প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় রাজ্যের কারামন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহাকে একাধিকবার তলব করা হয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের তরফ থেকে।তবে সে তলব তিনি এড়িয়ে গিয়েছেন। এরপর গতমাসে আচমকা ইডি দফতরে গেলেও তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল কি না জানা যায়নি। অবশেষে শনিবার প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইডি আদালতে আত্মসমর্পণ করতে দেখা গেল তাঁকে। এদিন এই আত্মসমর্পণের পর ১০ হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে তিনি জামিনও পান। জামিন দিলেও আদালত নির্দেশ দিয়েছে, মামলার পরবর্তী শুনানির আগে কলকাতা ও বোলপুরের বাইরে যেতে পারবেন না রাজ্যের কারামন্ত্রী।ইডি সূত্রে খবর, প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে নেমে প্রাক্তন তৃণমূল যুবনেতা কুন্তল ঘোষের বাড়ি থেকে চাকরিপ্রার্থীদের তালিকা উদ্ধার হয়। ১০০ জন চাকরিপ্রার্থীর নামের তালিকা পায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সূত্রের খবর, ইডির জেরায় কুন্তল দাবি করেন, ওই তালিকা পাঠিয়েছিলেন চন্দ্রনাথ। রাজ্যের কারামন্ত্রীর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে নগদ ৪১ লক্ষ টাকা উদ্ধার করেছিল ইডি। তাঁর বিরুদ্ধে চার্জশিটও জমা পড়েছে। এই আবহে এদিন ইডি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন চন্দ্রনাথ। ইডি হেফাজতে চেয়ে আবেদন করলেও শর্তসাপেক্ষে জামিন পান রাজ্যের কারামন্ত্রী।ইডির আইনজীবী ধীরাজ দ্বিবেদী বলেন, ‘আমরা হেফাজতে চেয়ে আবেদন করেছি। ৭ দিনের জন্য হেফাজতে চেয়েছিলাম। ১৬ সেপ্টেম্বর শুনানি হবে। তার আগে কলকাতা এবং নিজের বিধানসভা কেন্দ্র বোলপুরের বাইরে কোথাও যেতে পারবেন না তিনি।
এদিকে চন্দ্রনাথের এই জামিন নিয়ে বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল বলেন, ‘উনি জামিন পেয়েছেন, এটা তো ভাল জিনিস।’ অন্যদিকে আবার ইডি আদালতে দাবি করেছে, চন্দ্রনাথ সাক্ষীদের প্রভাবিত করছেন। এই নিয়ে অনুব্রত বলেন, ‘ইডি কী বলছে, সেটা তাদের ব্যাপার। সেটা ইডিকে জিজ্ঞাসা করুন।এই নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিজেপি নেতা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়। বলেন, ‘রাজ্যের তিনি ক্যাবিনেট মন্ত্রী। ঘটনাচক্রে কারামন্ত্রী। কারামন্ত্রীকে যদি অভিযুক্ত হিসেবে আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হয়, সেটা তো বাংলা ও বাঙালির জন্য সুখের বিষয় নয়। অস্মিতার বিষয় নয়। এটা লজ্জার। পশ্চিমবঙ্গে যে চাকরির দোকান কলকাতা ও বেহালার বাইরে জেলায় জেলায় খোলা হয়েছিল, ইডির চার্জশিটে তা প্রমাণিত। ইডি যে অভিযোগ এনেছে, তাতে এটাই প্রমাণিত হল, চাকরির দোকান সারা পশ্চিমবঙ্গেই ছড়িয়েছে।’ চন্দ্রনাথের জামিন নিয়ে কটাক্ষ করেছেন বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষও। তিনি বলেন, ‘তৃণমূলে এখন তিন ধরনের নেতা রয়েছেন। এক ধরনের নেতা জেলে রয়েছেন। আর এক ধরনের নেতা বেলে রয়েছেন। আর এক ধরনের নেতা জেলে যাওয়ার জন্য তৈরি রয়েছেন।’