ভদ্রেশ্বর: ক্লাসরুমের জানলা, শৌচাগারের কল, ল্যাবরেটরি, মাইক্রোফোন- যেখানে সেখানে হাত লেগে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েছেন ছাত্র, শিক্ষকেরা। স্কুলভবনের নানা প্রাপ্ত বিদ্যুৎ পরিবাহী হয়ে পড়েছে। চেষ্টা করেও ধরা যাচ্ছে না, কোথা থেকে ঘটছে বিপত্তি। এই পরিস্থিতিতে ছেলেমেয়েদের কয়েক দিন ধরে স্কুলে পাঠাতেই সাহস পাচ্ছেন না অভিভাবকেরা। বিপদ এড়াতে ভদ্রেশ্বরের রবীন্দ্র স্মৃতি (স) বিদ্যানিকেতন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। গত শুক্রবার থেকে বন্ধ পঠনপাঠন। তার আগেও একাধিক দিন স্কুল ছুটি দিতে হয়েছে। স্থানীয় চঁপদানীর বিধায়ক অরিন্দম গুঁইন জানান, পূর্ত দফতর জানিয়েছে, তারের ওয়্যারিং পুরো বদলাতে হবে। তারা খরচ ধার্য করলেই দ্রুত সংস্কারের চেষ্টা করা হবে। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে চিঠি লিখে বিষয়টি জানিয়েছেন বিধায়ক। ১৯৬১ সালের পুরনো স্কুলটিতে বর্তমান ছাত্রছাত্রী সাড়ে পাঁচশোর বেশি। অনেকেই প্রথম প্রজন্মের পড়ুয়া। ২৫ জুন ক্লাসরুমের জানলায় বিদ্যুতের শক লাগে একাদশ শ্রেণির ছাত্র অমূল্যভূষণ মিত্রের। স্কুল ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়। পর দিন স্কুল বন্ধ রেখে মিস্ত্রি ডাকা হলেও লাভ হয়নি। ২৭ তারিখ রথের ছুটি ছিল। পর দিন মাইক্রোফোনে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন প্রধান শিক্ষক দেবাশিস বসু। ৩০ তারিখ সিঁড়িতে ওঠার মুখে দেওয়ালে তড়িদাহত হয় অষ্টম শ্রেণির শেখ সমীর।বিদ্যালয়ের তরফে পরিস্থিতির কথা জেলাশাসক, জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক)-সহ নানা দফতরে জানানো হয় ই-মেল করে। চন্দননগর মহকুমা প্রশাসনের এক আধিকারিক, পূর্ত (বৈদ্যুতিক) দফতরের ইঞ্জিনিয়ার স্কুলে আসেন। কিন্তু সমস্যার উৎসস্থল ধরা যায়নি। ৩ তারিখ শৌচাগারের কলে হাত দিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় এক ছাত্র। স্কুলের প্রধান শিক্ষক দেবাশীস বসু বলেন, আমরা সকলেই ভয়ে রয়েছি। অভিভাবকদের নিয়ে বৈঠক করেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। অভিভাবকেরা দাবি করেন, প্রয়োজনে স্কুল বন্ধ দ্রুত সমস্যা মেটানো হোক। শিক্ষক-শিক্ষিকারাও একই অভিমত জানান। ওই দিনই পরিচালন সমিতির বৈঠকে এক সপ্তাহ স্কুল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে সমস্যা কবে পুরোপুরি মিটবে, তা নিয়ে চিন্তায় স্কুল কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি তাঁরা স্কুলশিক্ষা দফতর, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাসংসদ, শিক্ষামন্ত্রীর আপ্ত সহায়ককেও লিখিত চিঠি দেওয়া হয়। বড় বিপদ না হলেও স্যুইচ বোর্ডে হাত দিলেই কারেন্ট লাগছিল। স্কুলভবন জীর্ণ। ফাটল ধরেছে। বৃষ্টিতে তিন তলা থেকে জল চুঁইয়ে পড়ছে।