দন্ডি কেটে তারকেশ্বরে রওনা যুবকের

IMG-20250726-WA0086

হুগলি: ধর্ম আর দেশপ্রেমের মিলন ঘটিয়ে প্রকৃত ধর্মের বার্তা ছড়িয়ে দিতে অভিনব যাত্রা পশ্চিম বর্ধমানের রানীগঞ্জের বক্তারনগরের যুবক সৌরভ পালের। ‘ভোলে বোম’ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে হাতে জাতীয় পতাকা নিয়ে তিনি দণ্ডি কেটে রওনা দিচ্ছেন হুগলির তারকেশ্বরের উদ্দেশ্যে। এই কঠোর ও কষ্টসাধ্য যাত্রা শুধু একান্ত ভক্তির প্রতিফলন নয়, বরং হিন্দুত্বের এক দৃঢ় প্রচারও বটে। শ্রাবণ মাস মানেই তারকেশ্বরে উপচে পড়া ভক্তের ভিড়। ভোলেনাথের টানে দেশের নানা প্রান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসেন তাঁর দর্শনে। কিন্তু সৌরভ পালের যাত্রা শুধুই এক ভক্তের ভ্রমণ নয়, এক নবজাগরণের প্রচেষ্টা। বৃহস্পতিবার সকালে নিজের যাত্রা শুরু করেন সৌরভ। সঙ্গে ছিলেন আরও দুজন সাথী, যারা তাঁর এই মহৎ উদ্দেশ্যে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে চলেছেন। ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর দণ্ডি কেটে কেটে শুক্রবার সন্ধ্যায় পৌঁছান দুর্গাপুরের দুবচুরুরিয়া এলাকায়। সেখানকার এক শিবমন্দিরে রাত্রিযাপন করেন তাঁরা। গ্রামের মানুষজন তাঁদের আন্তরিক ভাবে স্বাগত জানিয়ে, এই উদ্যোগে পাশে দাঁড়িয়েছেন। পরদিন ভোরেই সূর্যের প্রথম আলোয় আবারও যাত্রা শুরু। এবার গন্তব্য পানাগড়। পথে ঝড় হোক, বৃষ্টি হোক কিংবা রোদ্দুর— কিছুই থামাতে পারছে না সৌরভকে। তাঁর অঙ্গীকার একটাই— রাঢ়বঙ্গের মাটি থেকে দণ্ডি কেটে পৌঁছে যেতে হবে তারকেশ্বর মহাদেবের চরণে।সৌরভ বলেন, “চারিদিকে ধর্ম নিয়ে নানা বিতর্ক চলছে। এই বিভ্রান্তির সময়ে আমি চাই মানুষের মধ্যে প্রকৃত বার্তা পৌঁছে দিতে। আমি শিবভক্ত, অন্তর থেকে ভোলেনাথের ভক্ত। তাই জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে দণ্ডি কেটে ১৬০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিচ্ছি। পথে পথে হিন্দু ধর্মের শক্তি ও ঐতিহ্য প্রচার করছি। মানুষ খুব সহযোগিতা করছেন, এটাই আমার প্রেরণা।” স্থানীয় বাসিন্দা বলরাম চোঙদার অভিভূত হয়ে বলেন, “এই প্রথম আমরা নিজের চোখে দেখলাম কেউ দণ্ডি কেটে তারকেশ্বর যাচ্ছেন। শুনেছি অনেকেই করে, কিন্তু সামনে দেখে এই অভিজ্ঞতা অনন্য। এটাই আসল ভক্তি। আমাদের এলাকায় এসে মন্দিরে থেকেছেন, আমরা তাঁদের সাহায্য করতে পেরে ধন্য। এই উদ্যোগ যেন এক নিঃশব্দ অথচ দৃঢ় বার্তা— ভক্তি, আদর্শ ও বিশ্বাস মিলেই গড়ে ওঠে এক সত্যিকারের আন্দোলন। সৌরভের এই যাত্রা শুধু তাঁর নয়, এক সমগ্র সমাজের আত্মপরিচয়ের খোঁজ।

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement