ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের প্রাক্তন সিইও চন্দা কোচারকে দোষী সাব্যস্ত করল ট্রাইব্যুনাল আদালত।ভিডিয়োকন গোষ্ঠীকে ৩০০ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদনের বিনিময়ে ৬৪ কোটি টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগেই দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে চন্দা কোচারকে ট্রাইব্যুনাল বলেছে, ভিডিয়োকনের সঙ্গে যুক্ত একটি সংস্থা ব্যবহার করে কোছারের স্বামী, দীপক কোচারকে এই ঘুষের টাকা দেওয়া হয়েছিল। ট্রাইব্যুনালের মতে, এই মামলা স্পষ্টতই কুইড প্রো কো’র মামলা। ঘুষের বিনিময়ে ভিডিয়োকনকে ঋণ দিয়েছিলেন চন্দা।ইডির দাবিকেই মান্যতা দিয়েছে ট্রাইব্যুনালের রিপোর্ট। রিপোর্টে তারা বলেছে, ইডির কাছে এই মামলার শক্তিশালী প্রমাণ রয়েছে। ইডির পেশ করা নথিপত্র এবং তহবিল তছরুপ প্রতিরোধ আইনের আওতায় রেকর্ড করা বিবৃতি থেকে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে, ভিডিয়োকনকে ঋণ দেওয়ার বিষয়ে তাঁর স্বার্থের সংঘাত ছিল, তা প্রকাশ করেননি চন্দা। আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের অভ্যন্তরীণ নিয়ম লঙ্ঘন করেই এই ঋণ অনুমোদন করেছিলেন তিনি।চন্দা কোচারের বিরুদ্ধে ২০২০-এর শুরুতে আর্থিক তছরুপের অভিযোগে মামলা দায়ের করে ইডি। পরবর্তী সময়ে একই মামলায় কোচরের স্বামী দীপকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়। অবৈধ ভাবে ঋণ পাইয়ে দেওয়ার মামলা হয় চন্দা কোচর ও তাঁর স্বামী দীপকের বিরুদ্ধে। ঘুষ দেওয়ার অভিযোগে মামলা হয় ভিডিয়োকন গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান বেণুগোপাল ধূতের বিরুদ্ধে। আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের তৎকালীন সিইও কোচার এই বেণুগোপালকেই ওই বিপুল অঙ্কের ঋণ পেতে সাহায্য করেন বলে অভিযোগ ছিল। তার বদলে ধূত কোচরের স্বামী দীপক নিয়ন্ত্রিত সংস্থা ‘এনইউ পাওয়ার’-এ অর্থ বিনিয়োগ করেন। পদের অপব্যবহার করে এবং ব্যক্তিগত সুবিধার বিনিময়ে ভিডিয়োকনকে ওই ঋণ পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে কোচরের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি এক নির্দেশনামায় আদালত জানিয়েছে, ঋণ পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়েই যে কোচরের স্বামী দীপক নিয়ন্ত্রিত-সংস্থায় ঘুষের টাকা পৌঁছে গিয়েছিল, তা স্পষ্ট। ইডি যে কোচর এবং তাঁর স্বামীর সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তা-ও সঠিক বলে মনে করছে আদালত।
আদালত জানিয়েছে, আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক থেকে ৩০০ কোটি টাকার ঋণ মঞ্জুর হওয়ার পরের দিনই ভিডিয়োকনের অধীনস্থ একটি সংস্থা ‘এসইপিএল’ থেকে ‘এনইউ পাওয়ার’-এ ৬৪ কোটি টাকা পাঠানো হয়েছিল। খাতায়-কলমে ওই সংস্থাটি বেণুগোপালের নামে থাকলেও সেটি পরিচালনা করতেন কোচরের স্বামী দীপক। সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টরও ছিলেন তিনি। আদালতে মনে করছে, যে ভাবে টাকা পাঠানো হয়েছে, তাতে স্পষ্ট একটি সুবিধার বদলে এই টাকা দেওয়া হয়েছে। তদন্তে যে সব তথ্যপ্রমাণ মিলেছে এবং যা বয়ান রেকর্ড হয়েছে, তাতে অভিযোগের সত্যতার দিকেই ইঙ্গিত করছে বলে মনে করছে আদালত। আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের ঋণ অনুমোদন কমিটিরও সদস্য ছিলেন কোচর। সেই সময়ে ভিডিয়োকন গোষ্ঠীকে ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর স্বামীর ওই গোষ্ঠীর সঙ্গে ব্যবসায়িক যোগের কথা কোচর গোপন করে গিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ।