ভারত-পাক মহারণ

IMG-20250913-WA0149

এশিয়া কাপে মহারণ। দুবাই স্টেডিয়ামে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে মুখোমুখি হবে ভারত ও পাকিস্তান। দুই দলই জয় পেয়েছে নিজেদের প্রথম ম্যাচে। হংকংকে নিয়ে কার্যত ছেলেখেলা করেছে ভারত। অন্য দিকে, ওমানের বিরুদ্ধে জয় পেয়েছে পাকিস্তান। তাই রবিবার হাড্ডাহাড্ডি লড়াই দেখার আশায় ক্রিকেটপ্রমীরা। কিন্তু বোর্ডের আধিকারিকরা সেই ম্যাচে উপস্থিত থাকছেন না বলে সূত্রে খবর। এদিকে গত ফেব্রুয়ারিতে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারত–পাক ম্যাচে কিন্তু বিসিসিআইয়ের অধিকাংশ আধিকারিক ও অন্যান্য রাজ্য সংস্থার কর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সেবারও ম্যাচ হয়েছিল দুবাইয়ে। কিন্তু এবার এখনও অবধি সেরকম কোনও খবর নেই যে বোর্ড কর্তারা দুবাই যাচ্ছেন।
ভারত এবার এশিয়া কাপের আয়োজক। কিন্তু পহেলগাঁও হামলা ও অপারেশন ‘সিঁদুর’ এর পর দুই দেশই আর পরস্পরের দেশে খেলতে যেতে রাজি নয়। সেই কারণের জন্য সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে আয়োজিত হচ্ছে টুর্নামেন্ট। এই পরিস্থিতিতে ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, এখনও অবধি নাকি ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের অর্থাত্ বিসিসিআইয়ের কোনও কর্তা দুবাই পৌঁছননি। শোনা যাচ্ছে, বোর্ডের নাকি মাত্র এক জনই আধিকারিক রবিবার স্টেডিয়ামে উপস্থিত থাকবেন। এই প্রসঙ্গে একচটা কথা বলতেই হবে, ভারতের অধিকাংশ সমর্থকই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে খেলতে ইচ্ছুক নন। কিছুদিন আগেই লেজেন্ডস লিগে ভারতীয় লেজেন্ডসরা পাক লেজেন্ডসদের বিরুদ্ধে খেলতে চায়নি। যা নিয়ে ব্যাপক বিতর্কও হয়। এদিকে, পাক ম্যাচের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে টিম ইন্ডিয়া। রবিবারের ম্যাচের আগে ভারতীয় দলের ফিল্ডিং অনুশীলনে দেখা গেল আর এক নয়া পরীক্ষা। শুক্রবার ফিল্ডিং কোচ টি দিলীপের অধীনে সেই নতুন পরীক্ষা দিলেন হার্দিক পাণ্ডিয়া, রিঙ্কু সিং, শুভমান গিলরা। যা অনেকটা ফুটবলের গোলকিপারের অনুশীলনের মতো। তবে এদিনের এই হাইভোল্টেজ ম্যাচে এই প্রথমবার এশিয়া কাপে ভারত ও পাকিস্তানকে নেতৃত্ব দিতে নেমেছেন দুই দলের অধিনায়করা। সূর্যকুমার যাদব ও সলমন আলি আঘা অতীতে কোনও দিন মেগা ম্যাচে দলকে নেতৃত্ব দেননি, এ বার সেটা হবে। ফলে তাঁদের উপরেও চাপ থাকবে। এই পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ দুবাইয়ের পিচ।
এই ম্যাচে পিচ কেমন হবে সেই দিকে নজর থাকবে সকলের। দুবাইয়ের পিচের চরিত্রে এ বার বদল এসেছে। রবিবারের আগে পিচে বদল আনবে কি না তা নিয়েও জল্পনা তুঙ্গে। তবে দুবাইতে সাধারণত বোলারদের দাপট দেখা যায়। শুরুর ওভারগুলিতে পিচ পেসারদের সাহায্য করে। ম্যাচ যত এগোবে স্পিনাররা তত সাহায্য পাবেন। রাতের দিকে শিশির বড় ভূমিকা নিতে পারে। ফলে পরে যেই দল বোলিং করবে তাদের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে বলেই মনে করছেন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা। এদিকে পরিসংখ্যান বলছে, দুবাইয়ের এখনও পর্যন্ত মোট ১১১টি ম্যাচ আয়োজন করেছে। এর মধ্যে ৫১টি ম্যাচ জিতেছে প্রথমে ব্যাট করা দল। রান তাড়া করা দল ৫৯টা ম্যাচ জিতেছে। অর্থাৎ, দুবাইয়ে টস জিতে প্রথমে বোলিং করা দল লাভজনক হয়েছে। প্রথম ইনিংসে গড় স্কোর ১৩৯, যেখানে দ্বিতীয় ইনিংসে গড় স্কোর ১২২। এই মাঠে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড রয়েছে ভারতের ঝুলিতে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ভারত ২০ ওভারে দুই উইকেট হারিয়ে করেছিল ২১২ রান। গতবারের চ্যাম্পিয়ন দল ভারত। সেখানে পাকিস্তান ধারেভারে অনেকটাই পিছিয়ে। তবে সম্প্রতি ত্রিদেশীয় সিরিজ জেতায় সলমন আলি আঘারা প্রস্তুত। কিন্তু সেটা কি সূর্যকুমারদের হারানোর জন্য যথেষ্ট? দু’দলই প্রথম ম্যাচ জিতেছে। হাইভোল্টেজ ম্যাচে কোন দল জিতবে, তা ঠিক করে দেবে এই পাঁচ খণ্ড লড়াই। ভারতীয় সহ-অধিনায়কের দলে ঢোকা ও দায়িত্ব পাওয়া নিয়ে বিতর্ক হয়েছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে দারুণ ছন্দে আছেন তিনি। আইপিএল, ইংল্যান্ড সিরিজের পর এবার এশিয়া কাপেও আগুন ঝরাতে তৈরি গিল। সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর বিরুদ্ধে ৯ বলে ২০ রান করে তার ইঙ্গিতও দিয়ে রেখেছেন। অন্যদিকে শাহিন আফ্রিদি ভালো ফর্মে ছিলেন না। কিন্তু ত্রিদেশীয় সিরিজে ভরসা দিয়েছেন। ক্রমশ ফর্মে ফিরছেন। ওমানের বিরুদ্ধে ২০ রান দিয়ে ১ উইকেট পেয়েছেন। টি-টোয়েন্টিতে ভারতের আশাভরসা হয়ে উঠতে পারেন সূর্যকুমার। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফর্মে ছিলেন না ভারতের অধিনায়ক। তবে ফর্মে ফেরা সময়ের অপেক্ষা মাত্র। ওপেনিংয়ে অভিষেক ও গিলের পর সূর্য ঝড় তুলতে প্রস্তুত। আমিরশাহীর বিরুদ্ধে ২ বলে ৭ রান করেন। আবার পাক স্পিনের সবচেয়ে বড় ভরসা আবরার আহমেদ। ওমানের বিরুদ্ধে ১২ রানে একটি উইকেট পান। বিশেষ করে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে যেভাবে বিপাকে পড়েছিলেন, তাতে কামব্যাকে মরিয়া থাকবেন তিনি। শেষ তিন ম্যাচে তুলেছেন ৭ উইকেট। হার্দিক পাণ্ডিয়া যে কখন কী করে দিতে পারে, তা কে বলতে পারে? আর ভারতীয় অলরাউন্ডার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সবসময়ই নিজের সেরাটা দেন। আমিরশাহীর বিরুদ্ধে অবশ্য ব্যাটের সুযোগ পাননি। তবে বছরের শুরুতে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভালো ছন্দে ছিলেন। আবার পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় শক্তি সাইম আয়ুব। ব্যাটে-বলে ম্যাচ ঘুরিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন। ওমানের বিরুদ্ধে ব্যাটে রান পাননি। তবে ৮ রান দিয়ে ২টি উইকেট তুলেছেন। দুবাইয়ের পিচে ভারতের সবচেয়ে বড় শক্তি হতে পারে বোলিং।

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement