সেনাকে সম্মান জানিয়ে বিজেপিকে তোপ মুখ্যমন্ত্রীর 

IMG-20250610-WA0065

পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার  বদলা নিতে পাকিস্তানের মাটিতে অপারেশন চালিয়ে জঙ্গি শিবির গুঁড়িয়ে দিয়েছিল ভারতীয় সেনা। সেনাবাহিনীর প্রতি সম্মান জানাতে মঙ্গলবার রাজ্য বিধানসভায় প্রস্তাব পেশ করা হয়। সেই সময় বক্তব্য রাখতে গিয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীর পরাক্রমকে শ্রদ্ধা জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেনাবাহিনীকে সম্মান জানানোর পাশাপাশি বিজেপিকে নিশানা করেন তিনি।  মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যে জঙ্গিরা এলো, কোথা থেকে এলো, কতদিন ছিলো, মেরে দিয়ে চলে গেলো। ক‌ই তাদের একজনকেও তো ধরা গেল না’। বিজেপিকে নিশানা  করে তাঁর প্রশ্ন, ‘এই সময়‌ই তো সুযোগ ছিল পাক অধিকৃত কাশ্মীর দখল করে নেওয়া যেত। কেন করা হল না?’মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘কয়েকদিনের জন্য হলেও একটা শিক্ষা দেওয়ার দরকার ছিল। সন্ত্রাসবাদ কোনো ধর্ম নয়, জাতি নয়, এটা একটা আলাদা বাদ। আমি মধ্যপ্রদেশের এক নেতার কথা বলব, তাঁর নাম নেব না। তিনি বলেছেন মেয়েরা কেন জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াই করল না’?  মুখ্যমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তান এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কের লোন পেল। দেশের ডিপ্লোমেসির কি হল? যদিও আমাদের দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে আমি জানি। তিনি ভালো মানুষ’। মঙ্গলবার সেনাবাহিনীকে কুর্নিশ জানাতে বিধানসভা প্রস্তাব আনেন স্পিকার বিমান বন্দ্য়োপাধ্যায়। তারপরেই সেই প্রস্তাবের ওপর শুরু হয় আলোচনা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘এই প্রস্তাব আনার জন্য স্পিকারকে ধন্যবাদ। আমরা সন্ত্রাসবাদের সমর্থক নই। সন্ত্রাসবাদের কোনও ধর্ম নেই, বর্ণ নেই। পর্যটকদের ওপর যে ভাবে অত্যাচার হয়েছে, খুন হয়েছেন, তাঁদের জন্য শোকস্তব্ধ। তাঁদের পরিবারকে সমবেদনা জানাই। আমাদের রাজ্যের তিন জন মারা গিয়েছেন। হিন্দুদের প্রাণ বাঁচাতে গিয়ে মারা গিয়েছেন যিনি। তাঁকেও কুর্নিশ জানাই’। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এখানে অনেকে আছেন যারা এই বাংলায় জন্মেছেন,  তবু এই বাংলাকে সম্মান করেন না। বাংলায় যাঁরা জন্মেছেন, তাঁরা যদি বাংলার মাটিকেই মনে না রাখেন তাহলে কি হবে। সারাদেশের মধ্যে বাংলারই প্রথম যেখানে এই ঘটনার প্রেক্ষিতেই সেনাবাহিনীকে কুর্নিশ জানানো যাচ্ছে’। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘বাংলা প্রথম সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীকে নিয়ে আলোচনা করছে। তাদের ধন্যবাদ জানাই। ধর্মের পরিচয় জানতে চাওয়া হয়েছিল। আমি শুনেছি। আমাদের রাজ্যে তিন জন মারা গিয়েছেন। বাংলায় জন্মগ্রহণ করছেন যাঁরা, কেউ দেখছি উল্লেখ করছেন না। বাংলাকে ‘নেগলেক্ট’ করার কারণ নেই। স্বাধীনতা থেকে নবজাগরণে বাংলা পথ দেখিয়েছে।’’ এদিন বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পল বলেন, পুলওয়ামা কাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। জবাবে মমতা বলেন, ‘আপনি ফ্যাশন নিয়ে কথা বললে আমি শুনব,  কিন্তু আমাকে রাজনীতি নিয়ে জ্ঞান দেবেন না। ‘দিনের রাজনীতিবিদ! আপনার কীর্তি কলাপ আমি সব জানি’। এরপরই মুখ্যমন্ত্রীর ভাষা নিয়ে বিধানসভার স্পিকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ‘ছিঃ ছিঃ’ স্লোগান দিতে থাকেন বিজেপি বিধায়করাও। চুপ করে থাকেননি মুখ্যমন্ত্রী। শুভেন্দুকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘অপদার্থ বিজেপি দেশের সর্বনাশ। আপনি একজন বিরোধী দলনেতা, দেশের লজ্জা! মিথ্যার আঁস্তাকুড়! সামান্য ভদ্রতা জানে না। বিধানসভা মিথ্যা কথা বলছে! বাইরে এরা কী করে  কেন জানে’? বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের বিরোধিতা করেন। পাল্টা তাঁকে নিশানা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আপনাকে দেখে মনে হয় কিছু জানেন না। আমি প্রশ্ন করব। কারণ, দেশের নীতির প্রশ্ন। কাল যখন ক্ষমতায় থাকবে না, তখন দেখবেন আপনাদের চেপে ধরেছে। কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যর্থতায় হয়েছে। পুলওয়ামার পর রাজ্যপাল কথা বলেছিলেন। আমরা সিঁদুরকে সম্মান করি। আপনি মহিলাদের সম্মান করেন না। সিঁদুর নিয়ে প্রচার করে বেড়ান। যেখানে হামলা হয়েছে, কেন প্রধানমন্ত্রী যাননি? শুধু বাজার গরম করে বেড়াচ্ছে! আপনি নিজে লড়াই করেননি। আমাদের ঘরের ছেলেদের লড়াই করতে পাঠিয়েছেন।’’

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement