ছাত্রীমৃত্যুর ঘটনার পর ফের নিরাপত্তা নিয়ে কড়াকড়ি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। আবারও নতুন করে একগুচ্ছ নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে। যাদবপুরের ক্যাম্পাসের মধ্যে সর্বসাধারণের মর্নিং ওয়াক ও ইভিনিং ওয়াকে জারি হল নিষেধাজ্ঞা। এর পাশাপাশি নিষেধাজ্ঞা জারি মদ, গাঁজা নিয়ে ক্যাম্পাসে ঢোকার উপরও। বৃহস্পতিবার রাতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ নম্বর গেটের কাছে থাকা ঝিলে পড়ে যান তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রী। পরে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে বাঁচানো যায়নি। ছাত্রীর মৃত্যুর পর একগুচ্ছ প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের মধ্যে মদ, গাঁজার আসর নিয়ে আগেও প্রশ্ন উঠেছে। সেই প্রশ্ন এবারও উঠেছে। এদিকে সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ে ড্রামা ক্লাবের আয়োজিত একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলছিল পার্কিং লটে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ওই অনুষ্ঠানের সময় রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরেই মদের আসর বসে। আর সামগ্রিক এই ঘটনায় ক্যাম্পাসের মধ্যে নিরাপত্তা নিয়ে তৈরি হয়েছে বড় এক প্রশ্নচিহ্ন। এরপরই নিরাপত্তা আঁটসাঁট করতে যে একগুচ্ছ নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে তাতে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ইস্যু করা পার্কিং স্টিকার থাকলে দু চাকা ও চার চাকা গাড়িকে ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হবে। ওই পার্কিং স্টিকার না থাকলে প্রবেশপথে সেই গাড়ির যথাযথ তথ্য নিয়ে তবেই বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ঢুকতে দেওয়া হবে। এর পাশাপাশি ক্যাম্পাসের মধ্যে মদ, গাঁজা বন্ধেও ফের কড়া অবস্থানের কথা জানাল কর্তৃপক্ষ। এই প্রসঙ্গে নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, ক্যাম্পাসের মধ্যে মাদক সেবনের সময় ধরা পড়লে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অনেক সাধারণ মানুষ সকাল ও সন্ধেয় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে হাঁটেন। বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে সর্বসাধারণের জন্য মর্নিং ও ইভিনিং ওয়ার্ক বন্ধের নির্দেশিকা জারি করা হল।পাশাপাশি এও জানানো হয়েছে, সন্ধে সাতটার পর কোনও কারণে ক্যাম্পাসে ঢুকতে গেলে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়া পরিচয়পত্র নিয়ে যেতে হবে। না হলে ঢুকতে দেওয়া হবে না বলে নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে। কারও কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয়পত্র না থাকলে তাঁকে প্রবেশপথে নিজের পরিচয়পত্র দেখাতে হবে। এবং তিনি কার সঙ্গে দেখা করতে চান, তাও জানাতে হবে।
এর আগেও নিরাপত্তার কড়াকড়ি করে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল। অভিযোগ, সেইসব নির্দেশিকা খাতায় কলমেই রয়ে গিয়েছে। বাস্তবে তার প্রতিফলন দেখা যায়নি। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহউপাচার্য অমিতাভ দত্ত স্বীকার করেন, ‘নিরাপত্তার কিছু ঘাটতি রয়েছে। নিরাপত্তারক্ষীর সংখ্যা কিছুটা কম। আমরা সেটা সরকারকে জানিয়েছি।’ প্রশ্ন উঠছে, এবার কি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে নির্দেশিকাগুলির প্রতিফলন দেখা যাবে?