সংসদে বিশেষ অধিবেশনের দাবি মমতার

IMG-20250523-WA0234

সন্ত্রাসবাদে মদত দিচ্ছে পাকিস্তান।সেই কথা বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে বিভিন্ন দেশে পৌঁছে গিয়েছে সংসদের সর্বদলীয় প্রতিনিধিরা। সেই প্রতিনিধি দল দেশে ফিরলে যেন সংসদে বিশেষ অধিবেশন ডাকা হয়। কেন্দ্রের কাছে এই আর্জিই জানালেন তৃণমূল নেত্রী তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাত এবং পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহের বিষয়ে যাতে দেশবাসী জানতে পারেন, সেই লক্ষ্যে শুক্রবার সোশ্যাল মিডিয়ায় সংসদের বিশেষ অধিবেশন চেয়ে কেন্দ্রের কাছে আবদেন জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।এক্স হ্যান্ডলে তাঁর আবেদন, ”সাম্প্রতিক পরিস্থিতি এবং সেই সংলগ্ন সমস্ত খুঁটিনাটি এবং সর্বদল প্রতিনিধিদের বিদেশ সফর নিয়ে বিস্তারিত দেশবাসীর জানা উচিত। সংসদের বিশেষ অধিবেশনের মাধ্যমে তা সর্বসমক্ষে আনার আবেদন জানাচ্ছি।” মমতা আরও লিখেছেন, ‘‘আমি কেন্দ্রের কাছে আর্জি জানাচ্ছি, প্রতিনিধিদল নিরাপদে দেশে ফিরে আসার পরে সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকা হোক। আমি বিশ্বাস করি, সংঘাত এবং তার পরবর্তী ঘটনাপরম্পরার বিষয়ে দেশবাসীর জানার অধিকার রয়েছে— অন্য যে কারও আগে।’’ মমতা লিখেছেন, ‘‘বিশ্ব দরবারে ভারতের বহুদলীয় প্রতিনিধিদল যে ভাবে সন্ত্রাসবাদের স্বরূপ তুলে ধরছে, তা দেখে আমি খুশি। আমি আগেই বলেছি, জাতীয় স্বার্থ, সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে কেন্দ্রীয় সরকার যে অবস্থান নেবে, দল হিসাবে তৃণমূল সরকারকে সমর্থন করবে।’’ এর আগে কংগ্রেসের তরফে লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধি সংসদের বিশেষ অধিবেশনের দাবি জানিয়েছিলেন। কংগ্রেস ছাড়াও শরদ পওয়ারের এনসিপি, তেজস্বী যাদবের আরজেডি, উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনা (ইউবিটি)-র পাশাপাশি সিপিআই, সিপিএমের মতো বিজেপি-বিরোধী দলগুলিও সংসদের বিশেষ অধিবেশন চেয়েছিল। ভারতের বহুদলীয় প্রতিনিধিদলগুলি যখন বিদেশে সফরে রয়েছে, সেই পর্বে একই দাবি তুললেন মমতা।এই পর্বে মমতা জাতীয় স্বার্থে কেন্দ্রীয় সরকারের পাশে থাকার কথা ঘোষণা করলেও তাঁর নিজের দলের বিষয়ে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ তিনি মানেননি। কেন্দ্রীয় সরকার মমতা তথা তৃণমূল নেতৃত্বকে না-জানিয়ে প্রতিনিধিদলে বহরমপুরের সাংসদ ইউসুফ পাঠানের নাম চূড়ান্ত করেছিল। কিন্তু তৃণমূল ইউসুফকে দিয়ে নাম প্রত্যাহার করিয়ে নেয়। তৃণমূল স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, দলের তরফে কে যাবেন, তা দলই ঠিক করবে। অন্য কেউ নয়। এমন চাপ তৈরি হয় যে, কেন্দ্রীয় আইন ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজু নিজে মমতাকে ফোন করেন। তার পর মমতা অভিষেকের নাম মনোনীত করেন। সেই প্রতিনিধিদল যখন দেশে দেশে ঘুরছে, অন্যরা যখন ইউরোপ, পশ্চিম এশিয়া-সহ দুনিয়ার বিভিন্ন প্রান্তে যাচ্ছেন, তখন সংসদের বিশেষ অধিবেশন চাইলেন তৃণমূলনেত্রী। পররাষ্ট্র নীতি নিয়ে যে কোনও সিদ্ধান্তে কেন্দ্রের পাশে দাঁড়িয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। মমতর কথায়, ‘আমি বারবার বলেছি, জাতীয় স্বার্থে এবং আমাদের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় কেন্দ্রের যে কোনও পদক্ষেপে পাশে দাঁড়িয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।’ তবে, পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতিতে বাণিজ্য বন্ধ, সিন্ধু জলচুক্তি রদ-সহ একের পর এক সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। সেই সিদ্ধান্তগুলির ভবিষ্যৎ কী? কোন পরিস্থিতিতে সংঘর্ষবিরতিতে রাজি হল ভারত? দুই দেশের সংঘর্ষবিরতিতে আমেরিকার ভূমিকা কী? এরকম নানা প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। সেই বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনার স্বার্থেই কংগ্রেসের সুরেই সুর মেলালেন মমতা বলেই ধারণা রাজনৈতক মহলে। উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেই লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী ও রাজ্যসভার নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে বিশেষ অধিবেশনের দাবি জানিয়ে চিঠি দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রীকে। যদিও, বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রের তরফে কিছু জানানো হয়নি।

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement