ছাত্র-যুবদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে অগ্নিগর্ভ নেপাল। পড়শি দেশের পরিস্থতি নিয়ে সতর্ক নয়াদিল্লি।নেপালে বসবাস করা ভারতীয়দের সাবধানে থাকার পরামর্শ দিয়েছে কেন্দ্র। মঙ্গলবার সকালে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে এই বিষয়ে বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। সোমবারের ঘটনা নিয়ে উদ্বেগপ্রকাশ করেছে নয়াদিল্লি। একই সঙ্গে ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমস্যার সমাধান হবে বলে ভারত আশাবাদী।
নেপালে থাকলে নিজেদের ঘরে থাকার পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি চালু করা হয়েছে হেল্পলাইন নম্বরও। যে কোনও পরিস্থিতিতে +৯৭৭-৯৮০৮৬০২৮৮১ ও +৯৭৭-৯৮১০৩২৬১২৪ নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। হোয়াটসঅ্যাপও করা যাবে এই নম্বরে। কাঠমান্ডুতে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাসের হেল্পলাইন নম্বর এগুলি। একই সঙ্গে ভারত সরকার অ্যাডভাইজারি জারি করেছে, এই পরিস্থিতিতে সে দেশে না যাওয়াই সমীচীন। বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “আমরা গত কাল থেকে নেপালের পরিস্থিতির উপর নিবিড় ভাবে নজর রেখেছি। বহু তরতাজা প্রাণের মৃত্যুতে আমরা গভীর ভাবে দুঃখিত। মৃতদের পরিবারের প্রতি আমরা সমবেদনা জানাচ্ছি। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।” নেপালে বসবাসকারী ভারতীয়দের উদ্দেশে নয়াদিল্লির বার্তায় বলা হয়েছে, “কর্তৃপক্ষ কাঠমান্ডু এবং আরও কয়েকটি শহরে কার্ফু জারি করেছেন। নেপালে থাকা ভারতীয় নাগরিকদের সাবধানে থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে এবং নেপাল প্রশাসনের নির্দেশ মেনে চলতে বলা হচ্ছে।” কড়া সতর্কতা জারি হয়েছে ভারত-নেপাল সীমান্তেও। জোরদার করা হয়েছে নজরদারি।
নেপালের সঙ্গে ভারতের প্রায় ১,৭৫১ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। ভারতের উত্তরাখণ্ড, বিহার, উত্তরপ্রদেশ, সিকিম এবং পশ্চিমবঙ্গ-সহ পাঁচ রাজ্য নেপালের সীমান্তবর্তী। নেপালের বর্তমান পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে পাঁচ রাজ্যেই সীমান্তে তৎপরতা বেড়েছে। বিহারের নেপাল সীমান্তবর্তী সাতটি জেলায় নজরদারি বাড়িয়েছে এসএসবি এবং বিহার পুলিশ। পশ্চিম চম্পারণ, সীতামড়ী, মধুবনী, আরারিয়া, সুপৌল, পূর্ব চম্পারণ এবং কিষাণগঞ্জে টহলদারি বাড়ানো হয়েছে। পাশাপাশি, আশপাশের এলাকায় সন্দেহজনক কাউকে দেখলেই পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে তল্লাশি করা হচ্ছে। কোনও ভাবেই যাতে নেপালের আন্দোলনের আঁচ এ দেশে না পড়ে, সে জন্য কেন্দ্র ও রাজ্যের তরফে একাধিক ব্যবস্থাপনা নেওয়া হয়েছে। ভারতের তরফে প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে বেশির ভাগ সীমান্তে বড় গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শিলিগুড়ির পানিট্যাঙ্কিতেও থমথমে পরিবেশ। মঙ্গলবার সকাল থেকেই সেখানে নাকাতল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। প্রতিটি গাড়ি থামিয়ে তল্লাশি করা হচ্ছে। নামানো হয়েছে ডগ স্কোয়াড। নেপালে আটকে থাকা ভারতীয়দের জন্য ২৪ ঘণ্টা সচল কন্ট্রোল রুমও চালু করেছে দার্জিলিং জেলা পুলিশ।