হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেন অভয়ার মা

1200-675-24780024-thumbnail-16x9-rg-kar-victim-mother-aspera

বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে ৭টি এফআইআর

আরজি কর কান্ডের এক বছরে শনিবার নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছিলেন অভয়ার পরিবার। সেই কর্মসূচিতে দলীয় পাতাকা ছাড়াই অংশ নিতে দেখা যায় শুভেন্দু অধিকারী সহ বিজেপি নেতা-নেত্রীদের। সেই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয় শহরের রাজপথে। সেই ঘটনায় বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে ৭টি এফআইআর দায়ের করল কলকাতা পুলিশ। পুলিশের উপর হামলা, হুমকি, আদালত অবমাননা-সহ একাধিক অভিযোগে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে।
বিধায়ক অশোক দিন্দা-সহ বেশ কয়েকজন বিজেপি নেতার নামে মোট ৭টি এফআইআর দায়ের নিউ মার্কেট ও হেয়ার স্ট্রিট থানায়। পুলিশকে হুমকির অভিযোগ উঠেছে বিজেপি বিধায়ক অশোক দিন্দার বিরুদ্ধে। ডিসি বিদিশা কলিতার গার্ডকে রাস্তায় ফেলে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। পুলিশের দাবি, নবান্ন অভিযানে আহত হয়েছেন ৫ পুলিশকর্মী। আহত হয়েছেন কনস্টেবল, এ এস আই, হোমগার্ড-সহ ৫ পুলিশকর্মী। আহত ৩ পুলিশকর্মী এসএসকেএমে চিকিৎসাধীন। নবান্ন অভিযানে জখম পুলিশকর্মীদের দেখতে রবিবার এসএসকেএমে গিয়েছিলেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা। তিনি জানান, নির্যাতিতার মা জখম হয়েছেন বলে যে অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে, তার তদন্ত হবে। যদি মহিলার গায়ে হাত তোলা হয়ে থাকে, তবে সেই কাজ কারা করেছেন, তা খতিয়ে দেখা হবে। আরজি করের ধর্ষণ এবং খুনের এক বছরের মাথায় শনিবার ‘নবান্ন অভিযান’ কর্মসূচির ডাক দিয়েছিল বিজেপি। যদিও এই কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক আহ্বান ছিল নির্যাতিতার বাবা-মায়ের তরফে। কর্মসূচির শুরু থেকেই ছিল উত্তেজনা। ধর্মতলা থেকে রওনা দেওয়া ওই মিছিলে ছিলেন নির্যাতিতার মা-বাবা। তাঁদের সঙ্গে প্রথমে ছিলেন বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল, জোয়েল মুর্মু, আশিস বিশ্বাসেরা। পরে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, শঙ্কর ঘোষ, সুব্রত ঠাকুর, অশোক দিন্দা, নীলাদ্রিশেখর দানা-সহ বিজেপি বিধায়কেরা মিছিলে যোগ দেন। জওহরলাল নেহরু রোডের উড়ালপুলের র‍্যাম্পেও পুলিশ মোতায়েন ছিল। যাতে মিছিল উড়ালপুলে উঠতে না পারে। উড়ালপুলের ডান পাশের রাস্তা ধরে মিছিল এগোতে থাকে। পার্ক স্ট্রিট মোড়ের কয়েকশো মিটার আগেই বড় ব্যারিকেড দিয়ে রাস্তা আটকে দিয়েছিল পুলিশ। জনা দশেক বিজেপি কর্মী মিছিলের আগে ছুটে গিয়ে প্রথমে ব্যারিকেডে ধাক্কাধাক্কি শুরু করেন। পিছনের মিছিল ব্যারিকেড পর্যন্ত পৌঁছলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হবে বুঝে পুলিশও তৎপরতা বাড়াতে শুরু করে। তখনই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। কলকাতা পুলিশও দাবি করে, নবা্ন্ন অভিযানে আহত হয়েছেন পুলিশ কর্মীরাও। তাই সাতটি এফআইআর দায়ের হয়েছে বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে। লালবাজার সূত্রে খবর, বিজেপি বিধায়ক অশোক দিন্দা, অগ্নিমিত্রা পাল এবং বিজেপি নেতা কৌস্তভ বাগচীর নাম রয়েছে এফআইআরে। অভিযোগ, কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের বাধাদান এবং তাঁদের হুমকি দিয়েছেন অভিযুক্ত নেতারা।


শনিবারে হট্টগোলের মাঝে তাঁকে মারধরের অভিযোগ করেন নির্যাতিতার মা। তিনি জানান, তাঁর কপালে এবং পিঠে চোট লেগেছে। শনিবারই তাঁকে হাসপাতালের নিয়ে যাওয়া হয়। রবিবার তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। রবিবার দুপুর ৩টে নাগাদ একটি অ্যাম্বুল্যান্সে বাড়ির পথে রওনা দেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন নির্যাতিতার বাবা এবং পরিবারের অন্য সদস্যেরা। হাসপাতাল সূত্রে খবর, আপাতত তাঁর শারীরিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল। কপালের চোট লাগা জায়গায় ফোলা ভাব কমেছে। অ্যান্টিবায়োটিক ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়েছে তাঁকে। তবে নির্যাতিতার মাকে পরে স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিতে বলা হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর।পরে হাসপাতালের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, নির্যাতিতার মা রাতে ভাল ভাবে ঘুমিয়েছেন। মাথা ধরার মতো কোনও সমস্যা তাঁর নেই। সকালে জরুরি বিভাগে চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানেই হাঁটেন তিনি। রবিবার সকালে স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞদের একটি দল নির্যাততের মাকে দেখে যায়। যদিও হাসপাতালের রিপোর্টে ‘পুলিশের মারের’ বিষয়টির উল্লেখ না-থাকায় ক্ষোভপ্রকাশ করেন নির্যাতিতার বাবা।

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement