হায়দরাবাদে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, মৃত অন্তত ১৭

IMG-20250518-WA0240

হায়দরাবাদে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড। আর সেই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অন্তত ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। চারমিনারের কাছে একটি বহুতলে রবিবার সকালে অগ্নিকাণ্ডের ঘটে। সেই ঘটনায় ৮ শিশু সহ অন্তত ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। তেলঙ্গানার দমকল বিভাগের তরফে মৃতদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। আহত হয়েছেন। তাদের তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। রবিবার সকাল ৬টা নাগাদ পুরনো হায়দরাবাদ শহরে চারমিনারের কাছে ‘গুলজ়ার হাউস’ নামের বহুতল বাড়িটিতে আগুন লাগে। খবর দেওয়া হয় দমকলকে। দমকলের ১১টি ইঞ্জিন আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। বেশ কয়েক জনকে নিরাপদে বাড়ির বাইরে বার করে আনা সম্ভব হয়। আগুন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসার পর শুরু হয় উদ্ধারকাজ। উদ্ধারকাজে তদারকি করেন স্থানীয় বিধায়ক। কী কারণে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা, তা এখনও স্পষ্ট নয়। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, ঘিঞ্জি ওই এলাকায় বৈদ্যুতিক লাইনে শর্ট সার্কিট হওয়ার ফলেই আগুন লাগে। বাড়িটির নীচে সোনার অলঙ্কারের বেশ কয়েকটি দোকান ছিল। দোকানদারদের পরিবারের সদস্যেরা থাকতেন বাড়িটির উপরতলায়। উদ্ধারকাজের অগ্রগতি নিয়ে মন্ত্রীদের কাছে জানতে চান তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডি। নিহতদের পরিবারকে সমবেদনা জানাতে ফোনও করেন তিনি। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নিহতদের পরিবারের জন্য ২ লক্ষ টাকা এবং আহতদের পরিবারের জন্য ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন তিনি। তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডিও শোকপ্রকাশের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্তদের সমস্ত রকমের সহায়তার নির্দেশ দিয়েছেন। তেলঙ্গানা সরকারের মন্ত্রী-সহ পুলিশের একাধিক উচ্চপদস্থ আধিকারিক ছুটে গিয়েছিলেন ঘটনাস্থলে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জি কিষেণ রেড্ডিও সকালেই পৌঁছে যান সেখানে। ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি কাউকে দোষারোপ করছি না। হায়দরাবাদ শহর দ্রুতহারে বাড়ছে। পুলিশ, দমকল, পুরসভা এবং ইলেক্ট্রিসিটি বিভাগকেও শক্তিশালী করতে হবে। দকমলের কাছে পর্যাপ্ত সরঞ্জাম নেই। রাজ্য সরকারের উচিত দমকলের জন্য আরও বেশি পরিমাণ বরাদ্দ করা।’ মৃতের তালিকার পাশাপাশি তেলঙ্গানা দমকল বিভাগের তরফে জানানো হয়েছে, অ্যাডভান্সড ফায়ার রোবট এবং ব্রোন্টো স্কাইলিফ্ট হাইড্রলিক প্ল্যাটফর্ম আগুন নেভানোর কাজে ব্যবহার করেছিল দমকলবাহিনী। ৭০ জন দমকলকর্মী ছিলেন সেখানে। গোটা আগুন নেভাতে ২ ঘণ্টা সময় লেগেছে বলেও জানানো হয়েছে দমকলের তরফে। আগুন লাগার কারণ জানতে তদন্ত শুরু হয়েছে বলেও জানিয়েছে দমকল বিভাগ। তেলঙ্গানার দুর্যোগ মোকাবিলা এবং অগ্নিনির্বাপণ পরিষেবার ডিজি ওয়াই নাগি রেড্ডি এক বিবৃতিতে জানান, প্রাথমিক তদন্তে দেখা গিয়েছে শর্ট সার্কিটের কারণেই অগ্নিকাণ্ড ঘটে। ১৭ জনের মধ্যে বেশির ভাগেরই শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে। কেউ কেউ অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন। রেড্ডি আরও জানান, সকাল ৬টা ১৬ মিনিট নাগাদ দমকল প্রথম আগুন লাগার খবর পায়। সঙ্গে সঙ্গেই তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছোয়। উদ্ধারকাজের সময় দমকলকর্মীদের অক্সিজেন মাস্ক ব্যবহার করতে হয়।এক দমকল কর্তার কথায়, ‘‘আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে এবং বাসিন্দাদের উদ্ধারে আমরা কোনও ত্রুটি রাখিনি। ওই বহুতলের ঢোকা-বেরোনোর পথ মাত্র একটি। আর সেটি চওড়ায় ছিল মাত্র দুই মিটার। উপরের ওঠার সিঁড়িও খুব সংকীর্ণ। ফলে উদ্ধারকার্যে সমস্যা হচ্ছিল। হায়দরাবাদের অগ্নিকাণ্ডে যে আট জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে তাদের মধ্যে দেড় বছরের এক শিশুও ছিল। বাকিদের মধ্যে কারও বয়স দুই, কারও তিন, আবার কারও সাত। এই ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নিহতদের পরিবারের জন্য ২ লক্ষ টাকা এবং আহতদের পরিবারের জন্য ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন তিনি।

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement