।”

তিনি আরও বলেন, মোট চারজন গ্রেফতার হয়েছে। আজকে যে গ্রেফতার হয়েছে, নাসিরউদ্দিন, তিনি দুর্গাপুর পুরনিগমের অস্থায়ী কর্মী। তৃণমূলের ক্যাডার। ওনার বাবা পার্টির পোর্ট ফোলিও হোল্ডার। এই ঘটনার সঙ্গে এতদিন অনেক তত্ত্ব চলছিল, আজকে আরেকটা নতুন তত্ত্ব যুক্ত হল যে, এই গণধর্ষণের সঙ্গে সরাসরি তৃণমূল কংগ্রেসের পদাধিকারিই যুক্ত।’ তাঁর বক্তব্য, “আমি কালকে আমার সামাজিক মাধ্যমে তিন জনের নাম পরিচয় দিয়েছিলাম। কিন্তু এখনও একজন অধরা। সেই অধরাকেও চাইছি। পুলিশকেই গ্রেফতার করতে হবে।” যদিও পশ্চিম বর্ধমান তৃণমূলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী জানিয়েছেন, এই অভিযোগ সামনে আসার পরেই প্রথম দিন থেকেই রাজ্যের দুই মন্ত্রী মলয় ঘটক এবং প্রদীপ মজুমদার পুলিশের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন এবং পরিস্থিতির উপরে নজর রাখছেন। মুখ্যমন্ত্রী উত্তরবঙ্গে যাওয়ার আগে জানিয়েছিলেন, কোনও অপরাধীকে রেয়াত করা হবে না। যে কোনও ধরনের অপরাধের ক্ষেত্রে জ়িরো টলারেন্স নীতি নেয় রাজ্য। গত শুক্রবার দুর্গাপুরের  বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়া তরুণী রাত ৯টা নাগাদ নিজের এক সহপাঠীর সঙ্গে কলেজ ক্যাম্পাসের বাইরে বেরিয়েছিলেন। সেই সময়ে তাঁকে টেনে হিঁচড়ে স্থানীয় জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করার অভিযোগ ওঠে। পাঁচ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন ওই তরুণী। সোমবার পর্যন্ত মূল পাঁচ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একই সঙ্গে আটক করা হয়েছে ওই তরুণীর সহপাঠীকে। তাঁর ভূমিকাও অত্যন্ত সন্দেহজনক বলে প্রাথমিক ভাবে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। সোমবার দুর্গাপুরে যান রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সোমবার দুপুর আড়াইটের সময়ে তিনি হাওড়া স্টেশন থেকে গাড়িতে করে দুর্গাপুরের উদ্দেশে রওনা দেন। এ দিন স্টেশনে দাঁড়িয়ে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ‘ঘটনা সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়েছি। যাঁরা এই কাজ করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আগে আমি গিয়ে নির্যাতিতার সঙ্গে কথা বলব। তার আগে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না।’ 

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement