বিধানসভায় তুলকালাম, চার বিজেপি বিধায়ক সাসপেন্ড

maxresdefault (2)

সপ্তর্ষি সিংহ

নজিরবিহীন ঘটনার সাক্ষী বিধানসভা। হাতাহাতি, চেয়ার-মাইক, লাইট ভাঙচুরের ঘটনায় সোমবার উত্তপ্ত হয়ে উঠল বিধানসভার অধিবেশন কক্ষ। চার বিজেপি বিধায়কের সাসপেন্ড ঘিরে উত্তাল হয় পরিস্থিতি। অগ্নিমিত্রা পাল, দীপক বর্মণ, মনোজ ওঁরাও এবং শঙ্কর ঘোষকে বার করে দেওয়ার জন্য মার্শাল ডাকেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। এই ঘটনার প্রতিবাদ শুরু হয়। বিজেপি বিধায়ক অশোক লাহিড়ীর একটি বক্তব্য কার্যবিবরণী থেকে বাদ দেওয়াকে কেন্দ্র করে শুরু হয় বিক্ষোভ। স্পিকারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিজেপি বিধায়করা ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ শুরু করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় ওই চার বিধায়ককে পুরো অধিবেশনের জন্য সাসপেন্ড করার নির্দেশ দেন। এর আগে বিধানসভা চলাকালীন গত সোমবার সাসপেন্ড হয়েছিলেন বিজেপি বিধায়ক মনোজ ওঁরাও। এবার সরাসরি এই অধিবেশনের জন্য সাসপেন্ড হলেন চার পদ্ম বিধায়ক। তবে এদিন চার বিধায়ককে সাসপেন্ড করলেও অধিবেশন ওয়াকআউট না করে শাসকের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকে বিজেপি। সেই সময় তাদের টেনেহিঁচড়ে সভা কক্ষ থেকে বের করে দেন মার্শাল। অভিযোগ, রক্ষীদের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কিতে কক্ষেই পড়ে যান বিজেপির পরিষদীয় দলের নেতা শঙ্কর ঘোষ।
বিজেপি বিধায়ক অভিযোগ করেন, তাঁর চশমা ধাক্কাধাক্কিতে ভেঙে গেছে। এরপরেই অধিবেশন কক্ষ থেকে ওয়াকআউট করেন তাঁরা। বিজেপি বিধায়কদের বক্তব্য এক্সপাঞ্জ বা মুছে ফেলা হয়েছে বলে প্রশ্ন তোলেন বিধায়ক অশোক লাহিড়ী। তখনই শাসকদলের তরফে রাজ্যের প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য উঠে দাঁড়িয়ে বলেন, অধ্যক্ষের সিদ্ধান্তেই বিজেপি বিধায়কদের বক্তব্য এক্সপাঞ্জ করা হয়েছে। অশোক লাহিড়ি বলেন, কোন আইনে তাঁর বক্তব্য বাদ দেওয়া হল, তা অধ্যক্ষকে জানাতে হবে। এরপরই কক্ষে শুরু হয়ে যায় তুমুল বিক্ষোভ।
তবে সেই সময় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী কক্ষে ছিলেন না। পরে বিজেপি বিধায়কদের কথা শোনার পর স্পিকারের কাছে ছুটে যান। বিজেপি বিধায়করা যখন বাইরে বেরিয়ে বারান্দায় ধরনায় বসেছিলেন, তখন শুভেন্দু একাই অধিবেশন কক্ষে স্পিকারের সঙ্গে বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন।
বিক্ষোভ প্রসঙ্গে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “আমরা স্পিকারের টেবিলের সামনে শঙ্কর ঘোষের চশমা, শান্তনু প্রামাণিকের চশমা ও সুব্রত মৈত্রের ঘড়ি প্রামাণ্যস্বরূপ রেখেছি। স্পিকার আমাকে প্রথমে বললেন বেরিয়ে যান। তারপর নিরাপত্তারক্ষী ডেকে বলছেন, ওকে বার করে দাও। সিকিউরিটি মার্শাল আমাকে গোল করে ঘিরে ধরে। ২০ জন মহিলা সিকিউরিটি দিয়ে সার্কেল করে রাখা হয়। ওরা চেয়েছিল আমি মহিলা নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে হাতাহাতি করি। কিন্তু আমি আমার দুটো হাত ট্রাউজারের পকেটে ঢুকিয়ে রাখি। আমি ঠিক করেই রেখেছিলাম, আমি হাত বার করব না। আমি চাই, যাতে ধাক্কা মেরে জোর করে আমাকে বার করে দেওয়া হয়। ১৫ মিনিট ধরে দাঁড়িয়ে ধরনা চালিয়েছিলাম।”

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement