ভারত সম্পর্কে একের পর এক নেতিবাচক মন্তব্য শোনা গিয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের গলায়। তাতে অসন্তুষ্ট নয়াদিল্লি। তার ওপর সম্প্রতি ভারতের চড়া হারে শুল্ক চাপিয়েছে আমেরিকা। সব মিলিয়ে ভারত সম্পর্কে আমরিকার অবস্থানকে ভালো চোখে দেখছে না নয়াদিল্লি। এই প্রেক্ষাপটেই জাপান হয়ে চিন সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। চলতি মাসের শেষদিনে চিন সফরে যাচ্ছেন তিনি। সেই সফরেই তিনি বৈঠকে বসবেন চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে। মোদীর এই চিন সফর মূলত এসসিও বৈঠকের জন্যই। কিন্তু বৈঠকের ফাঁকেই দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসবেন শি জিনপিং ও মোদী। এই বৈঠক অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল। ৩১ আগস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) সম্মেলন হবে। সেই সম্মেলনে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখানে উপস্থিত থাকার কথা রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনেরও। সূত্রের খবর, এসসিও সম্মেলনের পাশাপাশি চিনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে মোদীর দ্বিপাক্ষিক বৈঠকেরও আয়োজন করা হয়েছে। চিন সফরের আগে দু’দিনের জন্য অবশ্য জাপান সফরও রয়েছে মোদীর। জাপান সফর শেষে চলতি মাসের শেষ দিনে চিনে পৌঁছবেন নরেন্দ্র মোদী। ২০২০ সালে লাদাখে ভারত-চিন সংঘর্ষের পর এই প্রথম বার চিন সফরে যাচ্ছেন মোদী। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিষয়টি যদি শুধু এসসিও সম্মেলনে যোগ দেওয়ার মধ্যে সীমিত থাকত, তা হলে অসুবিধা ছিল না। যে হেতু জিনপিংয়ের সঙ্গে মোদী পার্শ্ববৈঠকও করবেন, তাই বিষয়টি তাৎপর্যপূর্ণ। আরও তাৎপর্যপূর্ণ সময়টা। কারণ, এই সময়েই ভারতীয় পণ্যের উপর জরিমানা— ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আমেরিকার এই সিদ্ধান্তের কারণ, ভারত রাশিয়া থেকে তেল কিনে ইউক্রেন যুদ্ধে পুতিনকে মদত দিচ্ছে। ভারত অবশ্য এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। রাশিয়া থেকে তেল কেনা দেশগুলির মধ্যে চিনও রয়েছে। কূটনীতিকদের একাংশের মত, এই পরিস্থিতিতে রাশিয়ার পাশাপাশি চিনের সঙ্গেও কূটনৈতিক দৌত্য চালিয়ে দিল্লি বহুপাক্ষিক কূটনীতির পথ খোলা রাখতে চাইছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যের উপরে চড়া আমদানি শুল্ক চাপিয়েছেন। পরে আমেরিকার সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের চরম অবনতি হয়েছে। আমেরিকান বাজার হারিয়ে ভারত এখন বিকল্প বাজারের সন্ধান করছে। ভারতীয় পণ্যের জন্য তাদের বাজার খুলে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে রাশিয়া ও চিন। এই আবহে মোদীর চিন সফর খুবই গুরুত্বপূর্ণ।