সর্বোচ্চ আদালতে খারিজ এসএসসি চাকরিপ্রার্থী বিকাশ পাত্রর আবেদন। বিচারপতি সঞ্জয় কুমার এবং বিচারপতি অলোক আরাধের বেঞ্চ জানায়, ‘আপনি অযোগ্য। আমাদের কিছু করার নেই।’
টাকা ফেরতের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে কিনা তা নিয়েও জানতে চান বিচারপতিরা। এই প্রসঙ্গে এসএসসির আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় আদালতকে জানান, ৭ তারিখের পরীক্ষা সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এরপরই বিচারপতিরা প্রশ্ন করেন, ‘আপনাদের দেওয়া তালিকায় স্বচ্ছতা নেই কেন? এত কনফিউশন কেন হচ্ছে?’ প্রসঙ্গত, এসএসসি-র পরপর মামলায় বিরক্ত সুপ্রিম কোর্টও। দাগিদের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টকে তাও জানিয়েছে এসএসসি। এসএসসি-র আইনজীবী জানান, দাগি অযোগ্যদের অ্যাডমিট কার্ড বাতিল করা হয়েছিল।
এসএসসির উদ্দেশ্যে এর আগে এক মামলায় বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের স্পষ্ট প্রশ্ন ছিল, সব ‘দাগি অযোগ্য’দের বাদ দেওয়া হয়েছে তো? এসএসসির আইনজীবী জানান, বাদ দেওয়া হয়েছে।
এসএসসির বিজ্ঞপ্তি চ্যালেঞ্জ নিয়ে করা মামলা খারিজও করে দিয়েছিল আদালত। সুপ্রিম কোর্ট মন্তব্য করেছিল, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় এসএসসি-র নীতিগত সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ না। এবার আরও এক মামলায় খারিজ হয়ে গেল চাকরিপ্রার্থীর আবেদন।
তবে এদিন টাকা ফেরানোর ইস্যুতে সুপ্রিম কোর্টে প্রশ্নের মুখে স্কুল সার্ভিস কমিশন। দাগিদের থেকে টাকা ফেরত নেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে শীর্ষ আদালত। বৃহস্পতিবার এ ব্যাপারে শীর্ষ আদালত স্পষ্ট জানতে চায়, টাকা ফেরতের প্রক্রিয়া কত দূর এগিয়েছে। উত্তরে রাজ্যের তরফ থেকে জানানো হয়,টাকা ফেরতের প্রক্রিয়া শুরুই হয়নি। সূত্রের খবর, শুনানিতে রাজ্যের আইনজীবীর উপর ক্ষোভ প্রকাশ করে শীর্ষ আদালত। এরপরই ওই টাকা কখন কীভাবে ফেরতের প্রক্রিয়া শুরু হবে তা জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয় দেশের শীর্ষ আদালতের তরফে।
এদিকে কলকাতা হাইকোর্টের স্পষ্ট নির্দেশ ছিল যাঁরা দাগি, যাঁরা দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে চাকরি পেয়েছেন তাঁদের বেতন দ্রুত সুদ সমেত ফেরত দিতে হবে। এই নির্দেশ বলবৎ থাকে সুপ্রিম কোর্টেও। কিন্তু তারপরেও জেলাশাসকদের মাধ্যমে টাকা ফেরতের যে প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা ছিল তা শুরু হয়নি। এবার এই ইস্যুতেই সুপ্রিম কোর্টে ভৎর্সনার মুখে পড়ল রাজ্য সরকার। রাজ্যের আইনজীবীকে উদ্দেশ্য করে সুপ্রিম কোর্ট পরিষ্কার জানিয়ে দেয় কেন টাকা ফেরতের প্রক্রিয়া শুরু হয়নি তার ব্যাখ্যা দিতে হবে।
একইসঙ্গে এসএসসির নতুন পরীক্ষা নিয়েও এদিন দীর্ঘক্ষণ কথা হয় শুনানিতে। ইতিমধ্যেই গত রবিবার এসএসসি-র নবম-দশমের পরীক্ষা হয়েছে। এরপর আগামী রবিবার রয়েছে একাদশ দ্বাদশের পরীক্ষা। এই পরীক্ষাতেও দাগি-যোগ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের ভৎর্সনার মুখে পড়েছে রাজ্য সরকার। বেশ কিছু অযোগ্য প্রার্থীর পরীক্ষায় বসার অভিযোগ রয়েছে। তা নিয়েও রাজ্যের কাছে ব্যাখ্যাও চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।