শেষ বারের মতো সতর্ক করা হল হুমায়ুন কবীরকে।আর এক বার শৃঙ্খলা ভঙ্গে করলেই কি বহিষ্কার করা হবে হুমায়ুনকে?না এর উত্তর এখনো না মিললেও হুমায়ুন আছে হুমায়ুনেই। কারণ শুক্রবার বিধানসভায় নিজের ঘরে ডেকে তাঁকে শেষ বারের মতো সতর্ক করেছেন বিধানসভার পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়।হুমায়ুন সম্প্রতি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এবং প্রকাশ্যে এমন কিছু মন্তব্য করেছেন, যার জেরে দল অস্বস্তির মুখে পড়েছে।শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশ মেনেই কড়া পদক্ষেপ করেছে শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি বলেও তৃণমূল সূত্রের খবর। এ বারের মতো না শুনলে হুমায়ুনের বিধায়ক পদ সংক্রান্ত বিষয়ে পদক্ষেপ করা হতে পারে বলেও জানা সূত্রের খবর।তবে তৃণমূলের ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীরকে এর আগেও বিধানসভার শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি ডেকে পাঠিয়েছিল।তখন স্বশরীরে পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের ঘরে হাজির হয়ে ক্ষমাও চেয়েছিল ভরতপুরের এই বিধায়ক। তারপরে ফের এদিনের সতর্কিকরণ কার্যতই তৃতীয় বার বলেই তৃণমূল সূত্রের খবর।প্রশ্ন হল কেনো তৃতীয়বারের এই সতর্কিকরণ গুরিত্ত্বপূর্ণ? কারণ গত বছর কালীঘাটে জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন, দলীয় শৃঙ্খলা না মানলে প্রথমে শো কজ় করা হবে। সংশ্লিষ্ট নেতাকে জবাব দিতে হবে। পর পর তিন বার একই ঘটনা ঘটলে ওই নেতাকে বহিষ্কার করা হবে তৃণমূল থেকে। মমতার সেই বার্তার পর এই নিয়ে তৃতীয় বার হুমায়ুনকে শো কজ় করলেছে তৃণমূল পরিষদীয় শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি।আর তাই প্রশ্ন, এর পর একই ঘটনা ঘটলে কি হুমায়ুনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে?তৃণমূলের এক সূত্রের খবর, মুর্শিদাবাদের ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুনকে যে নোটিসটি দেওয়া হয়েছে, সেখানেও লাস্ট এবং ফাইনাল ওয়ার্নিং কথাটা লেখা রয়েছে। পরে অবশ্য বিধানসভায় নিজের ঘরে শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন ,এটা লাস্ট ওয়ার্নিং। তবে এতকিছুর পরেও কিন্তু ভাবলেশহীন হুমায়ুন কবীর।
তৃতীয় বার নোটিস পাওয়ার পর শুক্রবার হুমায়ুন বলেন, ফাইনাল ওয়ার্নিং না সেমি ফাইনাল, ও সব আমি বুঝি না। এ ব্যাপারে আমি প্রকাশ্যে কিছু বলব না।তারপরেই ভরতপুরের বিধায়ক বলেন, তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য দল করেন।উনি যদি বলেন হুমায়ুন দলের জন্য ক্ষতিকারক বা তাঁর জন্য দলকে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে।বা মমতা যদি তাঁকে দল করতে বারণ করেন, তবেই তিনি সরে যাবেন। বাইরে যারা দলের খারাপ চায়, তাদের বিরুদ্ধে কথা বলায় যদি শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি নোটিস দেয়,তিনি তার জবাব দেবেন। এর আগে হুমায়ুন যখন শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির সামনে সশরীরে হাজিরা দিয়েছিলেন তখন তাঁকে বার্তা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তার পরেও হুমায়ুনের আচরণে বদল আসে নি।তাই এ বার কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে। তাঁকে যে নোটিসটি দেওয়া হয়েছে সেখানে শোভনদেবের পাশাপাশি সই রয়েছে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, ফিরহাদ হাকিম এবং চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের।বিধানসভা অধিবেশন শুরুর প্রথমার্ধে তাঁকে কড়া সতর্কবার্তা দেওয়ার পরেই ফের বিধানসভা কক্ষে বিজেপি বিধায়কদের উদ্দেশ্যে আপত্তিজনক মন্তব্য করেন হুমায়ুন। এমনকি তাঁর মনৃতব্যের জেরে বিরোধী দলের মুখ্য সচেতক শংকর ঘোষ অধ্যক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ ও জানাতে চলেছেন বলে বিধানসভা সূত্রের খবর।তারপরেই শোভনদেব বলেন, এর আগেও সতর্ক করা হয়েছিল। তার পরেও উনি এমন কিছু কথা বলছেন, যার জেরে দলের শৃঙ্খলাভঙ্গ হয়েছে। বার বার বলা সত্ত্বেও হচ্ছে না, তাই ওয়ার্নিং দেওয়া হয়েছে। এর পর দল সিদ্ধান্ত নেবে।