ওড়িশা নিয়ে দয়া করে উদ্বেগজনক পরিবেশ তৈরি করবেন না’: এজি পীতাম্বর আচার্য

newindianexpress_2024-07_082ea7c3-6294-4f54-afdd-19a7b168685e_New Project (12)

ওড়িশা: ওড়িশায় বাংলাভাষীদের হেনস্তার যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা নিয়ে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি না-করতে আবেদন জানালেন ওড়িশা সরকারের অ্যাডভোকেট জেনারেল পীতাম্বর আচার্য৷ কলকাতা হাইকোর্টে পরিযায়ী শ্রমিকদের ওড়িশায় আটকে রাখার অভিযোগ সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে রাজ্যের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘বাঙালিরা আমাদের ভাই-বোন-বন্ধু। আমাদের প্রতিবেশী৷ দয়া করে উদ্বেগজনক পরিবেশ তৈরি করবেন না।প্রসঙ্গত, পরিযায়ী শ্রমিক নিয়ে বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের বেঞ্চে এই মামলার শুনানি ছিল। এদিনের শুনানিতে ওড়িশা সরকারের তরফ থেকে আদালতে জানানো হয়, বাঙালি হলেই এদেশের নয় বলে গ্রেফতার করা হচ্ছে, এরকম যে অভিযোগ উঠছে, সেটা একেবারেই ঠিক নয়। এর পাশাপাশি ওড়িশা সরকারের তরফ থেকে জানানো হয় কাউকেই গ্রেফতার করা হয়নি। উল্লেখ্য, গত ৩০ জুন সাইনুল ইসলাম-সহ বেশ কয়েকজন পরিযায়ী শ্রমিককে বাংলাদেশি সন্দেহে আটক করে ওড়িশা পুলিশ৷ যদিও, ইতিমধ্যে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে৷ সাইনুল এখন তাঁর বাবার সঙ্গে রয়েছেন৷ আর এই প্রসঙ্গে ওড়িশা সরকারের অ্যাডভোকেট জেনারেল পীতাম্বর আচার্য এদিন আদালতে বলেন, ‘গ্রেফতার করা হয়নি৷ আইন অনুযায়ী ওঁদের নথিপত্র যাচাই করা হয়েছিল৷রাজ্যের তরফে এদিন সওয়াল করেন আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তার উদ্দেশে ওড়িশার এজি পি আচার্য বলেন, ‘ আমাদের প্রধান বিচারপতি বাংলা থেকে এসেছেন। এখানে বাঙালি-অবাঙালি বিষয় নয়। এদেশের নাগরিক কি না, সেটা যাচাই করা হচ্ছে।বিচারপতি তখন এজি পি আচার্যর কাছে জানতে চান, ‘গ্রেফতার না আটক, তা আদালতে জানাতে হবে।’ প্রত্যুত্তরে এজি বলেন, ‘কোনও গ্রেফতার হয়নি। ফরেনার্স আইন অনুযায়ী, যাঁদের নাগরিকত্ব নিয়ে সন্দেহ, তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ, যাচাই করা হচ্ছে তথ্য। এটা আইন অনুযায়ী ভেরিফিকেশন। এরপরই কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্ন করেন, ‘হঠাৎ করে কেউ বিদেশি হয়ে গেল? ওড়িশা সরকার কীসের ভিত্তিতে এদের সন্দেহ করল? তার যুক্তিসঙ্গত কারণ থাকতে হবে তো ! একটাই কারণ প্রচুর বাংলাভাষী শ্রমিক ওড়িশায় রয়েছেন ৷’ সঙ্গে এও জানান, ৪০০ জন বাঙালিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’ এরই উত্তরে ওড়িশার এজি বলেন, ‘বাঙালি-অবাঙালি বলে বিভ্রান্ত করবেন না। দেশের ব্যাপার। পুরীতে আসুন নিমন্ত্রণ রইল। এরপরই বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি ঋতব্রতকুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চ আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে ওড়িশা সরকারকে এই বিষয়ে হলফনামা দিয়ে তাদের বক্তব্য জানাতে নির্দেশ দেন। আগামী ২৯ অগাস্ট ফের শুনানি এই মামলার ৷প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগে পরিযায়ী শ্রমিকদের হেনস্তার অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি ঋতব্রতকুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চ কেন্দ্রের অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেলের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমরা জানতে চাই হঠাৎ করে কেন দেশের বিভিন্ন রাজ্যে বাংলাদেশি শনাক্ত করার কাজ শুরু হল? এর পিছনে কারণ কী? সব রাজ্যের জন্য কেন জুন মাস বেছে নেওয়া হল? তার পিছনে একটি কারণ আছে নিশ্চয়ই৷ কিন্তু, এ ক্ষেত্রে কী কারণ রয়েছে? পূর্ব পরিকল্পিত ভাবেই কি এটা করা হচ্ছে? অভিযোগ উঠছে, বাংলায় কথা বলার জন্য আটক করা হচ্ছে ৷অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেলকে বিচারপতিরা বলেছিলেন, ‘আমরা অনুরোধ করব এই বিষয়টি জানানো হোক৷ কারণ, না-হলে ভুল বার্তা যেতে পারে৷ যার থেকে কোনও ভুল পদক্ষেপ হতে পারে৷ যেমন অভিযোগ উঠছে, বাংলায় কথা বলার জন্য আটক করে বাংলাদেশে পাঠানো হচ্ছে।

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement