রাজ্য সড়ক সম্প্রসারণে কাটা হবে গাছ, চিন্তিত পরিবেশবিদ সহ পরিবেশ প্রেমী ও পরিবেশ কর্মীরা

1750424696649

হাওড়া: রাজ্যব্যাপী উন্নয়নের কর্মযজ্ঞ চলছে। রাজ্যের গ্ৰাম বাংলার পাড়ায় পাড়ায় রাস্তা গুলো ঢালাই হচ্ছে। রাজ্যের সড়ক পথের রাস্তা নির্মাণ, সম্প্রসারণ হচ্ছে। এই রাস্তা নির্মাণ ও সম্প্রসারণের ফলে গাছ কাটা পড়ছে। হাওড়ার রাজ্য সড়ক পথ নির্মাণ ও সম্প্রসারিত হবে। এর ফলে কাটা পড়বে সড়ক পথের দু ‘ ধারে থাকা অসংখ্যক গাছ। এই জন্য চিন্তায় পড়েছেন পরিবেশবিদ সহ পরিবেশ প্রেমী ও পরিবেশ কর্মীরা। সূত্র মারফৎ জানা গেছে হাওড়ার ধূলাগড়ি থেকে ফটিকগাছি পর্যন্ত রাজ্য সড়ক পথের রাস্তা নির্মাণ ও সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত গ্ৰহণ করা হয়েছে। এই সড়ক পথে প্রায় পনেরো কিলোমিটার রাস্তার দু’ ধার জুড়ে আছে অসংখ্যক গাছ।রাস্তা নির্মাণ ও সম্প্রসারণের জন্য যে সমস্ত গাছ গুলো কাটা হবে সেই গুলো চিহ্নিত করে মার্কিং করা হয়েছে। কয়েক বছর আগে আম্ভান ঝড়ে বড় বড় গাছ উপড়ে পড়ে গিয়েছিল। কিছু কিছু গাছ ভেঙে পড়েছিল। উপড়ে পড়া ও ভেঙে যাওয়া গাছ গুলো কাটা হয়েছিল। এলাকার পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল। সেই ক্ষত আজ ও কোনো ভাবেই পুরণ হয় নি। কারণ যে গাছ গুলো কাটা হয়েছিল সেখানে নতুন করে কোনো গাছই বসানো হয় নি। রাজ্য সড়ক পথের প্রায় পনেরো কিলোমিটার জুড়ে রাস্তা নির্মাণ ও সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত গ্ৰহণ করা হয়েছে এই পনেরো কিলোমিটার অংশে গাছের সংখ্যা বেশি। যে গাছ গুলো কাটার জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে বট, অশথ্ব, নিম, বাবলা, শিরিষ, আকাশমণি, কৃষ্ণচূড়া সহ অসংখ্যক গাছ। রাস্তা নির্মাণ ও সম্প্রসারণের জন্য গাছ কাটার সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে পরিবেশবিদ, পরিবেশ প্রেমী, পরিবেশ কর্মীদের অভিমত, “উন্নয়ন যজ্ঞকে হাতিয়ার করে গাছ নিধন করার কাজ চলছেই। বর্তমানে তো বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তির মাধ্যমে গাছকে অন্য জায়গায় প্রতিস্থাপন করা যায়। তাহলে এই ক্ষেত্রে সেই প্রযুক্তির সাহায্যে তো নেওয়া যেতেই পারে?’ এই প্রসঙ্গে প্রশাসন এর আধিকারিকরা জানান, রাস্তা নির্মাণ ও সম্প্রসারণের জন্য বন দফতরের অনুমতি নিয়েই গাছ কাটা যেতেই পারে। সেক্ষেত্রে নিয়মানুযায়ী একটি গাছ কাটা হলে অন্তত পাঁচটি গাছ বসাতে হবে।যে প্রজাতির গাছ কাটা হবে সেই প্রজাতির গাছ বসাতে হবে।” কিন্তু এই নিয়ম সরকারি – অসরকারি ভাবে অনেক সময়েই পালন করা হয় না বলে অভিযোগ রয়েছে। পরিবেশ প্রেমী ও পরিবেশ কর্মী শুভ্রদীপ ঘোষ, সুমন পাল, রাজদূত সামন্তরা বলেন, “বর্তমানে উন্নয়নের দাপটে যানবাহনের সংখ্যা বাড়ছে। পরিবারের সংখ্যা বাড়ছে, দোকান এর সংখ্যা বাড়ছে, কলকারখানা তৈরি হচ্ছে। এর জন্য গাছ কেটে,খাল – বিল, পুকুর বুজিয়ে নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে। গাড়ির ধোঁয়া থেকে প্রচুর কার্বণ বের হয়।গাছ সেই কার্বণ অনেকটাই টেনে নেয়।গাছ ভূমিক্ষয় রোধ করে। বৃষ্টি, বন্যা বা অন্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে রাস্তা ধসে পড়ে না।গাছ প্রচুর অক্সিজেন দেয় – তা গ্ৰহণ করে মানুষ বেঁচে থাকে। বিশুদ্ধ বাতাস গ্ৰহণে মানুষ সুস্থ থাকে। গাছের হাওয়ায় মানুষ গরমে হাত থেকে রেহাই পায়। গাছ কাটলে সেই গাছে বসবাসকারী পাখি – কীটপতঙ্গ আশ্রয়হীন হয়ে পড়ে। মারা পড়ে।’ খাল – বিল, পুকুর বুজিয়ে ফেলার ফলে তাতে বসবাসকারী মাছ মারা পড়ে। অনেক মাছ বিলুপ্ত হওয়ার তালিকাভুক্ত হয়ে পড়ে। গাছ কাটার ফলে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় ক্ষতি হয়।” রাজ্য সড়কে রাস্তা নির্মাণ ও সম্প্রসারণের জন্য গাছ কাটার সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে হাওড়া জেলা পরিষদ এর পূর্ত দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “গাছ কাটার জন্য বন দফতরের অনুমতি নেওয়া হয়েছে। সরকারি নিয়মানুযায়ী একটি গাছ কাটার জন্য পাঁচটি গাছ লাগানো হবে। এর ফলে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় কোনো ক্ষতি হবে। উপরন্তু এলাকার ও উন্নয়ন হবে। গাছের সংখ্যার বৃদ্ধি পাবে। এলাকার মানুষ বেশি বেশি করে বিশুদ্ধ বাতাস পাবে। মানুষ সুস্থ থাকবে।

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement