নয়া বিজ্ঞপ্তি জারির পর আদালতে এবারের পরীক্ষাও বাতিলের আশঙ্কা প্রকাশ বিকাশরঞ্জনের

IMG-20250530-WA0411

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে শিক্ষক শিক্ষিকা নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন অর্থাৎ এসএসসি। একইসঙ্গে এবারের পরীক্ষার নিয়োগ বিধিও জানানো হয়েছে। স্কুল শিক্ষা দফতরের নতুন করে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ার নিয়ম ঘিরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। এই প্রসঙ্গে মুখ খোলেন আইনজীবী তথা সিপিএম নেতা বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। তিনি স্পষ্টই জানান, ২০১৬ সালে যে নিয়মে পরীক্ষা হয়েছিল,তার বদল হলেই এবার পরীক্ষাও বাতিল হবে। রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করে সরব হয়েছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদারও।
প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা মতো শুক্রবার প্রকাশিত হয়েছে এসএসসি-র শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষার বিধি। ২০১৬ সালের বাতিল প্যানেলের শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগের জন্য বিধি প্রকাশ করেছে এসএসসি। আর তাতে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষাবিধিতে ব্যাপক রদবদল করা হয়। ২০১৬ সালে লিখিত পরীক্ষা হয়েছিল ৫৫ নম্বরের। সেখানে এবার লিখিত পরীক্ষার পূর্ণমান বাড়িয়ে করা হয়েছে ৬০। আগের প্রক্রিয়ায় শিক্ষাগত যোগ্যতার জন্য বরাদ্দ ছিল ৩৫ নম্বর। এবার তা কমিয়ে করা হয়েছে ১০। আগের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় পার্সোন্যালিটি টেস্টের জন্য বরাদ্দ ছিল ১০। সেখানে এবার ইন্টারভিউর জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ১০, পড়ানোর দক্ষতার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ১০ ও অভিজ্ঞতার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ১০ নম্বর। আর এখানেই দুর্নীতির সম্ভাবনা দেখছেন বিরোধীরা।
শুক্রবার এই প্রসঙ্গে বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য জানান, ‘আদালতের নির্দেশে ২০১৪ ও ২০১৬ সালের নিয়মে নিয়োগপ্রক্রিয়া চালাতে হবে। তার বাইরে কিছু করলে নিজেদের বিপদ নিজেরা ডেকে আনবে রাজ্য সরকার। ২০১৬ সালের নিয়োগপ্রক্রিয়ার নিয়মের বাইরে গেলে ফের গোটা প্রক্রিয়া আদালতে বাতিল হয়ে যাবে। রাজ্য সরকারের দুর্নীতির জন্য ২০১৬ সালের নিয়োগপ্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারীরা চাকরি হারিয়েছেন। সেই চাকরি পাওয়ার অধিকার অন্য কারও নেই।’
শুধু বিকাশরঞ্জনই নন, এই ইস্যুতে সরব হতে দেখা গেল রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকেও। এই প্রসঙ্গে সুকান্তর বক্তব্য়,’এই রাজ্য সরকার ইচ্ছে করে বারবার জটিলতা তৈরি করছে। কারণ এই রাজ্য সরকার চাকরি দিতে চায় না। রাজ্য সরকারের ভাঁড়ার শূন্য। যাঁদের চাকরি গিয়েছে, তাঁদের মধ্যে যোগ্যও রয়েছেন। অযোগ্যও রয়েছেন। যোগ্য ও অযোগ্যদের জন্য একই ব্যবস্থা হতে পারে না। কিন্তু, এই রাজ্য সরকার ঘুরপথে এই ডেমোস্ট্রেশনের নম্বর ও মৌখিকের নম্বর বাড়িয়ে যোগ্যদের পাশাপাশি অযোগ্যদেরও চাকরি পাইয়ে দিতে চাইছে। কারণ অযোগ্যরা টাকা দিয়েছে। অযোগ্যদের বাঁচানোর জন্য প্রচেষ্টা চলছে। যোগ্য-অযোগ্যদের তালিকা আদালতে দিয়ে দিলেই সমস্যা হত না। পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষাব্যবস্থাকে অন্তর্জলি যাত্রায় পাঠানো হয়েছে।’
এদিকে এই নয়া নিয়ম নিয়ে সরব বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতিও। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল জানান, ‘নিয়োগ বিধিতে একাধিক পরিবর্তন আনা হয়েছে। চাকরিহারারা কিছু কিছু ক্ষেত্রে সুবিধা পাবেন। যাঁরা নতুন পরীক্ষার্থী, তাদের ক্ষেত্রে কিছু অসুবিধা হবে। এসএসসি ইচ্ছে করলে কাউকে বেশি নম্বর কিংবা কাউকে কম নম্বর দিতে পারে। আমরা বুঝতে পারছি না, সরকার নতুন করে কোনও জটিলতাকে আহ্বান করছে কি না। আমরা আশঙ্কা করছি, এর ফলে আবার যদি মামলা হয় আদালতে এবং নিয়োগ আটকে যায়, ক্ষতি হবে রাজ্যের। ক্ষতি হবে শিক্ষার্থীদের। সার্বিকভাবে শিক্ষা ব্যবস্থার ক্ষতি হবে। নতুন নিয়োগ বিধিতে কিছু ফাঁকফোকর এবং বিতর্কিত বিষয় রয়েই গেল। এগুলো না থাকলেই ভাল হত। এটাকে আমরা অবাঞ্ছিত বলে মনে করছি।’

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement