সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘনে পাল্টা আঘাত, বাহিনীকে ‘পূর্ণ ক্ষমতা’ সেনাপ্রধানের

IMG-20250511-WA0217

সংঘর্ষবিরতি ঘোষণা হওয়ার পরেও পাকিস্তানের তরফে তা লঙ্ঘন করা হচ্ছে।কিন্তু পাকিস্তান সংঘর্ষবিরতি করলে কোনওভাবেই ছেড়ে কথা বলবে না ভারতীয় সেনা। পাল্টা জবাব দেওয়া হবে। দেশের পশ্চিম সীমান্তের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে সেনা কমান্ডারদের এই বার্তাই দিলেন সেনাপ্রধান উপেন্দ্র দ্বিবেদী। এই ব্যাপারে সীমান্তের কমান্ডারদের পূর্ণ ক্ষমতা দিয়েছেন। যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর আজ সোমবার বৈঠকে বসতে চলেছে ভারত ও পাকিস্তানের ডিরেক্টর জেনারেল অফ মিলিটারি অপারেশন বা ডিজিএমও। তার আগে সেনাপ্রধান স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, ‘সীমান্তের ওপার থেকে কোনওরকম হামলা হলে তৎক্ষণাৎ যেন পালটা মার দেয় সেনা।’ গত চার দিন ধরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষ চলার পর শনিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হয়েছে সংঘর্ষবিরতি। যদিও তারপরও পাকিস্তানের ওপার থেকে ভারতের দিকে ধেয়ে এসেছে গুলি ও মর্টার। এই পরিস্থিতিতে রবিবার নিরাপত্তা পর্যালোচনায় পশ্চিম সেমান্তের সেনা কমান্ডারদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিল সেনাপ্রধান উপেন্দ্র দ্বিবেদী। সেই বৈঠকে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে কমান্ডারদের অবগত করার পাশাপাশি সেনাকে পূর্ণ স্বাধীনতা দেন তিনি। জানিয়ে দেন পাকিস্তান যদি কোনও রকমভাবে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে তবে এপার থেকেও যেন উচিত শিক্ষা দেওয়া হয় পাক সেনাকে। শনিবার বিকেলে ভারত এবং পাকিস্তান সংঘর্ষবিরতিতে সম্মত হয়েছিল। কিন্তু তার পরেই পাকিস্তান চুক্তি লঙ্ঘন করে হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ তোলে ভারত। ভারতের বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রী শনিবার রাতে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দেন। তিনি বলেন, ‘‘গত কয়েক ঘণ্টা ধরে সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন করে যাচ্ছে পাকিস্তান। ভারতীয় সেনাও জবাব দিচ্ছে। এই লঙ্ঘন অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং এর জন্য দায়ী পাকিস্তান।” বিদেশসচিব জানিয়েছিলেন, ভারতীয় সেনা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে। কোনও ধরনের সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন হলে তা প্রতিহত করতে কড়া পদক্ষেপের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রবিবার পশ্চিম সীমান্তের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয় খতিয়ে দেখার একই নির্দেশ দিয়েছেন সেনাপ্রধানও।
ভারতীয় সেনার এক্স হ্যান্ডলের পোস্টে বলা হয়েছে, গত শনি এবং রবিবারের রাতে সংঘর্ষবিরতি এবং আকাশসীমা লঙ্ঘন করা হয়েছিল। তার পরেই নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয় পর্যালোচনায় পশ্চিম সীমান্তের সেনা কমান্ডারদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন সেনাপ্রধান দ্বিবেদী। এর পরেই কমান্ডারদের ‘পূর্ণ ক্ষমতা’ দেওয়া হয়েছে হামলা-পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে। প্রসঙ্গত, ভারত ও পাকিস্তানের আগেই দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষবিরতির কথা ঘোষণা করে দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পরে সাংবাদিক বৈঠকে বিদেশসচিব মিস্রী জানান, শনিবার বিকেল ৫টা থেকে সংঘর্ষবিরতি কার্যকর হয়েছে। দু’পক্ষের সেনার ডিরেক্টর জেনারেল মিলিটারি অপারেশন স্তরে আলোচনা হয়েছে বিষয়টি নিয়ে। সোমবারও দু’দেশের ডিজিএমও স্তরে বৈঠক রয়েছে। তার আগে সেনা কমান্ডারদের কার্যত সতর্কই করলেন সেনাপ্রধান। নতুন করে সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ আগেই অস্বীকার করেছে পাকিস্তান। রাতে বিদেশসচিব মিস্রীর সাংবাদিক বৈঠকের পর পাক সংবাদমাধ্যমে সে দেশের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারারের একটি বিবৃতি প্রকাশিত হয়। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আতাউল্লাহ বলেন, “এখনও পর্যন্ত কোনও অস্ত্রবিরতি লঙ্ঘন হয়নি।” পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রকও একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, পাকিস্তান সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন করেনি। লঙ্ঘন করেছে ভারত। বরং পাক সেনা সেই পরিস্থিতি বুঝেশুনে সামলেছে।

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement