সোমবার তৃণমূলের শহিদ সমাবেশ। ধর্মতলার মঞ্চ থেকে যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়াবেন, সেই সময়েই উত্তরবঙ্গে কর্মসূচিতে যোগ দেবেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শিলিগুড়িতে উত্তরকন্যা অভিযানের ডাক দিয়েছে বিজেপি যুব মোর্চা। এই অনুষ্ঠানে যোগদান করবেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য এবং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বিধানসভা নির্বাচনের আগে ধর্মতলার মঞ্চ থেকে দলীয় কর্মীদের উদ্দেশ্যে বার্তা দেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেইসঙ্গে বাঙালি আবেগে শানও দেবেন বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, গত কয়েকদিন ধরেই তিনি ‘বাঙালি হয়রানি’র বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলে বিজেপিকে নিশানা করে যাচ্ছেন। অন্যদিকে বিজেপি আবার অনুপ্রবেশ ইস্যুতে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সুর চড়াচ্ছে। উত্তরকন্যা অভিযানে শুভেন্দু অধিকারীও অনুপ্রবেশ ইস্যুতে সুর চড়াতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। এদিকে সূত্রের খবর, উত্তরকন্যা অভিযানের পর দিল্লিতে শুভেন্দুকে অধিকারীকে তলব করেছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। আগামী ৯ আগস্ট নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছেন আরজি কর হাসপাতালে নিহত যুবতী চিকিৎসকের পরিবার। সেই কর্মসূচিতে পতাকা বিহীনভাবে শুভেন্দু-সহ যোগদান করবেন বিজেপির নেতা-কর্মীরা, সঙ্গে বহু অরাজনৈতিক সংগঠনের প্রতিনিধিও ওই দিন কলকাতার কর্মসূচিতে যোগ দেবেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে দূরদূরান্তের জেলা থেকে তাঁদের কলকাতায় আসতে সমস্যা হতে পারে। তাই তাদের জন্য বন্দোবস্ত করতে রেলমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে যাচ্ছেন তিনি।বিজেপি পরিষদীয় দল সূত্রে খবর, দূরদূরান্তের জেলা থেকে যাঁরা ওই কর্মসূচিতে যোগদান করতে চান, তাঁদের জন্য অতিরিক্ত রেলের কোচ সংযোজনের আবেদন রেলমন্ত্রীর কাছে জানাবেন শুভেন্দু। বাড়তি কোচে যে পরিমাণ মানুষ কলকাতা থেকে যাতায়াত করবেন, তাঁদের জন্য টিকিটের বন্দোবস্ত করবেন বিরোধী দলনেতা। সেই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করতে রেলমন্ত্রীর দ্বারস্থ হবেন তিনি। এও জানা গিয়েছে, নবান্ন অভিযানের কর্মসূচির পাশাপাশি রাজ্যে চলা বেশ কিছু রেল প্রকল্পের কাজ নিয়েও রেলমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারেন নন্দীগ্রাম বিধায়ক। আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা রেল-নির্ভর মানুষের দাবি দাওয়া প্রসঙ্গেও কথা হতে পারে দু’জনের মধ্যে। রাজ্যের যে সব রেল প্রকল্পের জন্য বিজেপির ভোটবাক্সে লাভ হতে পারে, সে বিষয়টি নিয়ে মূলত আলোচনা হতে পারে শুভেন্দু-বৈষ্ণবের মধ্যে। রাজ্য বিজেপির তরফে মনে করা হচ্ছে, শুধুমাত্র রেলমন্ত্রীর সঙ্গেই নয়, বিরোধী দলনেতার এই ঝটিকা সফরে বিজেপির বেশ কিছু শীর্ষ নেতার সঙ্গেও বৈঠক করতে পারেন তিনি। এ ক্ষেত্রে, সুকান্ত মজুমদারকে সরিয়ে শমীককে সভাপতি করার পর রাজ্য সংগঠনের যে রদবদল হবে, সে বিষয় নিয়েও আলোচনা হতে পারে শুভেন্দুর সঙ্গে। কারণ, পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির সবচেয়ে পরিচিত মুখ তিনিই। তাই তাঁর মতামত নিয়েই পশ্চিমবঙ্গের সংগঠনের ঘুঁটি সাজাতে চায় সর্বভারতীয় বিজেপি নেতৃত্ব। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটের রণকৌশল সাজাতে চায় বিজেপি। সে বারের ভুলের পুনরাবৃত্তি যাতে না হয়, সেই বিষয়ে প্রথম থেকেই রাজ্যের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে এগোতে চাইছে বিজেপির সর্বভারতীয় নেতৃত্ব।