এসএসসির নিয়োগ বিধি মামলায় সুপ্রিম কোর্টেও স্বস্তি রাজ্য ও স্কুল সার্ভিস কমিশনের। বিধি সংক্রান্ত মামলায় হস্তক্ষেপই করল না দেশের সর্বোচ্চ আদালত। স্কুল সার্ভিস কমিশনের নতুন বিজ্ঞপ্তি নিয়ে মামলা দায়ের হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে। নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিজ্ঞপ্তি ও বিধিকে চ্যালেঞ্জ করে দায়ের হওয়া মামলায় যাবতীয় আবেদন খারিজ করে দেয় হাইকোর্টের বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চ। কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে আবার সুপ্রিম কোর্টেও মামলা হয়। কিন্তু সোমাবর সেই মামলা খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি সঞ্জয় কুমার এবং বিচারপতি সতীশচন্দ্র শর্মার বেঞ্চ জানান, তাঁরা এই অবস্থায় নিয়োগ প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করবেন না। তার ফলে ২০২৫ সালের নয়া বিধি মেনেই হবে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা। মামলাকারীদের উদ্দেশে শীর্ষ আদালতের প্রশ্ন, ‘‘সুপ্রিম কোর্ট কি জুয়া খেলার জায়গা?’’ সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, এসএসসির বিধিকে চ্যালেঞ্জ করে করা এই মামলার কোনও গ্রহণযোগ্যতা নেই। কারণ আদালত নির্দেশে কোথাও বলেনি, পুরনো বিধি অনুযায়ীই নিয়োগ করতে হবে। নিয়োগবিধি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার কমিশনের রয়েছে, জানিয়েছে আদালত। মামলার গ্রহণযোগ্যতা নেই শোনার পর মামলাকারীদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য আবেদন প্রত্যাহার করে নিতে চেয়েছিলেন। তা শুনেই বিচারপতি অসন্তুষ্ট হন। কারণ তত ক্ষণে ওই মামলার শুনানি বেশ কিছুটা হয়ে গিয়েছিল। বিচারতি জানান, মামলা প্রত্যাহার করা হবে না। তা খারিজ করা হচ্ছে। আইনজীবীদের এমন আচরণ দুর্ভাগ্যজনক। মামলাকারীদের আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য বলেন, ‘নতুন বিজ্ঞপ্তিতে ১০ নম্বর অতিরিক্ত দেওয়া হয়েছে৷ অযোগ্যদের বেতনের টাকা ফেরত দিতে হবে, বলা হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টের মূল রায়ে৷ তাঁরা কোনওভাবেই নিযুক্ত হতে পারবেন না, বলা হয়েছিল সেই কথা৷’ পাল্টা বিচারপতি বলেন, ‘সার্ভিস কমিশন নিজেদের মতো করে স্ট্যান্ডার্ড তৈরি করতে পারে৷ আপনারা অর্ডার টুইস্ট করছেন কী করে? আমরা এই বিষয় নিয়ে হস্তক্ষেপ করতে আগ্রহী নই৷ যাঁদের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা আছে, তাঁদের ক্ষেত্রে আপনাদের সমস্যা কোথায়? এমন করলে সমস্যার কোনও সমাধান হবে না৷’ ২৬ হাজার চাকরি বাতিলের পর সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে নতুন নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল এসএসসি। কিন্তু তাতে বেশ কিছু আপত্তি তুলে হাই কোর্টে যান চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ। তাঁদের মধ্যে অপেক্ষমাণ তালিকায় থাকা প্রার্থীরাও ছিলেন। হাই কোর্টের বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি স্মিতা দাসের ডিভিশন বেঞ্চ এই সংক্রান্ত সকল মামলা খারিজ করে দিয়েছে। আদালত জানিয়েছে, এসএসসি-র বিজ্ঞপ্তিতে হস্তক্ষেপ করা হবে না। এটা সত্য যে, কমিশন এবং পর্ষদই বর্তমান অচলাবস্থার জন্য দায়ী। কিন্তু দ্রুত শূন্যপদ পূরণ করা এখন লক্ষ্য। না হলে আগামী দিনে আরও জটিলতা তৈরি হতে পারে। এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়।