পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার বদলা নিতে ভারত পাকিস্তানের মাটিতে প্রত্যাঘাত হেনেছিল। অপারেশন সিন্দুরের মাধ্যমে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল ৯টি জঙ্গি শিবির। তারপরেই পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাত তীব্র হয়। ভারতীয় সেনাও পাল্টা জবাব দিতে ময়দানে নেমে পড়ে। তবে ১০ মে হঠাৎই যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়। আর তার কৃতিত্ব দাবি করে বসেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই নিয়ে মঙ্গলবার সংসদে সরব হন রাহুল গান্ধি। কেন্দ্রকে নিশানা করেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা। তিনি মোদীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘‘বলুন ট্রাম্প মিথ্যেবাদী।’’ রাহুল বলেন, ‘‘রাজনাথ বলেন রাতে ১টা ৫ মিনিটে অপারেশন সিংদুর শুরু হয়। তার পরে তিনি বলেন, এই অভিযান ২২ মিনিট স্থায়ী হয়। তার পরে তিনি বলেন, রাত ১টা ৩৫ মিনিচে পাকিস্তানকে ফোন করে বলা হয়, আমরা অসামরিক ঘাঁটিতে হানা দিয়েছি। আমরা আর উত্তেজনা বৃদ্ধি চাই না। রাত ১টা ৩৫ মিনিটে ভারতের ডিজিএমওকে যুদ্ধবিরতিতে যাওয়ার কথা বলা হয়। আপনারা পাকিস্তানকে নিজের রাজনৈতিক ইচ্ছার কথা বলেন যে, আপনারা যুদ্ধ করতে চান না।’’ যুদ্ধবিমানের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে সংসদে রাহুল। বলেন, ‘‘যুদ্ধবিমানের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, কারণ রাজনৈতিক বাধা, যা দিয়েছিল সরকার। হানা দিতে বারণ করে। আপনারা ওদের বলেন যে আপনাদের রাজনৈতিক ইচ্ছা নেই। রাহুল বলেন, ‘‘৩০ মিনিটেই সমর্পণ করা হল। রাজনাথ সিংহ আরও আকর্ষণীয় একটি বিষয় বলেছেন, পাকিস্তানকে বলাহয় যে তাদের সামরিক ঘাঁটিতে আঘাত হানা হয়নি।’’ রাহুল বলেন, ‘‘রাজনাথ সোমবার ১৯৭১ সালের পরিস্থিতির সঙ্গে সিঁদুর অভিযানের তুলনা করেন। ১৯৭১ সালে রাজনৈতিক সদিচ্ছা ছিল।’’ ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষে জম্মু ও কাশ্মীরের পুঞ্চ সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। ওই সংঘর্ষের জেরে পুঞ্চে অনেক শিশু তাদের বাবা-মাকে হারিয়েছে। অনাথ ২২ শিশুর লেখাপড়ার যাবতীয় খরচ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রাহুল গান্ধি।যত দিন না ওই শিশুদের স্নাতক স্তরের পড়াশোনা শেষ হচ্ছে, তত দিন তাদের লেখাপড়ার খরচ দেবেন রাহুল।চার দিনের ভারত-পাক সামরিক সংঘাতে জম্মু ও কাশ্মীরে ২১ জন সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল জম্মুর পুঞ্চ জেলায়। ওই জেলার পাক সীমান্তবর্তী গ্রামগুলিতে গোলাবর্ষণ শুরু করে পাক সেনা। গত মে মাসেই পুঞ্চে গিয়েছিলেন রাহুল। প্রদেশ কংগ্রেস সূত্রে খবর, সেই সময়ই তিনি বাবা-মাকে হারানো শিশুদের নামের একটি তালিকা তৈরি করতে বলেন। পাক গোলাবর্ষণে যারা বাবা-মা দু’জনকেই হারিয়েছে, কিংবা যার পরিবারে একমাত্র রোজগেরের মৃত্যু হয়েছে, তাদের সকলের নাম তালিকায় রাখতে বলা হয়। তার পর সরকারি নথির সঙ্গে মিলিয়ে সেই তালিকা চূড়ান্ত করা হয়। জম্মু ও কাশ্মীরের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি জানিয়েছেন, বুধবারই প্রথম কিস্তির টাকা পৌঁছে যাবে ওই শিশুদের কাছে।