করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর বেলেঘাটা আইডি-তে প্রাণ যায় বছর ৪৮-এর এক ব্যক্তির। এরপর এই মৃত্যু করোনার কারণেই কি না তা নিয়ে ছিল ধোঁয়াশা। কারণ, করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হলে তা হবে বাংলায় করোনা আক্রান্তের দ্বিতীয় মৃত্যু। এদিকে রাজ্যের স্বাস্থ্য ভবনের দাবি, করোনার কারণে মৃত্যু হয়নি ওই ব্যক্তির। মৃতের চিকিৎসা সংক্রান্ত সকল নথি বিশ্লেষণ করে তারা জানিয়েছে, ওই ব্যক্তি করোনা আক্রান্ত হলেও, তার মৃত্যুর কারণ করোনা নয়। বরং তার শরীরে থাকা আরও অন্যান্য অসুখের কারণেই চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারেননি তিনি। আর সেই কারণেই প্রাণ যায় তাঁর।
উল্লেখ্য, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে ৫৪টি। যার জেরে বাংলা জুড়ে মোট সংক্রমিতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৭৪৭। অন্যদিকে, গোটা দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন সংক্রমিতের সংখ্যা ৩৫৮ জন। মোট অ্যাক্টিভ আক্রান্তের সংখ্য়া ৬ হাজার ৪৯১ জন।
সোমবার বাংলায় এই করোনা সংক্রমণ প্রসঙ্গে নবান্ন থেকে সাংবাদিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এই সাংবাদিক বৈঠক থেকে তাঁর স্পষ্ট বার্তা, পরিস্থিতি নিয়ে শঙ্কিত হওয়ার একেবারেই কিছু নেই। একইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী এদিন এই সাংবাদিক বৈঠকে এও বলেন, ‘করোনা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। স্বাভাবিক অবস্থাই বজায় থাকবে। প্যানডেমিক আর হবে না। তবে আগাম সতর্ক থাকাও ভাল।’ এর পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী এদিন এও বলেন, ‘ বর্ষা, গ্রীষ্মকালে মানুষের সর্দি-জ্বর বাড়ে। সেজন্য়ও অনেকে টেস্ট করাচ্ছেন। তবে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। মমতার কথায়, ‘করোনা এখনও ভয় পাওয়ার মতো জায়গাতে পৌঁছয়নি। আমরা কোভিড শুনলে ভয় পাই। প্রাইভেট হাসপাতালালে কী করছে জানি না। কিন্তু আমরা প্রস্তুতি সেরে রাখলাম। মহামারি হবে না। কারণ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলে দিয়েছে। এমনটা আমি শুনেছি। আমি ঠিক নাও হতে পারি। ক্রস চেক করে নেবেন।’ তবে যাদের কোমরবিডিটি রয়েছে তাদের সতর্ক থাকার বার্তা দেন মমতা। বলেন, ‘কোমরবিডিটি যাদের রয়েছে অর্থাৎ বুক ও হার্টের সমস্যা, তাদের সাবধানে থাকতে হবে।’
একইসঙ্গে আশ্বাসের সুরে এদিন তিনি এও জানান, ‘সরকারি হাসপাতাল রয়েছে। সমস্ত ব্যবস্থা রয়েছে। প্রয়োজনে চিকিৎসা করান। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারি ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভাবে তৈরি।’ এই রেশ ধরে তিনি এও বলেন, ‘সরকারি হাসপাতালের উপর ভরসা রাখুন। সেখানে চিকিৎসা করান। অহেতুক কোনও অসুখের নামে বেশি টাকা খরচ করবেন না। যাঁর সত্যিই প্রয়োজন, তিনি হাসপাতালে চিকিৎসা পেয়ে যাবেন। যা যা প্রয়োজন সব আছে হাসপাতালে পাবেন। এখন ভ্যাকসিনও বেরিয়েছে। অনেকে নিয়েও নিয়েছেন। তবে পরিস্থিতি খতি দেখা হচ্ছে।’ মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, সোমবার রাজ্যের প্রায় সব দফতরের সঙ্গে বৈঠক করে খবরাখবর নেন তিনি। সব দফতরের আধিকারিকদের প্রস্তুত থাকার নির্দেশও দিয়েছেন।