রাজ্যে বাড়ছেজঙ্গি শক্তিপুলিশকে ‘গ্রুপবাজি’ ছেড়ে তুলোধোনা মুখ্যমন্ত্রীর

IMG-20250521-WA0248

উত্তরবঙ্গ সফরে এসে উত্তরকন্যায় প্রশাসনিক বৈঠক সারলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। বৈঠকে পুলিশ–প্রশাসনকে সাবধান করে সীমান্তবর্তী এলাকায় নজরদারি বাড়ানোর কথা বলেন মমতা। বুধবারের বৈঠকে উত্তরবঙ্গের সীমান্তবর্তী জেলার এসপি, আইসি এবং ওসিদের সর্তক থাকার কথা বলেন মমতা। পাশাপাশি তিনি স্থানীয় বাসিন্দাদেরও সাবধান করেন। মমতা জানান, ভিনরাজ্য থেকে কেউ কেউ ঢুকে স্থানীয়দের ব্যক্তিগত তথ্য নিয়ে চলে যাচ্ছে। মমতা তাই বলেছেন, ‘সবাই সাবধানে থাকুন। বাইরে থেকে এসে কোনও জঙ্গি যেন শেল্টার নিতে না পারে। আবার কেউ যেন ব্যক্তিগত তথ্যও হাতিয়ে না নিতে পারে।’ তাই ব্যক্তিগত তথ্য কারও সঙ্গে শেয়ার করতে বারণ করেছেন মমতা।পুলিশকে আরও সক্রিয় থাকতে হবে বলে জানান মমতা। বিশেষ করে উত্তরবঙ্গের সীমান্তবর্তী এলাকায়। এর পাশাপাশি দুর্যোগ সামলাতে প্রশাসনকে কড়া নির্দেশও দিয়েছেন মমতা। ইতিমধ্যেই উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ারে ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে হাওয়া অফিস। ইতিমধ্যেই একাধিক জেলায় ভারী বৃষ্টিও হয়েছে। উত্তর সিকিম ধসে বিপর্যস্ত। তিস্তা–সহ একাধিক নদী ফুঁসছে। উত্তরবঙ্গের নদীগুলিতেও জল বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। সেসব দিক খতিয়েই উত্তরবঙ্গের জেলা প্রশাসনকে সতর্ক থাকতে আগাম নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বর্ষার আগে প্রয়োজনীয় কাজকর্ম শেষ করতেও তিনি নির্দেশ দেন। শাপাশি ভেজাল ওষুধ নিয়েও সরব হন মমতা। বলেন, ‘গুজরাট, উত্তরপ্রদেশ থেকে ভেজাল ওষুধ ঢুকছে। সন্দেহজনক মনে হলেই ওষুধের নাম ও ছবি তুলে রাখুন। ওষুধ কেনার আগে ভাল করে দেখে নিন।এদিন পুলিশের মধ্যে ‘গ্রুপবাজি’র অভিযোগ নিয়ে সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। বৈঠকে সীমান্তবর্তী জেলার জেলাশাসক, পুলিশ সুপারদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে কোচবিহারের পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্যের উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘উনি (চন্দন দাস) হেডকোয়ার্টার দেখেন। তাঁকে কাজ করতে দাও না। একজনকে হেডকোয়ার্টারে বসিয়ে রাখবে আর সে শুধু চা-বিস্কুট খেয়ে চলে যাবে , সে কাজ চায়, তুমি কাজ করতে দেবে না! তোমরা নিজেদের মধ্যেই গ্রুপ তৈরি করে নিচ্ছ! এটা করবে না। ওঁকে কাজে লাগাবে। দিনহাটা, শীতলকুচি, বর্ডার এরিয়ায় ওঁকে কাজে লাগাও। আমরা রাজনীতির লোকজন বেশি গ্রুপ করি। আমরা তাই জেনে এসেছি।পাশাপাশি এদিন সীমান্তবর্তী জেলার জেলাশাসক, পুলিশ সুপারদের আরও বেশি সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। নির্দেশ দিয়েছেন থানার আইসি-ওসিদের চোখ কান খোলা রেখে কাজ করতে। উত্তরবঙ্গের যে জেলাগুলি অন্য দেশের সীমান্ত লাগোয়া সেই জেলাগুলির জেলা প্রশাসনকে সতর্ক থাকার বার্তা দিয়ে তিনি বলেন, ‘এলাকাগুলি খুবই স্পর্শকাতর। মন দিয়ে কাজ করতে হবে। শীতলকুচির কৃষক উকিল বর্মণকে বাংলাদেশি দুষ্কৃতীদের ধরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টিও উঠে এসেছে এই প্রশাসনিক সভায়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘নিজের জমিতে চাষ করছিলেন। তাঁকে ধরে নিয়ে যায়। উদয়নের কাছ থেকে জানার পর আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি। সীমান্তবর্তী এলাকাগুলি খুবই স্পর্শকাতর, সতর্ক থাকতে হবে।এদিকে বাগডোগরা বিমানবন্দর থেকে কলকাতা যাওয়ার পথে চা শ্রমিকদের মুখ্যমন্ত্রী তুলে দিলেন পাঞ্জাবি, শাড়ি এবং বাচ্চাদের দিলেন চকলেট। বিমানবন্দরে পৌঁছানোর আগে সামনের একটি চা বাগানের চা শ্রমিকদের সাথে অনেকক্ষণ কথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কোন সময় কখন সকালে আসেন, কি খান এবং কতক্ষণ কাজ করেন সব জিজ্ঞাসা করেন মুখ্যমন্ত্রী। বাচ্চারা ঠিকমতো পড়াশোনা করছে কিনা এবং ওদের কোন সমস্যা হচ্ছে কিনা এটাও জিজ্ঞাসা করেন মুখ্যমন্ত্রী। চা শ্রমিকদের কোন সমস্যা হলে তা জানাতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাচ্চাদের পড়াশোনার কোন সমস্যা হচ্ছে কিনা এটার জন্য খোঁজখবর নেন মুখ্যমন্ত্রী। ফেরার পথে তিনি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে বাচ্চাদের হাতে তুলে দেন চকলেট, এবং মন দিয়ে পড়াশোনা করতে বলেন। পরে মুখ্যমন্ত্রী জানান ওরা অনেক কষ্ট করে কাজ করে সংসার চালায়, তাই ওদের সাথে একটু কথা বললাম। এদের মুখ্যমন্ত্রীর সাথে ছিলেন অরূপ বিশ্বাস ছাড়া প্রশাসনিক বিভাগের দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্তারা। একেবারে বাগানের সামনে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী চা শ্রমিকদের সাথে কথা বলে তাদের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে জেনে নেন। পরে নির্দেশ দেন ওদের জন্য কিছু আনতে। চা শ্রমিকেরা মুখ্যমন্ত্রীকে একেবারে হাতের কাছে পেয়ে প্রচন্ডভাবে খুশি ছিলেন।

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement