‘ইন্ডিয়ান আর্মড ফোর্স ভীষণ ভিশন ২০৪৭’-এর লক্ষ্য স্থির করে গেলেন মোদি

IMG-20250915-WA0157

সেনার পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ড সদর দফতর কলকাতার বিজয় দুর্গে অর্থাত ফোর্ট উইলিয়াম সোমবার ১৬তম সম্মিলিত সেনা সম্মেলন (সিসিসি) উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ‘অপারেশন সিন্দুরে’র পর এটিই প্রথম সম্মিলিত সেনা সম্মেলন। শেষ সম্মলিত সেনা সম্মলেন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০২৩ সালে ভোপালে।
সূত্রের খবর, সেনার আধুনিকীকরণ থেকে সংস্কারের কথা এদিন শোনা যায় মোদির মুখে। সঙ্গে লক্ষ্য স্থির হয়েছে ‘ইন্ডিয়ান আর্মড ফোর্স ভীষণ ভিশন ২০৪৭’-র।
এদিকে ফোর্ট উইলিয়াম সূত্রে খবর, ভাষণে মোদীর মুখে শোনা গিয়েছে সেনার প্রশংসা। অপারেশন সিঁদুরের সময় যেভাবে পাকিস্তানি সন্ত্রাসবাদীদের নাস্তানাবুদ করেছে ভারতীয় সশস্ত্রবাহিনী, তাতে খুশি প্রধানমন্ত্রী। সেনার রণকৌশল প্রসন্ন করেছে তাঁকে। তবে এই প্রশংসা মোদীর ভাষণের একটা ছোট্ট অংশ। আত্মমুগ্ধতা নয়, বরং পরিবর্তনেই জোর দিয়েছেন তিনি। তাঁর গোটা ভাষণ জুড়ে জায়গা পেয়েছে সেনাবাহিনীর আধুনিকীকরণ, সংস্কার এবং রণকৌশলে আমূল উন্নয়নের কথা।
সেনার আধুনিকীকরণ যাতে কোনও ভাবে শ্লথ না হয়ে পড়ে সেনাকর্তাদের সেই দিকে মন দিতে বলেছেন তিনি। নির্দেশ দিয়েছেন, ভারতীয় সেনার কাছে যে পরিমাণে যুদ্ধবিমান এবং যুদ্ধজাহাজ রয়েছে, তা বৃদ্ধিরও। পাশাপাশি, ড্রোন প্রযুক্তি ও আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর কথাও উঠে এসেছে তাঁর ভাষণে।
পাশাপাশি সেনার সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ বৈঠকও করেন প্রধানমন্ত্রী৷ ছিলেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংও৷ নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে পাকিস্তানের ভিতরে ঢুকে সন্ত্রাসবাদীদের ঘাঁটি ধ্বংস করার জন্যও সেনার প্রশংসাও করেন প্রধানমন্ত্রী। এদিকে এর পাশাপাশি প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘একাধিক কৌশলগত বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে৷ এর মধ্যে রয়েছে বাহিনী আধুনিকীকরণ, যৌথতা, সংহতকরণ এবং বহু-ক্ষেত্রে যুদ্ধের জন্য কার্যকরী প্রস্তুতি বৃদ্ধি।’
এদিকে এই বৈঠক সম্পর্কে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের এক আধিকারিক জানান, ‘সম্মেলনের কেন্দ্রবিন্দু সশস্ত্র বাহিনীর প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার, সংহতিকরণ এবং প্রযুক্তিগত আধুনিকীকরণে বিশেষ জোর দেওয়া৷ একই সঙ্গে শীর্ষস্তরের একাধিক ক্ষেত্রে অপারেশনাল প্রস্তুতির উপরও জোর দেওয়া হবে৷’ সঙ্গে এও জানান, এই সম্মেলন সেনার তিন বাহিনীর সর্বোচ্চ চিন্তাভাবনামূলক ফোরাম, যা দেশের শীর্ষ অসামরিক ও সামরিক নেতৃত্বকে ধারণাগত ও কৌশলগত স্তরে মতামত বিনিময়ের জন্য আয়োজন করা হয়েছে৷ অপারেশন সিঁদুরের প্রেক্ষাপটে, এই বছরের সম্মেলন যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ৷
এদিকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফ থেকে যে বিবৃতি দেওয়া হয় সেখানে বলা হয়েছে, ‘তিনদিনের এই সম্মেলন সশস্ত্র বাহিনীকে আরও শক্তিশালী করার চেষ্টা করা হবে৷ যা ক্রমবর্ধমান জটিল ভূ-কৌশলগত পরিস্থিতিতে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়৷’
এই প্রসঙ্গে একটা কথা বলে রাখা শ্রেয়, গত পাঁচ মাসের মধ্যে এটি মোদির বাংলায় চতুর্থ এবং এক মাসের মধ্যে দ্বিতীয় সফর। প্রধানমন্ত্রী রবিবার সন্ধ্যায় অসম থেকে কলকাতায় পৌঁছন। এরপর রাতে রাজভবনে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী৷
সোমবার, তিনি রাজভবন থেকে সকাল সাড়ে ন’টার দিকে বিজয় দুর্গে পৌঁছন৷
মোদি সেনার সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রায় চার ঘন্টা সময় কাটান। এরপর দুপুর দেড়টা নাগাদ কলকাতা রেসকোর্স থেকে হেলিকপ্টারে কলকাতা বিমানবন্দর এবং সেখান থেকে বিহারের পূর্ণিয়ায় যাওয়ার জন্য রওনা হন৷
সোমবারের এই সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল, সিডিএস জেনারেল অনিল চৌহান, প্রতিরক্ষা সচিব রাজেশ কুমার সিং এবং সেনাবাহিনী, বিমান বাহিনী এবং নৌবাহিনীর শীর্ষ কমান্ডাররা।

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement