আর মাত্র কয়েক ঘন্টা বাকি, মঙ্গলবার, ২৬ আগস্ট পূর্ব বর্ধমান সফরে আসছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, বর্ধমান শহরের প্রাণকেন্দ্র কার্জন গেটের পাশে বর্ধমান মিউনিসিপাল হাই স্কুলের মাঠে অনুষ্ঠিত হবে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক সভা। মঞ্চ তৈরির কাজ এখন প্রায় শেষ পর্যায়ে। সভা ঘিরে জেলা প্রশাসনিক আধিকারিকদের তৎপরতা তুঙ্গে। বারবার সভাস্থল পরিদর্শন করছেন আধিকারিকরা। জানা গিয়েছে, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান মিলিয়ে এই বৃহৎ সভা আয়োজন করা হচ্ছে।তবে মুখ্যমন্ত্রীর সফরকে ঘিরে বিরোধীদের সমালোচনা থামছেই না।সিটু নেতা দীপঙ্কর দে সরাসরি প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে বলেন, “শুনছি বর্ধমান শহরে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী। আমি ওনার কাছে জানতে চাই, যেহেতু প্রশাসনিক সভা তাই মঞ্চে পৌরসভার চেয়ারম্যান, বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক ও জেলা স্তরের আধিকারিকরা থাকবেন—ওনাদের জিজ্ঞাসা করুন বর্ধমান শহর কেন জলের তলায়? মানুষের ঘরে জল ঢুকছে কেন? রাস্তাঘাট চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে কেন?মুখ্যমন্ত্রী আসবেন বলে হঠাৎ দিন রাত এক করে কাজ চলছে। এতে মানুষ বুঝতে পারছে, আসল উন্নয়ন কোথায়! জনগণের করের টাকায় যে এলাহী আয়োজন হচ্ছে, সেটা কি রিলিফ দেওয়ার জন্য, নাকি রাজনৈতিক দলীয় সভায় পরিণত হবে প্রশাসনিক সভা? মুখ্যমন্ত্রী আসছেন, অথচ বর্ধমান জলের তলায়—এ নিয়ে পৌরসভা, বিডিএ, বিধায়করা কী বলবেন, সেই জবাব চাই আমরা”।এদিকে বিজেপি নেতা গোপাল চট্টোপাধ্যায় ব্যঙ্গ করে মন্তব্য করেন, “মুখ্যমন্ত্রী আসবেন, এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। প্রধানমন্ত্রী একটার পর একটা প্রকল্পের উদ্বোধন করছেন, সেটা দেখে মুখ্যমন্ত্রীর মাথা খারাপ হয়ে গেছে। তাই তাকেও আসতেই হচ্ছে।বর্তমানে জেলায় বৃষ্টির কারণে প্রায় সব শহরই জলমগ্ন। মুখ্যমন্ত্রী এসে যদি রাস্তার জমা জলে কয়েকটা মাছ ছেড়ে ‘মৎস হাব’-এর উদ্বোধন করেন, তাহলে ভালো হবে। যেহেতু ওনারা উন্নয়নের নামে হাব করতে ভালোবাসেন, এটা কিন্তু বেশ মানানসই হবে”।তবে বিরোধীদের অভিযোগ ও কটাক্ষকে গুরুত্ব দিতে নারাজ শাসক শিবির। পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের অধ্যক্ষ অপার্থিব ইসলাম জানান, “মুখ্যমন্ত্রীর সফর মানেই উন্নয়নমূলক পদক্ষেপ। তিনি আসছেন, এটা আমাদের কাছে গর্বের বিষয়। বিরোধীরা সমালোচনা করবেই, কিন্তু প্রশাসনিক সভা থেকে মানুষের জন্য নতুন দিশা মিলবে, এটা আমরা নিশ্চিত”। অপার্থিব ইসলাম আরও বলেন, “আমাদের প্রিয় নেত্রী, বিশ্বজয়ী নেত্রী, সবার প্রিয় মুখ্যমন্ত্রী তিনি ক্ষমতায় আসার পর থেকে কোনদিনই ঠান্ডা ঘরে বসে থাকেন নি। তিনি রাজ্যের প্রতিটা জেলায় সফর করেন। মানুষের অভাব অভিযোগ শোনেন পাশাপাশি বেশ কিছু উন্নয়নমূলক প্রকল্পের শিলান্যাস করেন, সেই মর্মে মুখ্যমন্ত্রী বর্ধমানেও আসছেন। শুনেছি বেশ কিছু প্রকল্পের উদ্বোধনও হয়তো করবেন। মুখ্যমন্ত্রী আসছেন তাই সাধারণ মানুষের আবেগ আছড়ে পড়বে মঙ্গলবার। পাশাপাশি বিরোধী রাজনৈতিক দলের কটাক্ষ, অভিযোগ কে নশ্চাৎ করে জেলা পরিষদের অধ্যক্ষ বলেন, বিরোধীরা বিরোধিতা সব সময়- ই করে। কাজ করলেও করে। সিপিআইএমের কথার কোন গুরুত্ব নেই। তাদের বাংলার মানুষই শাস্তি দিয়েছেন। এমন শাস্তি দিয়েছেন যে তাদের আর টিকি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না! মিথ্যে কথা ছাড়া তাদের কাছে কিছু নেই। বর্ধমান জলের তলায় বলছে।সারা বিশ্ব জুড়ে প্রাকৃতিক বিপর্যয়। বর্ধমান কেন মুম্বাই শহরে কি হচ্ছে? প্রতিবছর ডুবে যাচ্ছে সেটা প্রকৃতির রোষ। বর্ধমানের প্রতিটা রাস্তা কে ঢেলে সাজানো হচ্ছে। তবে মানছি মানুষজনের অসুবিধা হচ্ছে কিন্তু একটা ভালো জিনিস পেতে গেলে কিছুদিন তো আমাদের অসুবিধা ভোগ করতেই হবে, কারণ রাস্তার কাজ চলছে, অসমাপ্ত রয়েছে কাজ টানা বর্ষণের দরুন। আর বিজেপি দল তো সেই বিষয়ে বলার কিছু নেই নরেন্দ্র মোদী ভোট চোরের প্রধানমন্ত্রী। নরেন্দ্র মোদি যে প্রকল্পটা ২২ আগস্ট উদ্বোধন করলেন সেটা ২০০৯ সালে আমাদের প্রিয় মুখ্যমন্ত্রী তৎকালীন রেলমন্ত্রী থাকাকালীন উদ্বোধন করে দিয়েছেন। ভোটের আগে দিল্লী থেকে আসে আর মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে চলে যায়। তাই ঐসব ফালতু অভিযোগ আমরা কান দি না। মঙ্গলবার মুখমন্ত্রী আসছেন আমরাও প্রস্তুত, ওনাকে স্বাগত জানাবো, পাশাপাশি আপামর জনতাও তৈরী আছেন বাংলার প্ৰিয় মুখ্যমন্ত্রী-কে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য”।