চাকরি ফেরানোর দাবিতে গত কয়েকদিন ধরেই বিকাশভবনের সামনে অবস্থানে বসেছেন চাকরিহারা শিক্ষকরা।সেই আন্দোলনের মাঝেই বৃহস্পতিবার রাতে তুলকালাম কাণ্ড ঘটে বিকাশভবনের সামনে।বিকাশ ভবন থেকে সরকারি কর্মীদের উদ্ধারে পুলিশকে লাঠিচার্জ করতে হয়।সেই ঘটনায় অন্দোলনকারীরা পুলিশ ও রাজ্য সরকারকে লাগাতার নিশানা করছেন।এই আবহেই সোমবার বিকাশ ভবনে চাকরিহারা শিক্ষকদের আন্দোলন নিয়ে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বার্তা, আন্দোলনের একটা একটি লক্ষ্মণরেখা থাকা উচিত। সোমবার তিনদিনের জন্য উত্তরবঙ্গ সফরে যান মুখ্যমন্ত্রী। উত্তরবঙ্গ উড়ে যাওয়ার আগে দমদম বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে চাকরিহারাদের আন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমার যথেষ্ট সিমপ্যাথি ছিল। থাকবে। আমি বলেছিলাম রিভিউ করব। কোর্টে কিছু বাধ্যবাধকতা থাকে। আমরা রিভিউ পিটিশন করেছিলাম। আদালত কোনও সিদ্ধান্ত নিলে মানব না বলতে পারি না’। মুখ্যমন্ত্রীর আরও সংযোজন, ‘এখনও কারও মাইনে বন্ধ হয়নি। গ্রুপ সি, ডি কর্মীদের স্কিম করে মাইনে দেওয়া হচ্ছে। এই আন্দোলনে যারা উসকানি দিচ্ছে তারাই মামলা করেছে। নাটের গুরুরা, স্বার্থরক্ষার গুরু হয়ে যায় তাহলে মুশকিল। রাজ্য সরকারের উপর ভরসা রাখা উচিত ছিল। শিক্ষকদের কাছ থেকে সৌজন্য, সম্মান আশা করি।” বিকাশ ভবনে রাজ্য সরকারের অনেক দফতর রয়েছে। অন্তত ৫০০-৬০০ কর্মী কর্মরত সেখানে। সরকারি কর্মীদের আটকে রেখে চাকরিহারা ‘যোগ্য’ শিক্ষকরা বৃহস্পতিবার আন্দোলন করছিলেন বলে অভিযোগ। সেই প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কাউকে আটকে রাখা যায় না। রাস্তা অবরোধ করে কারও সমস্যা করা যায় না। অন্তঃসত্ত্বাকে আটকে রাখা হচ্ছে। এক পরীক্ষার্থীকে বেরতে দেওয়া হয়নি। ঝাঁপ দিয়েছে। পা ভেঙে হাসপাতালে ভর্তি।” ‘যোগ্য’ চাকরিহারা শিক্ষকদের মুখ্যমন্ত্রী স্মরণ করিয়ে দেন, “আন্দোলন করার একটা লক্ষ্মণরেখা আছে। এভাবে লড়াই না করে আইনি লড়াই করুন। আমরা আপনাদের বিপক্ষে নই। কোনও রাজনৈতিক দল যদি মনে করে জলঘোলা করবে। তাহলে তাদের বলব মামলা কেন করলেন।” তিনি বলেন, ‘আমার একটা জিনিস খারাপ লাগছে। যাঁরা উস্কানি দিচ্ছেন, তাঁরাই কিন্তু ওঁদের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন। চাকরিগুলো আমাদের জন্য যায়নি। যাঁদের জন্য গিয়েছে, তাঁদের বলব এটা না করলেই পারতেন। চাকরিগুলো যাঁদের জন্য গিয়েছে সেই নাটের গুরুরাই যদি আজকে তাঁদের স্বার্থরক্ষার গুরু হয়ে যায়, সেখানে আমার আপত্তি রয়েছে।’ আন্দোলনকারীদের রাজ্য সরকারকে বিশ্বাস করা উচিত ছিল বলেও জানান রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে মমতা বলেন, ‘‘শিক্ষকদের কাছ থেকে ন্যূনতম সৌজন্য, সম্মান প্রত্যাশা করি। রাজনীতির ঊর্ধ্বে গিয়ে আপনারা সমাজের সেবা করুন, শিক্ষা দিন।”