শিশু সহ রাশিয়ান মা’কে খুঁজে বার করার নির্দেশ

IMG-20250717-WA0121

নিজের সন্তান সহ উধাও রাশিয়ান মহিলা। এবার শিশু সহ সেই রাশিয়ান মহিলাকে পাকড়াও করার জন্য কেন্দ্রকে কড়া নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। এই রাশিয়ান মহিলার বিয়ে হয়েছিল চন্দননগরের সৈকত বসুর সঙ্গে। তাদের একটি সন্তানও রয়েছে। কিন্তু সেই সন্তানকে নিয়েই উধাও হয়ে যান ওই রাশিয়ান মহিলা। এরপরেই এই ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল চন্দননগরের বসু পরিবার। বৃহস্পতিবার সেই মামলার শুনানিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এবং বিদেশ মন্ত্রককে লুকআউট নোটিস জারি করতে বলেছে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ। দিল্লির পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, শিশুটিকে খুঁজে বার করে তার বাবার হাতে তুলে দিতে হবে। একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক, বিদেশ মন্ত্রককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, অভিযুক্ত রুশ মহিলার বিরুদ্ধে লুক আউট নোটিস জারি করতে হবে। কোনও ভাবেই তিনি যাতে দেশ ছেড়ে যেতে না পারেন, তা নিশ্চিত করতে হবে।শীর্ষ আদালতের নির্দেশ, দেশের প্রত্যেক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের এন্ট্রি, এক্সিট পয়েন্টের সিসিটিভি চেক করতে হবে। রুশ মহিলার পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করতে হবে। অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল ঐশ্বর্য ভাট্টি আদালতে জানান, কেন্দ্র সরকার সবরকম সহযোগিতা করবে। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টে রিপোর্ট দেবে দিল্লি পুলিশ। তার পরে দুপুরে জরুরি ভিত্তিতে ফের এই মামলার শুনানি হবে। হুগলি জেলার চন্দননগরের বোসপাড়ার বাসিন্দা সৈকত বসু। বিদেশে কাজের সূত্রে তাঁর সঙ্গে আলাপ হয়েছিল ভিক্টোরিয়ার। তাঁরা বিয়ে করেন। ২০২০ সালে তাঁদের সন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু সংসারে নানা অশান্তির কারণে একটা সময়ের পর স্বামী-স্ত্রী আলাদা থাকতে শুরু করেন। দীর্ঘ দিন ধরেই ছেলের হেফাজত নিয়ে বাবা এবং মায়ের আইনি লড়াই চলছিল। আদালতের নির্দেশে তিন দিন ছেলেকে নিজের কাছে রাখার অনুমতি পেয়েছিলেন রাশিয়ান মহিলা। সপ্তাহের বাকি দিনগুলিতে শিশুর তার বাবার কাছে থাকার কথা ছিল। অভিযোগ, ৭ জুলাই স্কুলের সময়ের পর থেকে শিশু বা তার মায়ের কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। মহিলার আইনজীবীরাও বাবাকে নানা ভাবে বিভ্রান্ত করছেন বলে অভিযোগ। এরপরেই গোটা বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় বসু পরিবার। শিশুর বাবার আইনজীবী জানিয়েছেন, রাশিয়ান মহিলাকে শেষ বার দেখা গিয়েছিল গত ৪ জুলাই। পিছনের দরজা দিয়ে তিনি দিল্লিতে রাশিয়ান দূতাবাসে প্রবেশ করেছিলেন বলে অভিযোগ। সেখানকার এক কূটনীতিক তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁদের মধ্যে সম্পর্ক রয়েছে বলেও দাবি করা হয়েছে। উল্লেখ্য, আদালতে মহিলার আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু মহিলা বা তাঁর সন্তান কোথায়, সে বিষয়ে তাঁরা স্পষ্ট করে কোনও উত্তর দেননি। আদালতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন শিশুর বাবা এবং ঠাকুরমা। সৈকত বলেন, ‘‘আমার ছেলের বয়স চার বছর আট মাস। কিন্তু ওর মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা চলে এসেছে এই বয়সেই। নিজেকে নিজে আঘাত করতে শুরু করে দিয়েছিল ও। বলত, আমি ওদের সঙ্গে থাকতে চাই না। মনে হয়, জানলা থেকে ঝাঁপ দিই। আদালতের নির্দেশে আমি আশ্বস্ত হয়েছি। দেশের বিচারব্যবস্থার প্রতি আমার আস্থা আছে। আশা করছি, আমার ছেলেকে খুঁজে পাওয়া যাবে।’’ শিশুর ঠাকুরমা বলেন, ‘‘বাচ্চাটা আমাকে খুব ভালবাসে, আমাকে ছাড়া কিছু বোঝে না। দিল্লিতে নিয়ে আসার পর থেকে আমি কখনও আট মাস, কখনও আড়াই মাস এসে এখানে থেকে গিয়েছি। এখন ঘরটা খাঁ খাঁ করছে। আমি থাকতে পারছি না। আমাদের খাওয়া-ঘুম উড়ে গিয়েছে।’’

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement