বাংলাকে নিয়ে বঞ্চনার খেলা খেলবেন না। আমাদের প্রাপ্য আমরা পাই না। রাজ্যের প্রতি কেন্দ্রীয় বঞ্চনা নিয়ে নরেন্দ্র মোদীর সরকারকে সরাসরি আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দীর্ঘ দিন ধরেই কেন্দ্রীয় বঞ্চনা নিয়ে সরব হয়ে বহু কর্মসূচিও করেছে তৃণমূল কংগ্রেস।ফের এবার রাজ্যের বিভিন্ন প্রকল্পে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগ নিয়ে ফের বিধানসভায় সরব হলেন মমতা। তিনি বলেন, “গত চার বছরে ১০০ দিনের কাজের টাকা আমাদের দেওয়া হয়নি। কেন্দ্রীয় বরাদ্দ বন্ধ করা অপরাধ। আমাদের টাকা অন্য রাজ্যকে দেওয়া হয়েছে, যা অপরাধ। কিছু অভিযোগ থাকতেই পারে। ১৫৫-১৫৬টি কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল রাজ্যে এসেছিল। তারা যা জানতে চেয়েছে, তার ব্যাখ্যাও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাসত্ত্বেও কোনও টাকা দেওয়া হয়নি রাজ্যকে। মমতার বক্তব্য, গুজরাত, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশের মতো বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতেও অনেক অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু সেখানে কোনও কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল বা কমিশন পাঠানো হয় না। তিনি বলেন, “কাজ করালে টাকা দিতে হবে। এটা দস্তুর। আমাদের টিম দেখা করতে গিয়েছিল। তাদের সময় দিয়েও দেখা করেনি। উল্টে কেস করে দিয়েছে। কেন্দ্র টাকা দেয়নি, বাংলা টাকা দিয়েছে। ওঁরা আমাদের টাকা দেবেন না। এটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত।” এদিন এক নিশ্বাসে কথাগুলো কক্ষে দাঁড়িয়ে বলে যান মমতা। গত চার বছরে গ্রামীণ রাস্তা এবং আবাস প্রকল্পেও রাজ্যকে কোনও টাকা দেওয়া হয়নি বলে ফের সংযোযন করে অভিযোগ করেন মমতা।বিধানসভার প্রথমার্ধে প্রশ্ন উত্তর পর্বে বালুরঘাটের বিজেপি বিধায়ক অশোক লাহিড়ী রাজ্যকে আর্থিক বঞ্চনা প্রসঙ্গে তথ্য জানাতে চেয়েছিলেন। ওই সময়েই অশোক লাহিড়ীর প্রশ্নের উত্তরে আক্রমনাত্মক মমতা বলেন, আশা করি অর্থনীতি আপনি আমাদের থেকে ভাল বোঝেন। কিন্তু যে প্রশ্নটা আপনি করলেন, এটা আপনি বাজেটে বলতে পারতেন। আমার অর্থমন্ত্রী উত্তর দিতে পারতেন। এটা বাজেট এবং অর্থনীতি সংক্রান্ত প্রশ্ন। এই প্রশ্নের সঙ্গে আলোচনার কোনও যোগ নেই। বাংলার জন্য বরাদ্দ টাকাকে কেন অন্যত্র পাঠানো হচ্ছে, তা নিয়েও অশোককে প্রশ্ন করেন মমতা। মূলত ২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই একশো দিনের কাজের বরাদ্দ টাকা থেকে রাজ্য বঞ্চিত থাকলে গ্রাম বাংলার মানুষকে বঞ্চনা থেকে বাঁচাতে রাজ্যকে প্রবল চাপের মুখে পড়তে হবে।কারণ শুধু একশো দিনই তো নয়, আবাস যোজনার টাকাও রাজ্যকে নিজের কোষাগার থেকেই দিতে হচ্ছে। রাজ্যের মানুষকে বঞ্চনার মুখ থেকে বাঁচাতে রাজ্যের কোষাগারের যে প্রবল চাপ সামলাতে হবে তা কার্যত চাপ বাড়াবে রাজ্যের উপর বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।