পিছিয়ে গেল ডিএ মামলার শুনানি

IMG-20250826-WA0116

সুপ্রিম কোর্টে ফের পিছিয়ে গেল ডিএ মামলার শুনানি। মঙ্গলবার শীর্ষ আদালতে মামলার শুনানি শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সাংবিধানিক বেঞ্চে বিচারাধীন অন্য একটি মামলায় ব্যস্ত থাকায় রাজ্যের আইনজীবীরা শুনানি পিছিয়ে দেওয়ার আর্জি জানিয়েছিলেন। সেইমতোই ডিএ মামলার শুনানি পিছিয়ে দেওয়া হয়। রাজ্য সরকারের আইনজীবী কপিল সিব্বাল জানান, আদালতকে মামলাটি ১০ সেপ্টেম্বরের পর শোনার আর্জি জানিয়েছিলেন তাঁরা। শীর্ষ আদালত সেই আর্জি মঞ্জুর করেছে। তবে সেপ্টেম্বরের কবে ডিএ মামলার পরবর্তী শুনানি হবে, তা এখনও জানায়নি সুপ্রিম কোর্ট। এতদিন আদালতে ডিএ মামলার শুনানি করছিল যে বেঞ্চে, মঙ্গলবার সেই বেঞ্চে কিছু রদবদল হয়। বিচারপতি কারোলের সঙ্গে আদালতে বিচারপতি গোপাল সুব্রহ্মণ্যম ছিলেন না। পরিবর্তে উপস্থিত ছিলেন বিচারপতি মেহতা। এতে বিচারপতি কারোল জানান, আজ ডিএ মামলার শুনানি করবেন না তাঁরা। আগামী কোনও সোম বা শুক্রবার শুনানি হবে। একেবারে প্রথমেই মামলার শুনানি রাখবেন তাঁরা। এতে সিব্বাল জানান, ১০ সেপ্টেম্বরের পর কোন একটা তারিখে শুনানি হলে ভাল হয়। কিন্তু অনলাইন মাধ্যমে শুনানিতে উপস্থিত হওয়া বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য আরও আগে শুনানি চাইছিলেন। তিনি জানান, অনেকটা শুনানি হয়ে গিয়েছে। রাজ্যের বিষয়গুলির শুনানি বাকি রয়েছে। তাই কাছাকাছি কোনও তারিখে শুনানি হোক। এতে বিচারপতি সঞ্জয় কারোল জানান, ৮ তারিখ বিচারপতি সুব্রহ্মণ্যমকে পাওয়া যাবে না। সেক্ষেত্রে কোনও সোম বা শুক্রেই শুনানি হবে। একেবারে প্রথমেই শুনানি হবে ডিএ মামলার। সিব্বাল দুপুর ২টো নাগাদ শুনানি হলে সকলের সুবিধা হবে বলে জানান। সেপ্টেম্বরের শুরুতে শুনানি হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। রাজ্যকে আগেই ডিএ-র ২৫ শতাংশ মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। এ জন্য ছ’সপ্তাহ সময়ও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ওই সময়সীমার মধ্যে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ডিএ দিতে পারেনি। বরং আদালতের কাছ থেকে আরও ছ’মাস সময় চাওয়া হয়। সেই আবেদনের ভিত্তিতে গত ৪ আগস্ট থেকে ৭ আগস্ট প্রতি দিনই শুনানি চলেছে সুপ্রিম কোর্টে। গত ১২ আগস্টও সুপ্রিম কোর্টে ডিএ মামলার শুনানি পিছিয়ে গিয়েছিল। সূত্র মারফত জানা যায়, ওই দিন রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বল এসআরআই বা বিশেষ নিবিড় সমীক্ষা সংক্রান্ত মামলায় ব্যস্ত ছিলেন। কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মীদের হারে রাজ্যকেও ডিএ দিতে হবে, এই দাবিকে সামনে রেখে শুরু হয় মামলা। স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনাল, কলকাতা হাই কোর্ট হয়ে মামলা গড়িয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। ২০২২ সালে কলকাতা হাই কোর্ট সরকারি কর্মীদের পক্ষে রায় দেয়। উচ্চ আদালত জানায়, ডিএ রাজ্য সরকারের কর্মীদের অধিকার। কর্মীরা কেন্দ্রীয় হারে তা পাওয়ার যোগ্য। কিন্তু রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য। সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যকে বকেয়া ডিএ-র ২৫ শতাংশ ডিএ মিটিয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু রাজ্য সরকার শীর্ষ আদালতে আবেদন করেছে, আরও সময় প্রয়োজন। আর্থিক সঙ্কট রয়েছে। ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের বাজেটে বকেয়া ডিএ সংক্রান্ত কোনও বরাদ্দ ছিল না। তারা সুপ্রিম কোর্টের অন্তর্বর্তী নির্দেশ পুনর্বিবেচনারও আর্জি জানায়।
পাশাপাশি রাজ্যের যুক্তি ছিল, মহার্ঘ ভাতা বাধ্যতামূলক নয়। ডিএ কর্মীদের মৌলিক অধিকার নয়। তা ছাড়া কেন্দ্র ও রাজ্যের আর্থিক পরিকাঠামো ভিন্ন। কেন্দ্র যে হারে ডিএ দেয় তার সঙ্গে রাজ্যের তুলনা চলে না। অন্য দিকে, মামলাকারী পক্ষের যুক্তি, নির্দিষ্ট সময়মতো ডিএ দেওয়া সরকারের নীতির মধ্যে পড়ে। খেয়ালখুশি মতো ডিএ দেওয়া যায় না। তাদের দাবি, বেতন কমিশনের সুপারিশ মেনে নির্দিষ্ট সময় অন্তর ডিএ দিতে হবে। প্রয়োজনে বকেয়া ডিএ কিস্তিতে দেওয়া হোক। সেই মামলারই শুনানি চলছে সুপ্রিম কোর্টে। এই আবহে আগস্টে পর পর দু’দিন পিছিয়ে গেল ডিএ মামলার শুনানি।

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement