কলকাতা: আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ও তাঁর জুনিয়রদের ওপর বিক্ষোভ ও চেম্বার ঘেরাওয়ে আদালত অবমাননার মামলায় কুণাল ঘোষ ও ৭ আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে আদালত অবমানার রুল জারি ৩ বিচারপতির বেঞ্চে’র। এই মামলায় বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর্যবেক্ষণ, ‘এটা খুব সিরিয়াস বিষয়। আদালত নির্দেশের পরেও কেউ মানছে না।’ এই প্রসঙ্গে বলে রাখা শ্রেয়, আইনজীবীদের হেনস্থার ঘটনায় তিন বিচারপতির বিশেষ বেঞ্চ গঠন করে আদালত। এরপরই সোমবার কুণাল-সহ ৮ জনের বিরুদ্ধে রুল জারির নির্দেশ বিচারপতি অরিজৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য ও বিচারপতি রাজর্ষী ভরদ্বাজের বেঞ্চের।আদালত সূত্রে খবর, ১৬ জুন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ সহ ৮ জনকে এজলাসে সশরীরে হাজিরা দিতে হবে। ১৬ জুন দুপুর ১২:৩০ ফের শুনানি।সুপার নিউমারারি পোস্ট সংক্রান্ত মামলার শুনানি কেন দ্রুত হচ্ছে না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ও আইনজীবী ফিরদৌস শামিমকে হেনস্থার অভিযোগ ওঠে চাকরিপ্রার্থীদের একাংশের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, বিকাশের দুই জুনিয়র আইনজীবীদের জুতো দেখান তাঁরা। বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর বিরুদ্ধে আপত্তিকর মন্তব্য এবং স্লোগান দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এরপর এই ঘটনায় প্রধান বিচারপতিকে অভিযোগ জানানো মাত্রই তিনি স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে মামলা গ্রহণ করেন।
হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন বার অ্যাসোসিয়েশনের কয়েক জন আইনজীবী। তিন বিচারপতির বিশেষ বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হবে বলে স্থির করে দেন প্রধান বিচারপতি। এই বেঞ্চের সদস্যেরা হলেন বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ। আগের শুনানিতে বিচারপতি এই ঘটনায় অভিযুক্তদের কাছে কারণ ব্যাখ্যা চেয়ে রিপোর্ট তলব করা হলেও কারোর তরফেই কোনও উত্তর না মেলায় ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি। এরপর সোমবারের শুনানিতে আদালতে হাজির ছিলেন কুণাল ঘোষ। ফৌজদারি আদালত অবমাননা হয়েছে বলে উত্তর চায় আদালত। কুণাল ঘোষের আইনজীবী বিশ্বরূপ ভট্টাচার্য সোমবার বলেন, ‘ঘটনার সময় অকুস্থলে ছিলাম না। একটি সংবাদ চ্যানেলের অনুষ্ঠানে ছিলাম। আমায় উত্তর দেওয়ার জন্য একটু সময় দেওয়া হোক।’ এরপরই বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় ও সব্যসাচী ভট্টাচার্য বলেন, ‘আদালত কুণাল ঘোষকে জেলে পাঠাচ্ছে না এখনই। তবে আদালত অবমাননার ‘রুলে’র উত্তর দিতেই হবে তাঁকে।’এরপর বিচারপতি এদিন প্রশ্ন করেন, ‘২ মে নির্দেশ দেওয়া হয়, তারপরেও অভিযুক্তরা কেন কেউ মানেননি?’ উত্তরে কুণাল ঘোষের আইনজীবী বিশ্বরূপ ভট্টাচার্য বলেন, ‘আমার বিচারব্যবস্থার উপর আস্থা আছে। হলফনামা তৈরি করেছি। আমাদের কিছু সমস্যা থাকায় হয়নি।’তখন বিচারপতি কুণালের আইনজীবীর উদ্দেশে বলেন, ‘যাই বলুন না কেন, কেন দেরি হল আদালত জানতে চায়।’ সঙ্গে এও বলেন, ‘ আর সময় দেওয়া নয়। আপনাকে তো জেলে পাঠাচ্ছি না, আমরা রুলের উত্তর চাই। বাকি ১৬ জনের বিরুদ্ধে আমরা রিপোর্ট দেখে সিদ্ধান্ত নেব।’ তখন হেনস্থা হওয়া আইনজীবীদের তরফে আইনজীবী পার্থসারথি সেনগুপ্ত বলেন, ‘রুল ইস্যু করলেই দেখবেন সবাই আসছে। নাহলে কেউ গুরুত্ব দেয় না।’ এরপরই বিচারপতি নির্দেশ দেন, সবার বিরুদ্ধে রুল ইস্যু করার। এদিকে আবার নিগৃহীত আইনজীবীদের আইনজীবী রিজু ঘোষাল সওয়াল করতে গিয়ে এদিন জানান, সেদিনের ঘটনার সঙ্গে কুণাল ঘোষের লিঙ্ক রয়েছে।