ইরানে হামলা আমেরিকার

डाउनलोड करें

আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠল পশ্চিম এশিয়া। ইজরায়েল ও ইরানের সংঘর্ষে এবার ঢুকে পড়ল আমেরিকাও।ইরানে হামলা চালাল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। রবিবার ভোরে আকাশপথে ইরানে হামলা চালায় মার্কিন সেনা। ইরানের তিনটি পরমাণুঘাঁটি লক্ষ্য করে চলে হামলা। এই হামলায় ইরানের ফোরডো, নাতান্‌জ় ও ইসফাহানে থাকা তিন পরমাণুকেন্দ্র ধ্বংস হয়ে গিয়েছে বলে দাবি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইরানে হামলা চালানোর পর ট্রাম্প জানিয়েছেন, আমেরিকার সেনাবাহিনী ইরানের ফোরডো, নাতান্‌জ় ও ইসফাহানে অবস্থিত তিনটি পরমাণুকেন্দ্রে সফল ভাবে হামলা চালিয়েছে। ট্রাম্পের দাবি, ফোরডোয় বোমা নিক্ষেপ করে সমস্ত মার্কিন বিমান নিরাপদে দেশে ফিরেছে। আমেরিকান সেনাবাহিনীকে অভিনন্দন জানিয়ে ট্রাম্প জানান, অন্য কোনও দেশের সেনাবাহিনী এখনও পর্যন্ত এই ধরনের অভিযান চালাতে পারেনি। ট্রাম্পের বার্তা, ‘‘এখন শান্তির সময়।’’ জানা গিয়েছে, ইরানের ফোরডো পরমাণুকেন্দ্রে ছ’টি ‘বাঙ্কার বাস্টার’ বোমা ফেলা হয়েছে। তা ফেলার জন্য বি ২ স্পিরিট বোমারু বিমান ব্যবহার করেছে আমেরিকা। যে বিমান ১৫ টন ওজনের বোমা বহনে সক্ষম। শুধু ‘বাঙ্কার বাস্টার’ই নয়, আমেরিকার নৌবাহিনীও টোমাহক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইরানের দু’টি পরমাণুকেন্দ্র নাতান্‌জ় এবং ইসফাহানে হামলা চালায় বলে সাংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর।
ইরানের বিরুদ্ধে আমেরিকা সরাসরি অস্ত্র ধরবে কি না, সে বিষয়ে দু’সপ্তাহের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানিয়েছিলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বৃহস্পতিবারই এ কথা ঘোষণা করেছিলেন তিনি। কিন্তু ট্রাম্পের সেই ঘোষণার ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই ইরানের সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধে জড়াল আমেরিকা।ইরানের বিরুদ্ধে আমেরিকার এই হামলায় নানা মহলে প্রশ্ন ঘুরতে শুরু করেছে, তা হলে ট্রাম্প যে দু’সপ্তাহ সময়ের কথা বলেছিলেন, সেটা কি কৌশল ছিল আমেরিকর? বার বারই ট্রাম্প ইরানকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, পরমাণু কর্মসূচি থেকে নিজেদের নিরস্ত রাখতে। কিন্তু ইরান সাফ জানিয়ে দিয়েছে, সেটা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তবে তারা আলোচনায় বসতে রাজি, এ কথাও জানায়। তার পরই সুইৎজ়ারল্যান্ডের জেনেভায় ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং জার্মানির প্রতিনিধিদের সঙ্গে শুক্রবার বৈঠকে বসতে সম্মত হয় ইরান। তেহরান স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, সমঝোতা নয়, আলোচনায় রাজি তারা। ইউরোপের দাবি ছিল, পরমাণু অস্ত্র বিসর্জন দিতেই হবে ইরানকে। ইরানও পাল্টা জানায়, ইজ়রায়েল হামলা বন্ধ না করলে শান্তি আলোচনা এগিয়ে নিয়ে যাবে না তারা। ইজ়রায়েলের পাশে দাঁড়িয়েও দু’দেশের এই সংঘাত থেকে কিছুটা দূরত্ব বজায় রেখেই চলছিল আমেরিকা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মুখে ইরানকে মোক্ষম জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারি বার বার শোনা গেলেও সরাসরি সংঘাতে যাওয়ার বিষয়ে খুব বেশি কিছু ইঙ্গিত দেননি ট্রাম্প।
ইরানের উপর চাপ সৃষ্টি করে যদি কোনও ভাবে তাদের নতিস্বীকার করতে বাধ্য করা যায়, সেই রাস্তাতেই হাঁটছিল আমেরিকা। কিন্তু ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেই যে নতিস্বীকার করার মানুষ নন, ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি এবং ইজ়রায়েলের মুহুর্মুহু হামলার মুখে পড়েও সেই বার্তাই দিচ্ছেন তিনি। ইরানকে বাগে আনতে না পেরেই কি সেদেশে হামলা চালালো আমেরিকা? সেই প্রশ্নও উঠছে নানা মহলে। শুক্রবার জেনেভা বৈঠকে আমেরিকার প্রতি ইরানের বার্তা ছিল, ইজ়রায়েল হামলা না থামালে আমেরিকার সঙ্গে ইউরেনিয়াম চুক্তি নয়। তারপরেই আমরিকার এই হামলা। তবে রবিবার ইরানের পরমাণুকেন্দ্রগুলিতেই আমেরিকা একাই হামলা চালিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ইরানের সেনাবাহিনী। অন্য দিকে, ইরানের সঙ্গে সংঘাত অব্যাহত ইজ়রায়েলের। নেতানিয়াহু বাহিনীর মূল লক্ষ্য ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক ঘাঁটি। সূত্রের খবর, ইজ়রায়েলের দিকেও কয়েক ডজন ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইরান।

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement