কোচবিহার: বিধানসভার সংখ্যালঘু উন্নয়ন বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির এক প্রতিনিধিদল কোচবিহার জেলার সফরে এলেন। বুধবার জেলায় সংখ্যালঘুদের জন্য চলমান সরকারি প্রকল্পগুলির অগ্রগতি খতিয়ে দেখতে ও প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনার উদ্দেশ্যে এই সফর বলে জানা গেছে। প্রতিনিধিরা এদিন জেলাশাসকের দপ্তরে জেলার প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে অংশ নেন। সেখানে সংখ্যালঘু উন্নয়ন সংক্রান্ত একাধিক প্রকল্প ও তার বাস্তবায়ন, সুফল এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়। এদিন বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিধানসভার সদস্য ও স্ট্যান্ডিং কমিটির প্রতিনিধি নওশাদ সিদ্দিকী, কোচবিহার জেলা পরিষদের সভাপতি সুমিতা বর্মন এবং সংখ্যালঘু বিষয়ক দপ্তরের একাধিক উচ্চপদস্থ আধিকারিক। বৈঠকের পর প্রতিনিধি দল জেলার বিভিন্ন সংখ্যালঘু কল্যাণমূলক প্রকল্প এলাকা পরিদর্শনে যান।
এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে নওশাদ সিদ্দিকী বলেন, “সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উন্নয়নের উদ্দেশ্যে যে প্রকল্পগুলি গ্রহণ করা হয়েছে, সেগুলি যেন বাস্তবে রূপ পায়, তা নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য। শুধুমাত্র কাগজে কলমে নয়, প্রকৃত উপকারভোগীদের কাছে এই উন্নয়নের ছোঁয়া পৌঁছানো জরুরি। আমরা সরজমিনে এসে দেখতে চেয়েছি বাস্তব অবস্থা কী। প্রয়োজনে বিধানসভায় এই বিষয়ে আলোচনা করব।জেলার বিভিন্ন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষদের উন্নয়নের স্বার্থে এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন স্থানীয় মহল। বৈঠক শেষে জেলাশাসক দপ্তরের সামনে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখোমুখি হয়ে একাধিক বিষয়ে রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারকে একযোগে তীব্র কটাক্ষ করেন তিনি।নওশাদ সিদ্দিকি বলেন,“সংখ্যালঘু উন্নয়নের নামে শুধু কাগজে-কলমে কাজ হচ্ছে। মাঠে-ময়দানে বাস্তব ছবি সম্পূর্ণ আলাদা। রাজ্য সরকার সংখ্যালঘুদের উন্নয়নের কথা বললেও প্রকৃত কাজ কোথায়? আর কেন্দ্র সরকারের কাছ থেকে তো এই রাজ্য কোনওদিনই বিশেষ কিছু পায় না, শুধু ভোটের সময় সংখ্যালঘুদের নিয়ে রাজনীতি করা হয়। আমরা পরিষ্কারভাবে চাই, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রকৃত উন্নয়ন হোক—স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে বাস্তব পরিবর্তন ঘটুক। শুধু নামেই প্রকল্প চালিয়ে বা বিজ্ঞাপনে প্রচার করে উন্নয়ন হয় না। সরকারকে মাঠে নামতে হবে, বাস্তব পদক্ষেপ নিতে হবে।এদিন তাঁর বক্তব্যে উঠে আসে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের দৈনন্দিন সমস্যার কথাও। তিনি বলেন, “সংখ্যালঘু উন্নয়ন নিয়ে শুধু বৈঠকে আলোচনা করলেই হবে না, তার বাস্তব রূপায়ণ দেখাতে হবে। জেলাশাসক দপ্তরের এক আধিকারিক জানান,“বৈঠকে জেলার বিভিন্ন সংখ্যালঘু কল্যাণমূলক প্রকল্প, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ছাত্রাবাস, স্কলারশিপ এবং মহিলাদের আর্থিক সহায়তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। উপস্থিত প্রতিনিধিরা বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দেন।