পুরুলিয়া, পানাগড়, রঘুনাথপুর সহ রাজ্যের একাধিক শিল্পতালুকে আরো ২৫ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগের কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী জানান দেশ-বিদেশের বহু শিল্পপতি রাজ্যের বিভিন্ন শিল্প তালুকের বিনিয়োগের জন্য এগিয়ে আসছে। নতুন করে পঁচিশ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ হতে চলেছ। এর ফলে ৭০ হাজার যুবক যুবতীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
ইকো পার্ক, মাদার ওয়াক্স মিউজিয়াম, বিশ্ববাংলা গেটের পর নিউটাউনের মুকুটে নতুন পালক জুড়তে চলেছে। এবার সেখানে তৈরি হবে বিশ্ব অঙ্গন। যেখানে বিশ্বমানের কনসার্ট আয়োজন করা যাবে। বুধবার এমনই ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিউটাউনে তৈরি হচ্ছে নতুন আইটি, বিনোদন, সাংস্কৃতিক পার্ক। নাম দেওয়া হয়েছে ইন্টারন্যাশনাল ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড এন্টারটেনমেন্ট কালচারাল পার্ক, সংক্ষেপে ‘আইটেক’। বাংলায় বিশ্ব অঙ্গন। হিডকোর সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে পিপিপি মডেলে ২৫ একর জমিতে এই পার্ক তৈরি করবে রাজ্য। জমি বাছাই করা হয়ে গিয়েছে। আজ মন্ত্রিসভা এই প্রকল্পের প্রস্তাবে ছাড়পত্র দিয়েছে। এরপর পিপিপি মডেলে টেন্ডার করে কাজ শুরু হবে। এই জমিতে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা থেকে বিনোদন দুনিয়ার সকলে বিশ্বমানের অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে পারবে। আয়োজন করা যাবে বিশ্বমানের কনসার্টের। এদিন নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলন থেকে রাজ্য সৌন্দর্যায়নের খতিয়ান দেন মুখ্যমন্ত্রী। কীভাবে দক্ষিণেশ্বর থেকে কালীঘাট, গঙ্গারঘাট থেকে গঙ্গাসাগর সাজিয়ে তোলা হয়েছে তা তিনি তুলে ধরেন। তারপরই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বিশ্ব অঙ্গন ভবিষ্যতে গর্বের বিষয় হবে রাজ্যের। হিডকোর সঙ্গে পিপিপি মডেলে নিউটাউনে ২৫ একর জমিতে একটি ইন্টারন্যাশনাল ইনফরমেশন টেকনোলজি, এন্টারটেনমেন্ট অ্যান্ড কালচারাল পার্ক তৈরি করতে চলেছি। কারণ, মনে রাখবেন, যারা ওয়ার্ল্ড ট্যুরে আসেন, তথ্যপ্রযুক্তি, বিনোদন এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করেন তাঁদের সুবিধা হবে। মনে রাখবেন, কনসার্ট ইকোনমি এখন নতুন ভাবনা। সমস্ত এক্সজিবিশন, এন্টারটেনমেন্টের জন্য বিরাট ব্যবস্থা করা হবে। ২৫ একর জায়গা মানে বিরাট বড় এলাকা।” তাঁর কথায়, এই পার্কে তথ্য প্রযুক্তি থেকে বিনোদন কিংবা সৃজনশীল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা যাবে। এমনকী, বিশ্বমানের কনসার্টও করা যাবে এখানে। বুধবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠক বসে। সেখানেই অশিক্ষক কর্মীদের মাসিক ভাতার বিষয়টি অনুমোদন পায়। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের লেবার ডিপার্টমেন্টের অধীনে একটি প্রকল্প তৈরি করা হয়েছে। সেই প্রকল্পের অধীনেই এসএসসি ২০১৬ প্যানেলে চাকরি হারানো গ্রুপ সি ও ডি কর্মীদের যথাক্রমে ২৫ ও ২০ হাজার টাকা করে মাসিক ভাতা দেওয়া হবে। যতদিন না সুপ্রিম কোর্টের পরবর্তী রায় আসছে, ততদিন পর্যন্ত এই ভাতা দেওয়া হবে। এপ্রিল মাসের হিসাব অনুযায়ী টাকা পাবেন তাঁরা। মুখ্যমন্ত্রী নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, “চাকরি বাতিলের মামলাটি শীর্ষ আদালতে বিচারাধীন। আমরা রিভিউ পিটিশন করেছি। আদালত যেমন নির্দেশ দেবে তেমনভাবেই চলব। তবে গ্রুপ সি ও ডি কর্মীদের যাঁদের বেতন বন্ধ, তাঁদের পরিবার সমস্যায় পড়েছে। আমরা একটা প্রকল্প তৈরি করেছি। তার অধীনে গ্রুপ সি ও ডি কর্মীদের ২৫ ও ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে।” উল্লেখ্য, এপ্রিল মাসে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে এসএসির ২০১৬ সালের প্যানেল বাতিল হয়েছে। চাকরিহারা হন প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীরা। পরে রায়ের কয়েকটি দিক পরিবর্তনের জন্য আবেদন করা হলে আদালত ‘অযোগ্য বলে প্রমাণিত নন’ শিক্ষকদের আগামী ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত স্কুলে যাওয়ার অনুমতি দেয়। তাঁরা বেতনও পাচ্ছেন। কিন্তু অশিক্ষক কর্মী অর্থাৎ গ্রুপ সি ও ডিদের ক্ষেত্রে এই রকম কিছু বলা হয়নি। তাঁরা বেতন পাচ্ছেন না। এই পরিস্থিতিতে চাকরিহারা অশিক্ষককর্মীদের পাশে দাঁড়াল রাজ্য সরকার।