বাংলাদেশে ভয়াবহ বিমান বিপর্যয়। সোমবার ঢাকায় একটি স্কুলের উপর বায়ুসেনার বিমান ভেঙে পড়ে।শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, দুর্ঘটনায় অন্তত ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
আহত বহু। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন অন্তত ৫০ জনেরও বেশি। দগ্ধদের বেশির ভাগই শিক্ষার্থী। সোমবার দুপুর ১টা ৬ মিনিটে বিমানটি উড়েছিল। তার পরেই সেটি ভেঙে পড়ে ঢাকার উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের উপর। তারপরেই ওই স্কুলে আগুন ধরে যায়। যখন দুর্ঘটনাটি ঘটে, ভিতরে ক্লাস চলছিল। স্কুল ভবনের একটি অংশ একেবারে গুঁড়িয়ে যায়। বোঝাই যাচ্ছে, দুর্ঘটনার ভয়াবহতা কতটা। বাংলাদেশের ইন্টার সার্ভিসেস পাবলিক রিলেশনস বা আইএসপিআর জানিয়েছে, বায়ুসেনার ‘এফ-৭ বিজেআই’ বিমানের প্রশিক্ষণ চলছিল। টেকঅফের পরেই এই দুর্ঘটনা ঘটে। আগুন ধরে যায় বিমানে। পরিস্থিতি সামাল দিতে তড়িঘড়ি সেখানে হাজির হয় দমকলের আটটি ইউনিট। জানা গিয়েছে, যখন এই দুর্ঘটনা ঘটে, সেই সময়ে ভিতরে ক্লাস চলছিল। অনেকেই ভিতরে ছিলেন। উদ্ধারকারী দল পৌঁছে ভিতর থেকে একের পরে এক দগ্ধকে বের করে নিয়ে আসে। শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। বিবৃতিতে ইউনূস লিখেছেন, ‘এই দুর্ঘটনায় শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষক, কর্মচারি-সহ অন্যদের যে ক্ষতি হয়েছে, অপূরণীয়। জাতির জন্য এটি একটি গভীর বেদনার ক্ষণ।’ এই ঘটনায় প্রেস বিবৃতি জারি করেছেন শেখ হাসিনা।তিনি লিখেছেন, ‘আমি এই মানবিক সঙ্কট দূর করার জন্য উদ্ধার কাজ পরিচালনা, সকলকে নিরাপদে স্থানান্তরে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনসমূহের স্থানীয় নেতৃবৃন্দের পাশাপাশি এলাকাবাসীকে সার্বিক সহযোগিতার এবং দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের মধ্য দিয়ে উদ্ধার কাজে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি। পাশাপাশি, আহতদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে রক্তদান ও চিকিৎসা সেবা সুগম করতে সকলের প্রতি আহ্বান জানাই।’ দুর্ঘটনার খবর পাওয়ামাত্র স্কুলের সামনে ভিড় বাড়তে থাকে অভিভাবকদের। সকলের চোখেমুখেই উৎকণ্ঠার ছাপ দেখা যায়। ধ্বংসস্তূপের নীচে সন্তানদের খুঁজতে শুরু করেন তাঁরা। তবে উদ্ধারকারীদল কাউকেই ধ্বংসস্তূপের কাছে যেতে দেয়নি। অনেক অভিভাবকই দাবি করেন, তাঁরা তাঁদের সন্তানদের খুঁজে পাচ্ছেন না। মোবাইলে সন্তানদের ছবি দেখিয়ে খোঁজ শুরু করেন পড়ুয়াদের বাবা-মা। অনেক অভিভাবক আবার ভিড় করেন হাসপাতালের বাইরে। অনেকে আবার আহতদের ভিড়ে নিজের সন্তানকে খুঁজতে শুরু করেন।তবে উদ্ধারকাজে তৎপরতা দেখা যায় বাংলাদেশ প্রশাসনে।প্রসঙ্গত, গত জুন মাসে ভারতের আমেদাবাদের লোকালয়ে ভেঙে পড়ে এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিমান। মেঘানি নগরে চিকিৎসকদের হস্টেলে ভেঙে পড়েছিল সেটি। ওই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ২৬০ জন। লন্ডনের অদূরে গ্যাটউইক যাচ্ছিল সেটি। সেই ঘটনার মতোই এবার বাংলাদেশেও স্কুলে ভেঙে পড়ল বায়ুসেনার বিমান।