একাদশ-দ্বাদশ নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পার্থ সহ  ২১ জনের বিরুদ্ধে অবশেষে চার্জ গঠন

IMG-20250903-WA0109

এসএসসি-র একাদশ-দ্বাদশ নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় -সহ মোট ২১ জনের বিরুদ্ধে অবশেষে চার্জ গঠন। এবার শুরু হবে বিচারপ্রক্রিয়া। নিয়োগ দুর্নীতিতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের দায়ের করা কোনও মামলায় এই প্রথমবার চার্জ গঠন। যার শুনানিও শুরু হবে কয়েকদিনের মধ্য়েই। বৃহস্পতিবার, আলিপুরে বিশেষ সিবিআই আদালতে এই চার্জ গঠন করা হয়। এদিন নিম্ন আদালতের বিচারক বিশ্বরূপ শেঠ এই চার্জ গঠন করেন। আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র (১২০-র-খ), তথ‍্যপ্রমাণ আড়াল করা (২০১),  প্রতারণা (৪২০), নথি জাল (৪৬৭), জালিয়াতি (৪৬৮), সজ্ঞানে নথি জাল (৪৭১), এই কয়েকটি ধারায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়েছে।

 এদিকে সূত্রে খবর, একাদশ-দ্বাদশের নিয়োগ মামলায় গঠিত এই চার্জে রয়েছে বাছা বাছা নাম। শুধুই প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী নন, এই মামলার বিচারপ্রক্রিয়ার জন্য গঠিত চার্জে রয়েছেন প্রাক্তন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী, তাঁর মেয়ে, এসএসসি-র উপদেষ্টা কমিটির প্রধান-সহ মোট ২১ জন।

মামলাপত্র অনুযায়ী, নাম রয়েছে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ  চট্টোপাধ্যায়, প্রাক্তন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারী, তাঁর কন্যা অঙ্কিতা অধিকারী, এসএসসি উপদেষ্টা কমিটির প্রধান শান্তিপ্রসাদ সিনহা, এসএসসির প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্য, সমরজিৎ আচার্য, নিয়োগ কর্তা কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়, অশোক সাহা, এসএসসি আধিকারিক পর্ণা বসু-সহ মোট ২১ জনের। নাম রয়েছে বেশ কিছু এজেন্টের। নাম রয়েছে নাইসা আধিকারিক পঙ্কজ বনশল, নীলাদ্রি দাসেরও।

এদিকে বৃহস্পতিবার আদালত কক্ষে চার্জ গঠনের শুনানি চলাকালীন মামলা থেকে অব্যাহতি চান প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ভার্চুয়ালিই আদালতে হাজিরা দেন তিনি। এদিন তাঁর চোখে ছিল কালো চশমা। সূত্রের খবর, বুধবারই শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে চোখে অপারেশন করিয়েছেন নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জেলবন্দি প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। ভার্চুয়ালি শুনানিতে যোগ দিয়েই পার্থ নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেন। তবে তিনি যে নির্দোষ এই দাবি পার্থ প্রথম করছেন না। বহুবার করেছেন। আদালত কক্ষেই করেছেন। একই ভাবে তাঁকে এই দাবি করতে দেখা যায় বৃহস্পতিবারও। 

এদিন তিনি আদালতের কাছে আর্জি জানানোর পাশাপাশি এও বলেন, ‘আমি শিক্ষামন্ত্রী ছিলাম। আমি নির্দোষ। যারা বলছেন, তারা সম্পূর্ণ অসৎ কথা বলছেন। আমি সম্পূর্ণভাবে নির্দোষ।’ এরপরেই ইঙ্গিতে কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় ও সুবীরেশ ভট্টাচার্যের দিকে দায় ঠেলে দিতে দেখা যায় তাঁকে। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় এবং এসএসসির প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্যের ভূমিকা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠেছিল। বর্তমানে তারা জেলে। এদিন বিচারকের মুখেও শোনা যায় তাদের কথা। শোনা যায়, এসএসসি উপদেষ্টা কমিটির প্রধান শান্তিপ্রসাদ সিনহার কথাও।

পার্থর উদ্দেশে বিচারক বিশ্বরূপ শেঠ বলেন, ‘আপনি এসপি সিনহা, কল্যাণময়দের পদে বসিয়েছিলেন।’ যার পাল্টা পার্থ বলেন, ‘আমি নির্দোষ। আমার একটা সম্মান রয়েছে। আমি ২৫ বছর ধরে বিধায়ক। আমাকে সাড়ে তিন বছর ধরে আটকে রাখা হয়েছে। এবার আমাকে মুক্তি দিন। এসএসসি একটি সম্পূর্ণ স্বশাসিত সংস্থা। ওরা নিজেরা নিয়োগ করেছে। আমি মন্ত্রী হওয়ার আগে থেকেই সুবীরেশ চেয়ারম্যান ছিল। এমনকি, আমি মন্ত্রী হওয়ার আগেই কল‍্যান মধ‍্যশিক্ষা পরিষদে ছিলেন। আমি নির্দোষ।’ সবশেষে পার্থ অব্যহতি চাইলেও, তিনি তা পাননি। পার্থর আর্জি খারিজ করে চার্জ তাকে যুক্ত করে আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালত।

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement